ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিচিত্র তথ্য

প্রকাশিত: ০৯:২৯, ১ মার্চ ২০১৯

বিচিত্র তথ্য

লবণের পাহাড় মন্টে ক্যালি। শ্বেত শুভ্র ছোট্ট একটি পাহাড়। জার্মানিতে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় একটি স্থান। তবে আর দশটা পাহাড় থেকে এটি একটু ভিন্ন। কারণ পাহাড় কাটলে সাধারণত মাটি বা পাথর পাওয়া যায়। কিন্তু এই পাহাড়টি কাটলে মাটির বদলে মিলবে খাওয়ার লবণ। জার্মানির পূর্বাঞ্চালীয় হিস শহরের কাছেই পাহাড়টির অবস্থান। ধবধবে সাদা রঙয়ের এই পাহাড়টি প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয়নি। মন্টে ক্যালি আসলে পটাশিয়ামের খনি থেকে বর্জ্য হিসেবে জমা হওয়া সোডিয়াম ক্লোরাইড বা লবণের স্তূপ। তাই অনেকেই এটিকে লবণের পাহাড় বলে থাকেন। প্রায় এক শ’ বছর বা তার বেশি সময় ধরে জার্মানির এই অঞ্চলটি পটশিয়াম সমৃদ্ধ। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পটাশিয়ামের খনিটি এখানেই অবস্থিত। ফলে দশকের পর দশক ধরে এখানে পটাশিয়াম উত্তোলনের ফলে যে সোডিয়াম ক্লোরাইড জমা হয়েছে তা থেকেই এই লবণ পাহাড়ের উৎপত্তি। ৯৩ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত এই পাহাড়টির উচ্চতা প্রায় দুই শ’ মিটার। ধারণা করা হয় পাহাড়টিতে প্রায় এক শ’ আটাশি মিলিয়ন টন লবণ জমা রয়েছে এবং প্রতিবছর আরও সাড়ে ছয় মিলিয়ন টন লবণ জমা হচ্ছে। তবে পাহাড়টি পর্যটকদের কাছে দর্শনীয় হলেও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। কারণ পাহাড়ে জমে থাকা লবণ গলে নানাভাবে মাটিতে মিশে যাচ্ছে যা তীব্র মাটি দূষণের জন্য দায়ী। এছাড়া কিছু নির্দিষ্ট সংখ্যক গাছ ছাড়া আশপাশে এলাকাতে কোন ধরনের গাছ জন্মাতে পারে না। তাছাড়া এটি উইরা নদীর পানি দূষণের জন্যও দায়ী। মূর্তিমানব বৈচিত্র্যময় এই পৃথিবীতে বিচিত্র সব পেশায় নিয়োজিত রয়েছে মানুষ। এর মধ্যে কিছু মানুষের পেশা এতটাই অদ্ভুত যে শুনে বা দেখে বিস্ময়ের সীমা থাকে না। এমন বিচিত্র পেশাজীবীদের একজন ভারতের আব্দুল আজিজ। ১৯৮৫ সালের শুরুর দিকের কথা। বেকার আব্দুল আজিজ কাজের সন্ধানে ঘুরছেন চেন্নাই শহরের পথে পথে। কোথাও কিছু না পেয়ে শেষে দারোয়ানের চাকরি নিলেন ভিজিপি গোল্ডেন বিচ রিসোর্টে। চাকরি পেয়ে সময়টা ভালোই কাটছিল তার। কিন্তু হঠাৎ করেই রিসোর্ট মালিকের মাথায় খেয়াল চাপলো যুক্তরাজ্যের রানীর বাসভবন বাকিংহাম প্যালেসের গেটের রক্ষীরা যেমন পাথরের মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে থাকে দর্শনার্থীদের আনন্দ দেয়ার জন্য তার রিসোর্টের গেটে আব্দুল আজিজেরও সেভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। প্রস্তাব শুনে যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত পড়ল আজিজের মাথায়। কিন্তু চাকরি চলে যাবার ভয়ে মালিকের মুখের ওপর কিছু বলারও সাহস পাননি তিনি। অগত্যা তিন মাসের প্রশিক্ষণ নিলেন। সাহসে বুক বেঁধে দাঁড়িয়ে গেলেন ভিজিপি গোল্ডেন বিচ রিসোর্টের মূল দরজায়। সেই থেকে শুরু। এরপর এক এক করে কেটে গেছে ৩২ বছর। দীর্ঘ এই সময়ে জীবন্ত মানুষ আব্দুল আজিজ মূর্তির অভিনয় করে চলেছেন। অন্যরা যেখানে দিনে দুই ঘণ্টা মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে থাকতে গিয়ে হাঁপিয়ে ওঠেন, সেখানে আব্দুল আজিজ ছয় ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকেন। আব্দুল আজিজের এই অবিশ্বাস্য দক্ষতা তাকে ‘মূর্তিমানব’র খ্যাতি এনে দিয়েছে। কিন্তু খ্যাতিতে কি আর পেট ভরে? দিনে ছয় ঘণ্টা, মাসে ত্রিশ দিন পাথরের মতো দাঁড়িয়ে থেকে পান মাত্র দশ হাজার রুপী। তাই তো নিজের ছেলেদের তিনি এই পেশায় আনতে চান না। তবে আয় অল্প হলেও নিজের পেশা নিয়ে খুশি আজিজ এবং দ্রুত এই পেশা থেকে অবসরের কথাও ভাবছেন না তিনি।
×