ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সারতাজ আলিম

‘ডাউন ফল’ হিটলারের অজান অধ্যায়

প্রকাশিত: ১২:০৩, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

‘ডাউন ফল’ হিটলারের অজান অধ্যায়

একজন ক্ষমতাধর মানুষ যার নির্দেশে ইউরোপের একের পর এক শহর পদানত করেছে জার্মান বাহিনী, প্যানজার ট্যাংক দাঁপিয়ে বেড়িয়েছে ইউরোপ, এক নির্দেশে মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ হয়েছে হত্যা শিকার... কেমন ছিল অজেয় সেই মানুষটির নিজের শেষ দিনগুলো? স্টালিনগ্রাদ যুদ্ধে পরাজয়ের পর জার্মানদের তাড়া করে আসছিল সোভিয়েতরা। পূর্বে সোভিয়েত বাহিনী আর পশ্চিমে যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্রবাহিনী ধেয়ে আসছিল বার্লিনের দিকে। নাৎসিরা একের পর এক ঘাঁটি হারাতে থাকে। ১৯৪৫ এ হিটলার তার জন্মদিনে নতুন এক উপহার পান। হিটলারের জন্মদিনের উপহার হিসেবে ওইদিনই সোভিয়েতরা প্রথম আর্টিলারি হামলা চালায় বার্লিনে। তখন বার্লিনের মাত্র ১২ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছে গেছে রাশানরা। ইস্টার্ন আর্মি সম্পূর্ণভাবে অচল লাল বাহিনীর হামলায়। জার্মানির প্রশাসন তখন ভেঙ্গে পড়েছে, বিদ্যুত-পানির বালাই নেই, আহতরা হাসপাতালে কারতাচ্ছে- কিন্তু দেখার কেউ নেই! সব জায়গায় চরম বিশৃঙ্খলা। একটা সময় ভোগ-বিলাসে মেতে থাকা সরকারী বাসভবন অফিস পরিত্যক্ত। বিশ্বস্ত রাজনৈতিক থেকে শুরু করে সামরিক অফিসার সবাই হিটলারকে অনুরোধ করল পালিয়ে যেতে। বেঁকে বসেন হিটলার। তিনি কাপুরুষের মতো বার্লিন থেকে পালাবেন না আবার সোভিয়েতদের হাতে ধরাও পড়বেন না। নিজের দম্ভ থেকে সিদ্ধান্ত নেন তিনি আত্মহত্যা করবেন। তারপরের ঘটনা সবারই জানা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বার্লিন পতনের শেষ কয়েকদিনের ঘটনা নিয়েই নির্মিত ‘উবৎ টহঃবৎমধহম’ বা ‘উড়হিভধষষ’ সিনেমাটি। ব্রুনো গ্যাঞ্জ নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন হিটলারের রাগ, হতাশা, দম্ভ, আত্মমর্যাদা। তার অনবদ্য অভিনয়ে ফুটে উঠেছে হিটলারের জার্মান জাতির প্রতি উগ্র ভালবাসা এবং আত্মসম্মানবোধ। হিটলারের আত্মহত্যার সঙ্গে সঙ্গে জার্মান হাইকমান্ডে এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে আত্মহননের হিড়িক পড়ে যায়। ফিউরারের জাতীয়তাবাদ যেখানে নেই সেখানে থাকা দরকার কি? সিনেমার শেষ দিকে এসব ঘটনা উপস্থাপনের মধ্যে দিয়ে জার্মানদের অসহায়তাও দেখানো হয়। ২০০৪ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমাটি বর্তমানে আইএমডিবির সর্বকালের সেরা ২৫০র মধ্যে ১২০তম স্থানে অবস্থান করছে। আইএমডিবিতে ৮.২ এবং রটেন টমেটোতে ৯১% রেটিং বলে দিচ্ছে দর্শকপাড়ায় বেশ শোরগোল ফেলেছিল সিনেমাটি। অস্কার মনোনয়ন ও বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছে এই সিনেমাটি।
×