ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঠাকুরগাঁওয়ে অজ্ঞাত রোগে নিহত ৫

প্রকাশিত: ০৮:৪৭, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

ঠাকুরগাঁওয়ে অজ্ঞাত রোগে  নিহত ৫

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও ॥ জেলার বালিয়াডাঙ্গীতে অজ্ঞাত রোগে ২০দিনের ব্যবধানে একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যূর পর ওই এলাকায় চলাচলে নিষেজ্ঞাজারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। স্থানীয় লোকজন এখন মুখে কাপড়/মুখোশ বেঁধে চলাচল করছেন। উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নের মরিচপাড়া গ্রাম এখন প্রায় মানুষশুন্য। অজ্ঞাত রোগে একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যূর ঘটনায় আতঙ্কে ঘরছাড়া হয়েছে ওই এলাকার অনেক মানুষ। সোমবার রাতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আক্রান্ত পরিবারের চারপাশে এক কিলোমিটার জায়গায় মানুষ চলাচলে নিষেজ্ঞাজারি করেছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ওই এলাকার একটি মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়। নিরাপত্তার জন্য ওই এলাকার মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদুর রহমান। মঙ্গলবার তিনি মুঠোফোনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদুর রহমান মাসুদ বলেন, ঢাকা থেকে আসা মেডিকেল টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে যদি এলাকায় মানুষ চলাচলে নিরাপদ মনে করেন, তাহলেই চলাচলের নিষেধাজ্ঞার আদেশ তুলে নেওয়া হবে। এদিকে অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভারসহ আরো সাতজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করার খবর পাওয়া গেছে। এর আগে এই রোগে প্রথমে আক্রান্ত হন ভান্ডারদহ মরিচপাড়া গ্রামের ফজর আলীর ছেলে আবু তাহের (৫৫)। গত ৯ ফেব্রুয়ারি আবু তাহের মারা যান। তার মৃত্যুর ১১ দিন পর একই রোগে আক্রান্ত হয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি মারা যান আবু তাহেরের জামাতা হাবিবুর রহমান (৩৫) ও স্ত্রী হোসনে আরা (৪৫)। এর দুইদিন পর ২৪ ফেব্রুয়ারি আবু তাহেরের দুই ছেলে ইউসুফ আলী (৩০) ও মেহেদী হাসান (২৭) অসুস্থ হলে রংপুর হাসপাতালে নেওয়ার পথে ইউসুফ সকালে এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৯টায় মৃত্যুবরণ করেন মেহেদী। রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বর্তমানে মৃত ইউসুফের স্ত্রী কোহিনুর, তার কন্যা সন্তান, শ্বশুর রবিউল ইসলাম, আত্মীয় সাবেক ইউপি সদস্য, মাসুদ রানা নামে এক প্রতিবেশী, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার মোতালেব চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঠাকুরগাঁওয়ের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. শাহজাহান নেওয়াজের নেতৃত্বে একটি চিকিৎসক দল ভান্ডারদহ মরিচপাড়া গ্রাম পরিদর্শন করেছেন এবং গ্রামবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন শাহজাহান নেওয়াজ বলেন, কী কারণে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে তা সঠিকভাবে বলা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা আপাতত এটাকে অজ্ঞাত রোগ বলছি। তিনি বলেন, এই অজ্ঞাত রোগটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ঢাকা থেকে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) থেকে একটি বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থলে কাজ শুরু করেছেন। আশা করি দুই এক দিনের মধ্যেএই অজ্ঞাত রোগের কারণ বলা যাবে। অজ্ঞাত রোগের লক্ষণ বিষয়ে তিনি বলেন, এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রথমে প্রচণ্ড জ্বরে আক্রান্ত হন। একই সঙ্গে প্রচণ্ড মাথা ব্যাথা এবং গলা বসে যায়।
×