ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নবম-দশম শ্রেণির পড়াশোনা কৃষি শিক্ষা

প্রকাশিত: ০৮:৩০, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

নবম-দশম শ্রেণির পড়াশোনা কৃষি শিক্ষা

বি.এস.এস,বি-এড (১ম শ্রেণি) সিনিয়র শিক্ষক কানকিরহাট বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় সেনবাগ, নোয়াখালী। Email: [email protected] দ্বিতীয় অধ্যায় ॥ চতুর্থ পরিচ্ছেদ (মাছের অভয়াশ্রম) সুপ্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও। আমদের দেশে এক সময় প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। কিন্তু বর্তমানে এর অভাব প্রকটভাবে দেখা দিচ্ছে। সরকার মাছের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য নানা রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। এগুলোর মধ্যে মাছের অভয়াশ্রম গড়ে তোলা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ক. রেশন কী? খ. পুকুরের গভীরতা বেশি হওয়া ভাল নয় কেন? গ. উল্লিখিত সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো কী কী? ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত পদক্ষেপটির যথার্থতা মূল্যায়ন কর। ক. রেশন হচ্ছে ২৪ ঘন্টায় কোনো পশু বা পাখি দ্বারা গৃহীত খাদ্য। খ. মাছ চাষের জন্য পুকুরের গভীরতা ০.৭৫-২ মিটার হওয়া সুবিধাজনক। মাছ চাষের জন্য পুকুরের গভীরতা বেশি হওয়া ভাল নয়। কারণ, পুকুরের গভীরতা বেশি হলে সূর্যের আলো পুকুরের অধিক গভীরতা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না। ফলে অধিক গভীর অঞ্চলে মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য প্লাংটন তৈরি হয় না। আবার সেখানে অক্সিজেনের অভাবও হতে পারে। এসব কারণে মাছের ক্ষতি ও উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে। গ. মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে অভয়াশ্রম তৈরি এবং মৎস্য সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন। মুক্ত জলাশয়ে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য সরকার মাছের অভয়াশ্রম তৈরি করেছে। মৎস্য অভয়াশ্রমে কোন জলাশয় বা এর একটি নির্দিষ্ট অংশ বছরের নির্দিষ্ট সময় বা সারা বছর বা দীর্ঘমেয়াদের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়।বর্তমানে দেশের বিভিন্ন নদ-নদী ও অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে প্রায় ৫০০ টির মতো অভয়াশ্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। মাছের চাহিদা বৃদ্ধির ফলে জেলেরা দেশের বিভিন্ন জলাশয় হতে ছোট বড় সব ধরনের মাছ ধরে ফেলছে। ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সরকার কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপটি হলো মৎস্য অভয়াশ্রম তৈরি। মৎস্য অভয়াশ্রম হল কোন জলাশয় বা এর একটি নির্দিষ্ট অংশ যেমন- হাওর, বিল বা নদীর কোন অংশ যেখানে বছরের নির্দিষ্ট একটি সময়ে বা সারা বছর মাছ ধরা নিষেধ করা হয়। এর ফলে মাছের নিরাপদ আবাসস্থল নিশ্চিত হয়। মাছের অবাধ প্রজনন ও বিচরণক্ষেত্রের সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণ হয়। নিরাপদ আশ্রয় তৈরি হওয়ায় মাছ বিলুপ্তি থেকে রক্ষা পায়, মাছের বিপন্ন প্রজাতির সংরক্ষণ হয়। মাছের বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রাকৃতিক খাদ্য নিশ্চিত করা যায়। প্রজননক্ষম মাছকে রক্ষার মাধ্যমে এদের বংশবিস্তার ও মজুদ বৃদ্ধি করা যায়। এতে মাছের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ হয় এবং আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। উপরের আলোচনা হতে বলা যায়, মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি, মৎস্য প্রজাতির সংরক্ষণ এবং দেশের মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণে মৎস্য অভয়াশ্রম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
×