ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাস্তা প্রশস্ত না করেই পুরান ঢাকায় বিশাল বিশাল স্থাপনা

প্রকাশিত: ১০:৪৭, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

  রাস্তা প্রশস্ত না করেই পুরান ঢাকায় বিশাল বিশাল স্থাপনা

মশিউর রহমান খান ॥ প্রশস্ত রাস্তার সঙ্কুলান না করেই পুরান ঢাকায় তৈরি হচ্ছে বিশাল বিশাল স্থাপনা। গড়ে উঠছে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন ও ব্যবসাকেন্দ্র কাম মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্স। দুটো রিক্সা স্বাচ্ছন্দ্যে চলতেও মাঝে মধ্যে বেগ পেতে হয়। দিনের বেশিরভাগ সময়ই ভয়াবহ জ্যাম থাকায় পথচারীদের পর্যন্ত হেঁটে চলতে হয়। নেই কোন ফুটপাথ এমনকি ভাল নয় ড্রেনেজ ব্যবস্থাও। আশপাশে নেই কোন পানির জলাধার বা পুকুর কিংবা ফায়ার হাইড্রেন্ট। অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এমন বাস্তবতায় কাজী আলাউদ্দিন রোডে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নিজেই নির্মাণ করছে ১০ তলা বিশিষ্ট একটি সর্বাধুনিক মাল্টিপারপাস ভবন। সর্বাধুনিক বলা হলেও বিশাল এ ভবনে পর্যাপ্ত কার পার্কিংয়ের ব্যবস্থাও পর্যন্ত রাখা হয়নি। ১০ তলা ভবনে মাত্র ২০ থেকে ত্রিশটি গাড়ি পার্কিং সম্ভব হবে। নাগরিকদের চাহিদার কথা চিন্তা করে এসব স্থাপনা নির্মাণ করলেও বৃহৎ স্থাপনা নির্মাণে অগ্নিসংযোগ, ভূমিকম্প বা বড় কোন দুর্ঘটনায় জীবন রক্ষার জন্য নিরাপত্তার বিষয়টি তেমন গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। এ সড়কে বড় গাড়ি ঢুকলে তো কথাই নেই। ৫ মিনিটের পথ যেতে হয় এক ঘণ্টায়। এই এলাকায় যে কোন অগ্নিসংযোগ ঘটলে ফায়ার সাভির্সের বড় গাড়ি কোনক্রমেই প্রবেশ করতে পারে না। আগুন নেভাতে গিয়ে প্রায়ই ওই সড়কে আটকে যায় ফায়ার সার্ভিসের ছোট ছোট গাড়িও। নাজিরাবাজারে বিভিন্ন পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলের কারণে অধিকাংশ সময়ই যানজট লেগেই থাকে। তাছাড়া এ সড়কের ওপরেই রয়েছে বৈদ্যুতিক তারের জটলা। সড়কের গা ঘেঁষে দু’পাশে রয়েছে পুরান ভবন। এসব ভবনের অধিকাংশের মূল ফটকই রাস্তার ওপর। পুরনো কমিউনিটি সেন্টারকে অনেক আগে থেকেই এলাকাবাসী ব্যবহার করায় অনায়াসেই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নেয়ার কাজও নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ নিয়ে নিয়েছে। একই ধরনের আরও দুটি মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে পুরান ঢাকার লালবাগ ও হাজারীবাগে। কাজী আলাউদ্দীন রোডের মাল্টিপারপাস সেন্টারটিতে ৪ তলা বিশিষ্ট বিশাল কমিউনিটি সেন্টার, নারী পুরুষের পৃথক জিম বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য এই রাস্তাটি কোনক্রমেই উপযুক্ত নয়। বিয়ে বাড়িতে কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগলে তা নেভানোর তেমন কোন ব্যবস্থাও পর্যন্ত নেই। এর বাইরে নতুন আরও ২টি সহ পুরনো ঢাকায়ই মোট তিনটি মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণ করছে ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ। বাকি দুটি এলাকারও রাস্তার আয়তন যথেষ্ট না। স্বাভাবিক চলাচল ও প্রশস্ত সড়কের সংস্থান না রেখেই আড়াইশ কোটি টাকাও বেশি ব্যয়ে এই তিনটি মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সংস্থাটি। বিশেষজ্ঞদের মতে, পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনায় না নিয়ে এ ধরনের ভবন নির্মাণ করলে তা পুরান ঢাকার যানজট সমস্যা আরও তীব্র করে তুলবে। সঙ্গে অগ্নিঝুঁকি তো রয়েছেই। ফলে যে কোন সময় অগ্নিদুর্ঘটনায় নিমতলী বা চকবাজারের চেয়ে আরও ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হবে। পুরান ঢাকার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের হাজারীবাগে খলিল সরদার কমিউনিটি সেন্টারটিকেই মাল্টিপারপাস ভবন হিসেবে নির্মাণ করা হচ্ছে। পুরান এই কমিউনিটি সেন্টারটি ভেঙ্গে সেখানে নির্মাণ করা হবে সর্বাধুনিক ১০ তলা বিশিষ্ট মাল্টিপারপাস ভবন। নগরবাসীর চাহিদার প্রেক্ষিতে নতুন করে তিনটি মাল্টিপারপাস ভবন এবং পুরান দুটি কমিউনিটি সেন্টার সংস্কারে গত বছরের মাঝামাঝিতে একনেক সভায় প্রকল্প প্রস্তাব পাঠায় ডিএসসিসি। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় ২শ’ ৬৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে নতুন তিনটি মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২শ’ ৫২ কোটি টাকা। ১৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে পুরান দুটি কমিউনিটি সেন্টারের সংস্কারের জন্য। প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, নতুন তিনটি মাল্টিপারপাস ভবনের মধ্যে দ্বিতীয়টি নির্মাণ করা হবে ২২ নম্বর ওয়ার্ডের খলিল সরদার কমিউনিটি সেন্টারে। আর তৃতীয় মাল্টিপারপাস ভবনটি নির্মাণ করা হবে ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের শায়েস্তাখান কল্যাণ কেন্দ্রে। মাল্টিপারপাস ভবন তিনটির প্রত্যেকটিতেই থাকবে আধুনিক কমিউনিটি হল রুম, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, কাউন্সিলরের কার্যালয়, পাঠাগার, নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা শরীরচর্চা কেন্দ্র ও ইনডোর গেইমস ও থাকবে ফুড কোডের ব্যবস্থা। থাকবে গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধাও। তবে প্রয়োজনের তুলনায় তা অত্যন্ত কম। এসব ব্যবস্থা থাকলেও অগ্নিনির্বাপণে তেমন কোন ব্যবস্থাই রাখা হয়নি। সঙ্গে গাড়ি পার্কিং না করতে পারলে ভবনে আসা অতিথি, এলাকাবাসী ও ক্রেতারা তাদের গাড়ি বাইরে রেখেই সেন্টারে প্রবেশ করতে হবে। ফলে সৃষ্টি হবে বর্তমানের চেয়ে আরও বড় যানজট। এ মাসে পুরান ঢাকার কাজী আলাউদ্দিন রোডের মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেন দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন। ডিএসসিসির নিজস্ব ১ বিঘা জমির ওপর ভবনটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬১ কোটি টাকা। নির্মাণের প্রথম পর্যায়ে ব্যয় হবে ২৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। পরবর্তীতে ভেতরের ডেকোরেশনসহ আধুনিক সুবিধাযুক্ত করে সর্বমোট ব্যয় হবে ৬১ কোটি টাকা। ভবনটির নিচে ২৫ থেকে ৩০ গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্থা রয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম। পাশাপাশি এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে সেখানে যুক্ত করা হচ্ছে একটি সুইমিং পুলও। এই মাল্টিপারপাস ভবনের নামকরণ করা হয়েছে বর্তমান মেয়রের বাবা এবং ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের নামে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফায়ার সার্ভিস সদর দফতরের পাশ ঘেঁষে নাজিরাবাজার যাওয়ার সরু রাস্তাটিই কাজী আলাউদ্দিন সড়ক। এই সড়কে পথচারীদের হাটার জন্য নেই কোন ফুটপাথ। রিক্সা ও মোটরসাইকেলের ফাঁক গলে এই সড়ক ধরে হাটতে হয় পথচারীদের। এ সড়কটি পুরান ঢাকার সবচেয়ে ব্যস্ত সড়ক। নাজিরাবাজার ও বংশাল যাওয়ার জন্য অধিকাংশ যানবাহনই সরু এই সড়কটি ব্যবহার করে থাকেন। যানবাহনগুলোর মধ্যেও অধিকাংশই থাকে মালবাহী। ফলে অধিকাংশ সময়ই আট ফুটেরও কম প্রশস্ত সড়কটিতে যানবাহনের জটলা লেগে থাকে। এই অবস্থায় ওই সড়কের পাশে ১০ তলা মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণের ফলে যানজটের ব্যাপকতা আরও বৃদ্ধি পাবে। সড়কের প্রশস্ততা বৃদ্ধি করে এই মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণের পরামর্শও দেন স্থানীয়রা। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮ অনুযায়ী, ১ হাজার ৭২ বঃমিঃ এর উর্ধ হতে ১ হাজার ২০৬ বঃমিঃ পর্যন্ত (১০ তলা) আবাসিক হোটেলের জন্য ভবন নির্মাণ করতে হলে সেখানে জমির পরিমাণ হতে হবে ১৬ থেকে ১৮ কাঠা পর্যন্ত। এই জমির সামনে রাস্তা থাকতে হবে ৯ মিটার বা ২৯ দশমিক ৫২ ফিট প্রশস্ত। ফ্লোর এরিয়া অনুপাত (এফএআর) হতে ৮। সর্বোচ্চ ভূমি আচ্ছাদনের (এমজিসি) পরিমাণ হবে ৫০ শতাংশ। পার্টি সেন্টারের জন্য ১০০ বর্গমিটার গ্রস এরিয়ার জন্য একটি করে কার পার্কিং থাকতে হবে। আগুন, ভূমিকম্প বা বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সর্বপ্রথম সাড়া দিয়ে থাকে ফায়ার সার্ভিস। এ জন্য ভবন নির্মাণের আগে সরকারী এই সংস্থাটির কাছ থেকে ছাড়পত্র নেয়ার একটি বিধান রয়েছে। সাধারণত যে এলাকায় ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে সেখানকার অবকাঠামো পর্যবেক্ষণ করে সংস্থাটি ছাড়পত্র দিয়ে থাকে। ডিএসসিসির মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্স নির্মাণের ক্ষেত্রে সংস্থাটির কাছ থেকে কোন ছাড়পত্র নেয়া হয়নি বলে জানা গেছে। ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালকের পক্ষ থেকে বলা হয় বিষয়টি আমাদের জানা নেই। সবশেষে শুরু হবে ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে (লালবাগ) শায়েস্তা খান কল্যাণ কেন্দ্রে। বর্তমানে জায়গাটি র‌্যাব-১০ তাদের অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করছে। বিকল্প ভবনে স্থানান্তরের জন্য সংস্থাটি ডিএসসিসির কাছে সময় চেয়েছে। সবমিলিয়ে তৃতীয় মাল্টিপারপাস ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করতে দুই মাস বিলম্ব হতে পারে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান। নতুন তিনটি মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণের পাশাপাশি সংস্কার করা হবে পুরোনো দুটি কমিউনিটি সেন্টারও। এর মধ্যে রয়েছে ৪নং ওয়ার্ডের বাসাবো কমিউনিটি সেন্টার। সবুজবাগ থানার উত্তর দিকে এই দোতলা কমিউনিটি সেন্টারটির অবস্থান। ঘনবসতিপূর্ণ এবং সরু রাস্তার পাশে অবস্থিত এই কমিউনিটি সেন্টারের রয়েছে মাত্র তিনটি গাড়ির পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। অতিরিক্ত গাড়ি নিজ দায়িত্বে কমিউনিটি সেন্টারের সামনের ফুটপাথে পার্ক করতে হয়। সংস্কার করা হবে ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের সূত্রাপুর কমিউনিটি সেন্টারটিও। দুই তলা বিশিষ্ট এই কমিউনিটি সেন্টার সংস্কারে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ কোটি টাকা। ডিএসসিসি সূত্র বলছে, তাদের অধীনে বর্তমানে ৪৬টি কমিউনিটি সেন্টার রয়েছে। কিন্তু এসব কমিউনিটি সেন্টারের অধিকাংশেরই নেই নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা। দু’একটি কমিউনিটি সেন্টারের পার্কিং ব্যবস্থা থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। মূলত পার্কিংয়ের যথেষ্ট জায়গা না থাকা এবং সড়কের প্রশস্ততায় কম থাকা, আগুন লাগলে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকাসহ নানা কারণে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করার কারণেই সিটি কর্পোরেশনের এসব কমিউনিটি সেন্টারের কোনটিই ততটা জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। বরং এসব কমিউনিটি সেন্টারের পাশে ব্যক্তি মালিকানাধীন কমিউনিটি সেন্টারগুলোতেই অতিথিদের সবসময়ই ভিড় বেশি থাকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) আলী আহাম্মেদ খান জনকণ্ঠকে বলেন, পুরান ঢাকার এলাকাগুলোতে এখন পর্যন্ত আগুনের খবর পাওয়ার পরে কখনোই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছানো যায়নি। একে তো এলাকাটির রাস্তা সরু, তার ওপর ভবনগুলো নির্মাণের ক্ষেত্রে সামনে প্রয়োজনীয় জায়গায়ও রাখা হয়নি। এ অবস্থায় কাজী আলাউদ্দিন সড়কে মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্স নির্মাণ করলে সেখানে কোন দুর্ঘটনাতেই শুধুমাত্র সরু সড়কের কারণেই তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে। তাছাড়া এই সড়কে জলাধার নেই যে আগুন লাগলে পানি পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, নাজিরাবাজারসহ পুুরান ঢাকার কোন সড়কেই তাদের অত্যাধুনিক গাড়িগুলো প্রবেশ করতে পারে না। এজন্য ঢাকা শহরের মধ্যে আগুনে ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি পুরান ঢাকার এলাকাগুলোতে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থপতি ও নগর পরিকল্পনাবিদ মোবাশ্বের হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, এ ধরনের মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্স নির্মাণের ক্ষেত্রে শুধু ইমারত বিধিমালা (২০০৮) মানলেই চলবে না। কারণ এই বিধিমালাতে বেশকিছু ধারা নিয়ে ইতোমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। বিধিমালাটি মূলত জনসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়নি। উত্তরার একটি সেক্টরের জনবসতি হার আর পুরান ঢাকার জনবসতি হার তো এক রকম না। তাই এ ধরনের বাণিজ্যিক বহুতল ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে অবশ্যই পারিপার্শ্বিক অবস্থার মূল্যায়ন করে এ ধরনের ভবন নির্মাণ করতে হবে। তিনি বলেন, এই ভবনটি যদি আবাসিক বাড়ি হতো তাহলে সেখানে নির্দিষ্ট সংখ্যক গাড়ি ও মানুষ থাকত। কিন্তু যেহেতু এই ভবনটি বাণিজ্যিক, তাই এখানে সার্বক্ষণিকভাবেই মানুষের ও গাড়ির প্রবাহ থাকবে। সেই প্রবাহ সামলানোর মতো রাস্তাও সেখানে থাকতে হবে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ভবনটি নির্মাণ করা না হলে তা হবে পুরান ঢাকার যানজট সৃষ্টির আরেকটি বড় কারণ। যেমন সিটি সেন্টারের জন্য পুরো মতিঝিল আজ যানজটের কবলে। কারণ ওই ভবনটিতে যথেষ্ট সংখ্যক গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক ও ডিএসসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল হাশেম জনকণ্ঠকে বলেন, কাজী আলাউদ্দিন সড়কটি প্রশস্ত করার বিষয়ে আমরা কয়েকবার পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু সড়কটির সঙ্গে অধিকাংশ ভবন হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। তবে ওই সড়কে নির্মিত মাল্টিপারপাস ভবনটিতে গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে ২০ থেকে ২৫টি গাড়ি পার্কিং করা যাবে। তবে ভবনটিতে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা থাকবে। জলাধার হিসেবে সুইমিং পুলকে কাজে লাগানো হবে। এটিকে পরিবেশবান্ধব ভবন হিসেবে তৈরি করা হবে। পুরান দুটি কমিউনিটি সেন্টার সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওই দুটি কমিউনিটি সেন্টার বেশ পুরনো। সেখানকার বৈদ্যুতিক লাইনগুলোও অনেক পুরনো। ফ্লোরগুলোও খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থায় নেই। এ জন্যই এই দুটি কমিউনিটি সেন্টার সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
×