ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মোঃ মনোয়ারুল হক;###;বি.এস.এস,বি-এড (১ম শ্রেণি);###;সিনিয়র শিক্ষক;###;কানকিরহাট বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়;###;সেনবাগ, নোয়াখালী।;###;[email protected]

অষ্টম শ্রেণির পড়াশোনা -বিষয় ॥ বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়

প্রকাশিত: ১০:০০, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

অষ্টম শ্রেণির পড়াশোনা  -বিষয় ॥ বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়

সুপ্রিয় শিক্ষার্থীরা, আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা রইল। ত্রয়োদশ অধ্যায়ঃ বাংলাদেশ এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা। উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও। ছাকিন ও হাসিব দুইজন সহপাঠী। তারা দুইজন জাতিসংঘ নিয়ে আলোচনা করছিল। ছাকিন বলে, জাতিসংঘের এমন একটি সংস্থা রয়েছে যেটি আমাদের দেশে খাদ্য ও কৃষির উন্নয়নে গুরুত্ত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। হাসিব বলে, এর একটি বিভাগ দেশ ও বিশ্বের জনসংখ্যা সম্পর্কিত জ্ঞানদানের পাশাপাশি এ বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। ক. বাংলাদেশ জাতিসংঘের কততম সদস্য? খ. নিরাপত্তা পরিষদ বলতে কী বোঝ? গ. ছাকিন তার দেশের খাদ্য ও কৃষির উন্নয়নে যে সংস্থার কথা বলেছে সে সংস্থা সম্পর্কে আলোচনা কর। ঘ. দেশ ও বিশ্বের জনসংখ্যা সম্পর্কিত জ্ঞানদানের পাশাপাশি এ বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনাকারী হাসিবের বর্ণিত সংস্থার ভূমিকা বিশ্লেষণ কর। ক. বাংলাদেশ জাতিসংঘের ১৩৬ তম সদস্য। খ. নিরাপত্তা পরিষদ হচ্ছে জাতিসংঘের সবচেয়ে গুরুত্ত্বপূর্ণ ও কার্যকরী সভা। ৫টি স্থায়ী ও ১০ টি অস্থায়ীসহ মোট ১৫টি সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে এটি গঠিত। ৫টি স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র হচ্ছে- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্ত্ররাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীন। এসব দেশের প্রত্যেকটির ‘ভেটো’ প্রদান বা কোনো প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়ার ক্ষমতা আছে। গ.খাদ্য ও কৃষির উন্নয়নে ছাকিনের বর্ণিত সংস্থার নাম হচ্ছে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (FAO)। বিশ্ব খাদ্য সংস্থা- FAO এর পুরো নাম Food and Agriculture Organization. এ সংস্থা ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সদর দপ্তর ইতালির রাজধানী রোমে অবস্থিত। সংস্থাটি সারা বিশ্বে ক্ষুধার বিরুদ্ধে কাজ করছে। বাংলাদেশ FAO এর একটি সদস্য রাষ্ট্র। ঢাকায় এর শাখা অফিস আছে। বাংলাদেশের খাদ্য ও কৃষির উন্নয়নে FAO গুরুত্ত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বাংলাদেশ খাদ্যে পুরোপুরি স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে প্রায় আমাদের দেশে খাদ্য সংকট দেখা দেয়। এ সমস্যার মোকাবেলায় একটি খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে FAO সরকারকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সাহায্য দেয়। এছাড়াও FAO খাদ্যদ্রব্য সরবরাহে সহায়তা ও কৃষির উন্নয়নে পরামর্শ দিয়ে থাকে এবং জরুরী পরিস্থিতি মোকাবেলায় সহায়তা করে। ঝড় ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ ক্ষুদে ও প্রান্তিক চাষিদের প্রযুক্তিগত সহায়তাও দেয় সংস্থাটি। ঘ. উদ্দীপকে হাসিব জাতিসংঘের যে সংস্থার কথা উল্লেখ করেছে সেটি জাতিসংঘের উন্নয়ন তহবিল (UNFPA)। কারণ হাসিব বর্ণিত সংস্থাটি দেশ ও বিশ্বে জনসংখ্যা সম্পর্কিত জ্ঞানদানের পাশাপাশি এ বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে- যা জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল বা UNFPA- কে নির্দেশ করে থাকে। UNFPA- এর পুরো নাম The United Nations Population Fund. এ সংস্থাটি ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সদর দপ্তর নিউইয়র্কে অবস্থিত। বিশ্বের ১৪০ টিরও বেশি দেশ এ সংস্থার সদস্য। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত আঞ্চলিক অফিসের মাধ্যমে UNFPA তার কাজকর্ম পরিচালনা করে থাকে। উন্নয়নশীল দেশ গুলোকে তাদের জনসংখ্যা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহায়তা প্রদানই হচ্ছে UNFPA-এর মূল লক্ষ্য। এটি জনসংখ্যা সম্পর্কিত তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে দেশগুলোর জনসংখ্যা নীতি প্রণয়ন এবং কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা করে। বাংলাদেশ বিশ্বের একটি অধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশ। এ অতিরিক্ত জনসংখ্যা বাংলাদেশের জন্য এক বিরাট সমস্যা। এ সমস্যা মোকাবেলায় UNFPA দীর্ঘদিন যাবৎ বাংলাদেশকে সহযোগিতা করছে। পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচিকে এগিয়ে নেওয়া, নারীর ক্ষমতায়ন প্রভৃতি বিষয়েও UNFPA বাংলাদেশ সরকারকে পরামর্শ ও সহযোগিতা দিচ্ছে। UNFPA এর সহয়তায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পপুলেশন সায়েন্স বিভাগ চালু হয়েছে। এ বিভাগটি দেশ ও বিশ্বের জনসংখ্যা সম্পর্কিত জ্ঞানদানের পাশাপাশি এ বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
×