ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বঙ্গবন্ধুকে গার্ড অব অনার দেয়া মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি আজও মেলেনি

প্রকাশিত: ০৯:০৫, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

 বঙ্গবন্ধুকে গার্ড অব অনার দেয়া মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি আজও মেলেনি

নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা, ২২ ফেব্রুয়ারি ॥ মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন ঘুটু মেম্বারকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করলে তিনি আজ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্ত হননি। চারদলীয় জোট আমলে যাচাই বাছাইকালে তিনি মুক্তিযোদ্ধা বলে প্রমাণিত হলেও চূড়ান্ত তালিকা থেকে নাম বাদ দেয়া হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী প্রধান ছিলেন আনোয়ার হোসেন। তার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে ঈশ্বরদী এয়ারপোর্টে ও ভেড়ামারায় বঙ্গবন্ধুকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। আনসার প্লাটুন কমান্ডার হিসেবে তিনি গার্ড অব অনার দেয়ার দায়িত্ব পান। আনোয়ার হোসেন অস্ত্রহাতে মুক্তিযুদ্ধ করাসহ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। ১৯৭১ সালে পাবনার তৎকালীন জেলা প্রশাসক নুরুল কাদের খান আনোয়ার হোসেনকে জয় বাংলা নামে একটি জিপগাড়ি দিয়েছিলেন। সে জিপে করে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের কন্ট্রোলরুম ও বিভিন্ন জায়গা থেকে খাদ্যসামগ্রী এনে ইপিআর, আনসার ও মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পৌছে দিয়েছেন। পাকবাহিনী তাকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার পর্যন্ত ঘোষণা করে। তাকে না পেয়ে পাকবাহিনী এ দেশের রাজাকার আল-বদরদের সহায়তায় তার শহরের সাধুপাড়ায় বাড়িটি পুড়িয়ে দেয়। তিনি ১৯৭৪ সালে ৮ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন। মুক্তিয়োদ্ধার চূড়ান্ত তালিকায় তার নাম আজও উঠেনি। এ মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম তার স্বামীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতির দাবিতে বিভিন্ন মহলে আবেদন করে ও কোন ফল পাননি। মনোয়ারা বেগম ২০১৪ সালের ১ জুলাই মারা যান। তার মৃত্যুর পর সন্তানরা এখন পিতার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতির দাবিতে বিভিন্ন মহলে আবেদন করে চলছেন। মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেনের পুত্র আতাউর হোসেন পিন্টু জানিয়েছেন, ২০০৪ সালে বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ের সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পাবনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও সফল মুক্তিযোদ্ধার উপস্থিতিতে তার পিতা আনোয়ার হোসেন ঘুটু মেম্বার মুক্তিযোদ্ধা বলে প্রমাণিত হয়; যা যাচাই বাছাই চূড়ান্ত তালিকায় ক্রমিকনং ৪৬, ফরমনং-৩২৩। পরবর্তীতে তৎকালীন জামায়াত আমির মতিউর রহমান নিজামীর ঘনিষ্ঠবলে খ্যাত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার টেরা আলম গং তার পিতাকে বাদ দিয়ে চূড়ান্ত তালিকা পাঠায়। ২০০৪ সালের চূড়ান্ত তালিকায় নাম না উঠায় তার মা মনোয়ারা বেগম ২০০৯ সালে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের আহ্বায়ক বরাবর আবেদন করেন তার আবেদনের প্রেক্ষিতে মুক্তিযোদ্ধার ৭৮নং তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হলেও এখন পর্যন্ত গেজেটভুক্ত করা হয়নি। এ বিষয়ে আনোয়ার হোসেনের পরিবার পরিজন তার নাম মুক্তিযোদ্ধার গেজেটে প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
×