ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিবৃতিতে পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদকে দায়ী করা হয়েছে

জাতিসংঘের কঠোর নিন্দা ॥ কাশ্মীরে জঙ্গী হামলা

প্রকাশিত: ০৭:৩৫, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

জাতিসংঘের কঠোর নিন্দা ॥ কাশ্মীরে  জঙ্গী হামলা

কাশ্মীরের পুলওয়ামায় ভয়াবহ জঙ্গী হামলার কড়া নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। পাশাপাশি এ হামলার সঙ্গে জড়িত পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গী সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারির ওই হামলায় সরাসরি জইশ-ই-মোহাম্মদের নাম উল্লেখ করায় পাকিস্তান আরও বিপাকে পড়ল বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। -খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও এনডিটিভি অনলাইনের। বৃহস্পতিবার চীনসহ নিরাপত্তা পরিষদের অন্যান্য স্থায়ীসদস্য রাষ্ট্র এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবে স্বাক্ষর করে। একই দিন রাতে নিরাপত্তা পরিষদের এক বিবৃতিতে বলা হয়, জম্মু ও কাশ্মীরে এই আত্মঘাতী হামলা কাপুরোষোচিত ও ঘৃণ্য কাজ। এ ঘটনায় নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করা হয়। ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদ অন্যতম বড় বাধা। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সকলকে একযোগে রুখে দাঁড়াতে হবে। আর যেসব দেশ সন্ত্রাসবাদের মদদ জোগাচ্ছে ও সন্ত্রাসবাদকে জিইয়ে রাখতে অর্থ জোগাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে। আর সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত কোন কার্যকলাপকে নিরাপত্তা পরিষদ বরদাস্ত করবে না বলেও জানানো হয়। নিরাপত্তা পরিষদের এই প্রস্তাবটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এতে জঙ্গী সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদের নাম রয়েছে। এর আগে ২০০৯, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে জাতিসংঘে জইশ-ই-মোহাম্মদের নাম উল্লেখ করে নিন্দা প্রস্তাব আনার পদক্ষেপে ভেটো দিয়ে তা ভেস্তে দেয় চীন। তবে এবার যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া ও চীন এই প্রস্তাবে সম্মত হয়। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে। পুলওয়ামা হামলার পর আন্তর্জাতিক মহলে ইসলামাবাদ যে ধীরে ধীরে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এই পদক্ষেপ তারই প্রমাণ বলে বিষেজ্ঞরা মনে করছেন। পুলওয়ামা হামলার জেরে প্রথমে পাকিস্তানের মোস্ট ফেবারর্ড ন্যাশনের সুযোগ কেড়ে নেয় ভারত। এরপর পাকিস্তান থেকে আমদানিকৃত পণ্যে দুই শ’ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক ধার্য করে দিল্লী। কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার আওয়ান্তিপুরা এলাকায় ভারতের সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) ৭৮টি গাড়ি লক্ষ্য করে জঙ্গী হামলা চালানো হয়। হামলায় সিআরপিএফ’র ৪০ সদস্য নিহত এবং কয়েকজন সদস্য আহত হন। জঙ্গী সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ এ হামলার দায় স্বীকার করে। ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনা কমাতে ব্যাক চ্যানেল ব্যবহার করতে চাইছে ইসলামাবাদ। পাকিস্তান তাদের বন্ধুরাষ্ট্র ও প্রভাবশালী দেশের সাহায্যে আলোচনার মাধ্যমে পরমাণু সমৃদ্ধ প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা প্রশমনে কাজ করছে। সম্প্রতি পাকিস্তান সফরকালে মোহাম্মদ বিন সালমান ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনার কথা বলেন এবং ভারতকেও তিনি একই কথা বলেন বলে পাকিস্তানের কূটনৈতিক সূত্রগুলোর ধারণা। পাকিস্তানের এক কূটনৈতিক সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি পশ্চিমা দেশও উত্তেজনা প্রশমনে উভয় দেশের সরকারকে আলোচনার প্রস্তাব দেয়। কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গী হামলার পর জঙ্গী নেতা মাওলানা মাসুদ আজহারকে জাতিসংঘের জঙ্গী তালিকায় আনার দাবি তোলা হয়। সেই দাবির আরও একধাপ বাড়িয়ে সৌদি আরব ও ভারতের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, জঙ্গী সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদকেও জাতিসংঘের জঙ্গী তালিকায় আনতে হবে। একই সঙ্গে সীমান্ত সন্ত্রাস রুখতে ও জঙ্গী সংগঠনগুলোর আর্থিক সহায়তা প্রদানও বন্ধ করতে হবে।
×