ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ওয়ানডেতে রেকর্ড গড়ে জিতল ইংল্যান্ড

প্রকাশিত: ১২:২২, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

ওয়ানডেতে রেকর্ড গড়ে জিতল ইংল্যান্ড

জিএম মোস্তফা ॥ কয়েকদিন আগেই ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্বকাপের পরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন ক্রিস গেইল। সমালোচকদের অনেকেও মনে করেছিলেন ক্যারিবিয়ান এই দানবের সময় বোধহয় শেষ। তবে গেইল যে ফুরিয়ে যাননি সেটাই প্রমাণিত হলো বুধবার। দীর্ঘ আট মাস পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলতে নেমেই ১৩৫ রানের ঝড়ো এক ইনিংস খেললেন ক্রিস গেইল। গড়লেন বিশ্বরেকর্ড। তবে শেষ পর্যন্ত দলকে জেতাতে পারেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই দানবীয় ব্যাটসম্যান। গেইলের ঝড়ো ইনিংস ম্লান হয়েছে ইংল্যান্ডের দুই তারকা ব্যাটসম্যান জেসন রয় ও জো রুটের জোড়া সেঞ্চুরিতে। গেইলের সেঞ্চুরির সৌজন্যে ৫০ ওভারে ৩৬০ করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে জেসন রয় আর জো রুটের জোড়া সেঞ্চুরির সুবাদে ৩৬৪ রান তুলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৬ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করে ইংল্যান্ড। স্থানীয় সময় বুধবার ব্রিজটাউনে দিবারাত্রির ম্যাচে স্বাগতিক ক্যারিবিয়ানরা খেলতে নেমেছিলেন সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। সিরিজের প্রথম ম্যাচেই জেতার মতো বড় সংগ্রহ করে তারা। গেইলের ১৩৫ রানের মধ্যে ছয়ের মার ছিল ১২টি। এছাড়া চারের মার ছিল তিনটি। গেইলের সেঞ্চুরিটা অবশ্য হতো না জেসন রয় তার ক্যাচটা না ফেললে। এছাড়া হোপ করেন হাফ সেঞ্চুরি (৬৪)। এ দু’জনের ওপর ভর করেই মূলত উইন্ডিজ দল ৮ উইকেট হারিয়ে স্বাগতিকদের ৩৬১ রানের টার্গেট ছুঁড়ে দেয়। ইংল্যান্ডের পক্ষে আদিল রশিদ আর স্টোকস তিনটি করে এবং ওকস দুটি উইকেট লাভ করেন। কিন্তু ক্যারিবিয়ানদের খেলা যেখানে শেষ হয়েছিল, সেখান থেকেই যেন শুরু করেন ইংলিশ ওপেনার জেসন রয়। শুরু থেকেই মেরে খেলতে থাকেন তিনি। ব্যক্তিগত ১২৩ রানে যখন তিনি আউট হন তখন দল ২ উইকেটের বিনিময়ে ২৭ ওভারে দুই শ’ ছাড়িয়ে গেছে। জেসন রয় ১৫টি চার ও তিনটি ছক্কার সৌজন্যে দুর্দান্ত এই সেঞ্চুরি করেন। জেসন রয় সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মাত্র ৬৫ বলে। যা ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে এই ফরমেটে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। ওপেনিংয়ে জনি বেয়ারস্টোর সঙ্গে ৯১ রান যোগ করেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে রুটের সঙ্গে যোগ করেন আরও ১১৪ রান। ম্যাচের শুরুতে গেইলের ক্যাচ ফেলেছিলেন তিনি। এদিন যেন তারই প্রায়শ্চিত্ত করে গেলেন ম্যাচ জেতানো শতরানে। সে জন্য ম্যাচসেরাও হন তিনি। তবে জয়ের কৃতিত্ব দিতে হয় জো রুটকেও। তিনিও যে এদিন ৯৭ বলে ১০২ রানের ঝলমলে এক ইনিংস উপহার দেন ইংল্যান্ডকে। এই দুই সেঞ্চুরির সৌজন্যেই শেষ পর্যন্ত ৮ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইংলিশরা। ৬ উইকেটের জয় পায় সফরকারীরা। অন্যদিকে বিফলে যায় ক্রিস গেইলের সেঞ্চুরি। একদিনের ক্রিকেট ইতিহাসে রান তাড়া করে জেতার তালিকায় এই ম্যাচ থাকল তিন নম্বরে। এর আগে ২০০৬ সালে জোহানেসবার্গে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৯ উইকেটে ৪৩৮ রান তুলে জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০১৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা ডারবানে আবারও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৬ উইকেটে ৩৭২ তুলে জেতে। তারপরই রয়-রুটদের এই জয়। তবে ইংল্যান্ডের একদিনের ইতিহাসে এটাই রান তাড়া করে পাওয়া সবচেয়ে বড় জয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতেও রান তাড়া করে এটি বৃহত্তম জয়। এই জয় বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ডকে আত্মবিশ্বাস জোগানোর পাশাপাশি ফেবারিট হিসেবেও চিহ্নিত করছে। এই ম্যাচে হেরে গেলেও ওয়ানডে ক্রিকেটে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার বিশ্বরেকর্ড গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে নিজেদের ইনিংসে ২৩টি ছক্কা মারেন ক্যারিবীয় বাটসম্যানরা। এর মধ্যে ১২টিই ছিল মারকুটে ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইলের। ওয়ানডেতে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার আগের রেকর্ডটি ছিল নিউজিল্যান্ডের। ২০১৪ সালে কুইন্সল্যান্ডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২২টি ছক্কা মেরেছিল কিউই ব্যাটসম্যানরা। ঐ ম্যাচে ২২টি ছক্কায় ৪ উইকেটে ২৮৩ রান করেছিল নিউজিল্যান্ড। জেমস এন্ডারসন ৬টি চার ও ১৪টি ছক্কায় ৪৭ বলে অপরাজিত ১৩১ রান করেন। ম্যাচটি ১৫৯ রানে জিতেছিল কিউইরা।
×