ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অভিমত ॥ শেখ হাসিনা ॥ লেডি উইথ দ্য ল্যাম্প

প্রকাশিত: ১১:৩৬, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

অভিমত ॥ শেখ হাসিনা ॥ লেডি উইথ দ্য ল্যাম্প

সহস্র অন্ধকার কেটে প্রাণে প্রাণে আলোক উদ্দীপনা তোলা কাঁপনের নাম শেখ হাসিনা। প্রকৃতির এক টুকরো শান্ত সাহস হয়ে অন্ধকারকে চ্যালেঞ্জ করাই তাঁর সৌন্দর্য। আর এই সৌন্দর্যমণ্ডিত পথ অবগাহনে তাঁর প্রতি বেড়েছে জনপ্রত্যাশা। এবারের একাদশতম জাতীয় নির্বাচনে বিপুল বিজয়-ই তার সাক্ষ্য বহন করে। আর এই প্রত্যাশাও অমূলক নয়। ’৯৬-তে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার দেশের অন্ধকার দূরীকরণে বিদ্যুত খাতকে বিশেষ নজরদারির আওতায় নিয়ে আসে। ২০০১-এর ‘কারচুপির নির্বাচনে’ সরকার গঠনকারী যুদ্ধাপরাধীদের পৃষ্ঠপোষক বিএনপি-জামায়াত তা বন্ধ করে দেয়। হিসেবে দেখা যায়, ’৯৬ তে আওয়ামী লীগের অর্জন করা প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুত বিএনপির ক্ষমতা শেষে ০৬’তে দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে তিন হাজারে। অর্থাৎ প্রয়োজনীয় এই বিদ্যুত খাতে তারা উন্নয়ন তো ঘটায়নি, বরং টেনে নামিয়েছেন তলানিতে। বাঙালীসহ বিশ্ব দেখেছে শেখ হাসিনার ফিনিক্স পাখির মতো উড়ে চলা। কি নান্দনিক অথচ দুর্বার সেই বিজয় নিশান। তাঁর নেতৃত্বেই ক্ষুধা এবং দারিদ্র্যকে জাদুঘরে পাঠিয়ে বাঙালী আজ পায়রা, রামপাল, মাতারবাড়ি ও মহেষখালীতে কয়লাভিত্তিক মোট ৯,৯৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৮টি মেগা প্রকল্প গ্রহণ করেছে। পুরনো ও অদক্ষ বিদ্যুত কেন্দ্র পাওয়ারিংয়ের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধির পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক ৫১৮ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন এবং ৫২ লাখ সোলার হোম সিস্টেম স্থাপন করেছে। ২০৪১ সালোর মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে রূপান্তরের ভিশন বাস্তবায়নে বিদ্যুত উৎপাদন মহাপরিকল্পনা (পিএসএমপি-২০১৬) প্রণয়ন করেছে। সঞ্চালন লাইনের পরিমাণ ৮,০০০ সার্কিট কিলোমিটার থেকে ১১,১২৩ সার্কিট কিলোমিটার উন্নীত করেছে। গ্রিড সাবস্টেশন ক্ষমতা ১৫,৮৭০ এমভিএ থেকে ৩৬,০৪৬ এমভিএতে উন্নীত করা হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে ১০,০০০ সার্কিট কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ‘১ কোটি ৮ লাখ থেকে ৩ কোটি ৩ লাখ’ হয়েছে। বিতরণ লাইন ২ লাখ ৬০ হাজার কি.মি.হতে ৪ লাখ ৫৭ হাজার কি.মি এ সম্প্রসারণ এবং সামগ্রিক সিস্টেম লস ১৬.৮৫% থেকে ১১.৪০% ‘তে আনা হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে প্রায় ১২ লাখ অধিক প্রিপেইড মিটার। ঢাকার বিদ্যুত বিতরণ ব্যবস্থাকে আন্ডারগ্রাইন্ডে আনতে নেয়া হয়েছে উদ্যোগ। গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদ্যুত খাতে দেয়া হয়েছে অভিযোগ ব্যবস্থাপনা। অনলাইনের মাধ্যমে বিদ্যুত বিল পরিশোধ, নতুন বিদ্যুত সংযোগের আবেদন ও নিয়োগ ব্যবস্থাপনা, অভিযোগ নিষ্পত্তি ব্যবস্থাপনা চালুকরণ ইত্যাদি। ‘বিদ্যুত আইন ২০১৮’ প্রণয়নের মাধ্যমে জ্বালানি সাশ্রয়ের দিকে গুরুত্ব দিয়ে আগামী ২০২১ সালের মধ্যে ১৫% এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ২০% জ্বালানি সাশ্রয়ের লাখ্যমাত্রায় নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ২০২১ সালের মধ্যে ২৪,০০০ মেগাওয়াট, ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০,০০০ মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত’ উৎপাদন লাখ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। এই অন্ধকার হটানোর যজ্ঞে একক শেখ হাসিনাই শক্তি-সাহস এবং জনগণের স্বপ্ন বাস্তবায়নের আকাক্সক্ষা। অন্ধকারকে জাদুঘরে সংরক্ষণে আমাদের আগামী প্রজন্মের কাছে শেখ হাসিনাই হবেন প্লেমেকার এবং স্ট্রাইকার। শেখ হাসিনার কারণেই অন্ধকার হবে দূরীভূত। ভবিষ্যত প্রজন্ম বুক ভরা সাহস ও নিঃশ্বাস নিয়ে বলবে, এই ৫৬ হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশে লেডি উইথ দ্য ল্যাম্প এককভাবে শেখ হাসিনা। লেখক : সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ [email protected]
×