ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনে দেশ সেরা ফরিদপুরের বক্তার হোসেন

প্রকাশিত: ০৯:১২, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনে দেশ সেরা ফরিদপুরের বক্তার হোসেন

পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনে যার নাম ছড়িয়ে রয়েছে সারা দেশে। তিনি ফরিদপুরের বক্তার হোসেন। ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর এলাকার চাষী তিনি। স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে তার সুখের সংসার। ব্যক্তি জীবনে বক্তার হোসেন সোনালী ব্যাংকের অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে মেরিনা আক্তারকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে বিয়ে দিয়েছেন। মেরিনা রাজেন্দ্র কলেজ থেকে ফিন্যান্স এ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগ থেকে মাস্টার্স পাস করেছেন। ছোট মেয়ে মার্জিয়া ফরিদপুর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। পঞ্চম শ্রেণীতে সে জিপিএ ফাইভ পেয়েছিল। স্ত্রী শাহেদা বেগম গৃহিণী। গত ১৯ বছর যাবত বক্তার হোসেনের উৎপাদিত উৎকৃষ্ট মানের বীজ এখন জেলা ছেড়ে ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশ। বক্তার হোসেন জানান, ২০০০ সালে প্রথমে পারিবারিক উৎসাহে নিজেদের ৬০ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ শুরু করি। সেই বছর বীজ উৎপাদনে খরচ হয় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। সে বছরই ওই জমি থেকে তিন মণ পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন করি। এ থেকে আয় হয় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। এর পর থেকে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি বক্তার হোসেনকে। প্রতি বছরই গোবিন্দপুর মাঠে বাড়তে থাকে তার পেঁয়াজ বীজের আবাদ। তিনি জানান, যে বীজ আমি উৎপাদন করতাম সেটি অনেক জনের মধ্যে বিক্রয় করতাম, বাজার পাওয়ার জন্য। আমি সফল হয়েছি। আদর্শ এই কৃষক বক্তার হোসেন বলেন, আমি ২৫ একর জমিতে পেঁয়াজের বীজের আবাদ করেছি। তিনি বলেন, আমার দেখাদেখি অম্বিকাপুর ইউনিয়নের কয়েকশ বেকার যুবক এই পেঁয়াজ বীজের চাষে ঝুঁকেছে। যে সকল যুবক এক সময় সমাজের অন্যায় কাজে জড়িত ছিল তারাও আজ পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে। বক্তার হোসেন বলেন, আমার পেঁয়াজ বীজের নামে খান বীজ ভান্ডার। দেশের যে সকল জেলাগুলোতে পেঁয়াজ উৎপাদন হয় সেসব জেলায় আমার বীজের সুনাম রয়েছে। ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আবুল বাশার বলেন, দেশের পেঁয়াজ বীজের মোট চাহিদার ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ বীজ ফরিদপুর থেকে সরবরাহ করা হয়। তিনি বলেন, বক্তার হোসেন একজন আদর্শ চাষী। তার বীজের সারাদেশেই সুনাম রয়েছে। ফরিদপুরের সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সাইদ চৌধুরী বারী জানান, চাষী বক্তারের জন্য এ অঞ্চলের অনেক বেকার যুবক আজ স্বাবলম্বী হয়েছে। আমার ইউনিয়নের মাঠে যে দিকে তাকানো যাবে সেদিকে দেখা যাবে এই মৌসুমে পেঁয়াজ বীজের ক্ষেতে শোভা পাচ্ছে। ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, ফরিদপুরে তিন জাতের পেঁয়াজ বীজ আবাদ হয়। সবগুলোই উৎকৃষ্ট মানের। তার মধ্যে বক্তার হোসেনের বীজ বেশি উৎকৃষ্ট। কৃষি বিভাগের এই কর্মকর্তা বলেন, এ বছর জেলায় ১৮৩০ হেক্টর জমিতে বীজের আবাদ হয়েছে। তিনি জানান, হেক্টর প্রতি ৬৫০ কেজি পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন হবে। -অভিজিৎ রায়, ফরিদপুর থেকে
×