ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের সিরিজ হার না সমতা?

প্রকাশিত: ১০:৪৬, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বাংলাদেশের সিরিজ হার না সমতা?

মিথুন আশরাফ ॥ বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে শনিবার অনুষ্ঠিত হবে। ক্রাইস্টচার্চের হাগলি ওভালে ম্যাচটি হবে। ভোর ৪টায় ম্যাচটি শুরু হবে। প্রথম ওয়ানডেতে ৮ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। তাতে করে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছে। আর তাই দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হারলেই সিরিজ হার হয়ে যাবে বাংলাদেশের। এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ হার হবে। আর যদি বাংলাদেশ কোনভাবে নিউজিল্যান্ডকে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হারিয়ে দিতে পারে তাহলে সিরিজে আসবে সমতা। তখন ১-১ সমতা আসবে। বুধবার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে তখন সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে পরিণত হবে। বাংলাদেশ দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতে সিরিজে সমতা আনবে না হেরে সিরিজ হারবে? তৃতীয় ওয়ানডে নিয়ে এখন কোন দলই ভাবছে না। শুধু দ্বিতীয় ওয়ানডে নিয়েই ভাবছে। এই ম্যাচটির ওপর যে দুই দলেরই অনেক হিসেব-নিকেশ আছে। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে যে দল জিতবে তাদেরই আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে। যদি নিউজিল্যান্ড জিতে তাহলেতো সিরিজই নিজেদের করে নেবে। তখন তৃতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ করার ভাবনায় মশগুল থাকতে পারবে। আর যদি হারে তাহলে তৃতীয় ওয়ানডেতে হেরে সিরিজ হারের সম্ভাবনাতেই পড়ে যাবে। যদিও তা কঠিন। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে নিউজিল্যান্ডকে হারানো কঠিন। তাও আবার টানা দুই ম্যাচে হারানো। প্রথম ওয়ানডেতে যেভাবে বাংলাদেশ দল খেলেছে, নাজেহাল হয়েছে, তাতে অসম্ভবই মনে হচ্ছে। তবে ক্রিকেট এমন খেলা, দিনটিতে যে দল সব বিভাগে নিজেদের উজাড় করে দিতে পারে তারাই জিতে। বাংলাদেশ কী পারবে তা করতে? যদি পারে তাহলে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে নিউজিল্যান্ডকে হারানোর কৃতিত্ব জমা হবে। আর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সেই জয় মিললে তো তৃতীয় ওয়ানডেতেও জয়ের আশা তৈরি হবে। কোনভাবে সেটিও জিতে গেলেইতো হয়। সিরিজই বাংলাদেশ নিজেদের করে নেবে। স্বপ্ন বড়। কিন্তু বাস্তব ভিন্ন। সিরিজ থেকে ভাল কিছু পেতে হলে একটি ম্যাচ জিততে হবে। সেই জয়টি দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হলে ভাল। না হলে তৃতীয় ওয়ানডেতে হলেও চলবে। কিন্তু নিউজিল্যান্ড দলের ক্রিকেটাররা কী আর তা হতে দেবেন? এর আগে কখনই নিউজিল্যান্ডের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কোন ফরমেটের কোন ম্যাচেই জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ড্রও নেই। এবারতো বাংলাদেশ দল আরও কাহিল। টানা খেলার মধ্যে আছে। ক্লান্ত ক্রিকেটাররা। আবার মাত্রই বিপিএল খেলে গেছে। টি২০ থেকে হঠাৎ করেই ওয়ানডেতে বদল হওয়া যে কতটা কঠিন তাতো প্রথম ওয়ানডেতেই বোঝা গেছে। ২৩২ রান করতেই গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ৪২ রানেই তামিম ইকবাল, লিটন কুমার দাস, মুশফিকুর রহীম ও সৌম্য সরকারের মতো ব্যাটসম্যানদের হারিয়ে বসেছে। তাতেই বোঝা যাচ্ছে, নিউজিল্যান্ড বোলাররা কতটা শক্তিশালী। শুধু কী বোলাররা? ব্যাটসম্যানরাওতো শক্তভাবেই নিজেদের উপস্থাপন করেছেন। মার্টিন গাপটিল ইনজুরি থেকে ফিরেই সেঞ্চুরি (১১৭*) করেছেন। ওপেনার হেনরি নিকোলসও হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। রস টেইলর অপরাজিত ৪৫ রান করেছেন। তাতে করে অনায়াসেই জিতেছে নিউজিল্যান্ড। সেখানে বাংলাদেশ বোলারদের মধ্যে শুধু মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ ১টি করে উইকেট শিকার করতে পেরেছেন। আর ব্যাটসম্যানদের মধ্যে মোহাম্মদ মিঠুন (৬২) ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের (৪১) সঙ্গে সৌম্য সরকার (৩০) ও মিরাজই (২৬) নজর কাড়তে পেরেছেন। কিন্তু যাদের কাছ থেকে বড় ইনিংস দরকার, বড় জুটি দরকার, সেই তামিম, লিটন, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহই নীরব থাকেন। এই ব্যাটসম্যানরা দলের ব্যাটিং ভরসা। তারা বড় ইনিংস না খেললে রানও মজবুত হওয়ার কথা না। শেষের দিকে যতই ভাল ব্যাটিং হোক, স্কোর বড় করা সম্ভব না। নিউজিল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে বড় স্কোর না গড়লে লড়াই করাও কঠিন। প্রথম ওয়ানডেতে পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশ। কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার বিষয়ও আছে। মানিয়ে নেয়ার সময়টুকুও তো পর্যাপ্ত মিলেনি। এখন দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সব ব্যর্থতা দূর করে জ্বলে উঠুক দল, দলের ক্রিকেটাররা সেই আশাই করা হচ্ছে। তা করতে না পারলে যে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হেরে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ হার হয়ে যাবে। ক্রিকেটাররা জ্বলে উঠে যদি দলকে জেতাতে পারেন তাহলে সিরিজে আসবে সমতা। বাংলাদেশ এখন সিরিজে হেরে যায় না সমতা আনে; তাই শনিবার দ্বিতীয় ওয়ানডে শেষ হতে নিশ্চিত হয়ে যাবে।
×