ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নয় বছর পর মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রদল, ২ ঘণ্টা অবস্থান

প্রকাশিত: ১১:০২, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

নয় বছর পর মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রদল, ২ ঘণ্টা অবস্থান

বিশ^বিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল ছাত্র সংসদ নির্বাচন ঘিরে ছাত্ররাজনীতির মূল কেন্দ্র বুধবার প্রথম মধুর ক্যান্টিনে যায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। এ সময় উপস্থিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। দীর্ঘ ৯ বছর পর বুধবার বেলা সাড়ে দশটার দিকে ছাত্রদলের বিশ^বিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেহেদি তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক বাশার আল সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ১৫ জনের একটি গ্রুপ মধুর ক্যান্টিনে এসে উপস্থিত হয়। পরে ছাত্রদলের দুই কেন্দ্রীয় নেতা মধুর ক্যান্টিনে আসেন। ডাকসু নির্বাচন নিয়ে নিজেদের দাবি জানাতে মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করেন ছাত্রদল নেতারা। এ সময় তারা সাত দফা দাবি উত্থাপন করেন। সেগুলো হলো : আবাসিক হল এবং ক্যাম্পাসে ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত, ন্যূনতম তিন মাস ছাত্র সংগঠনগুলোর সহাবস্থান ও স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকা- নিশ্চিতের পর তফসিল ঘোষণা, আবাসিক হল থেকে একাডেমিক ভবনে ভোটকেন্দ্র স্থানান্তর, ভোটার হওয়ার বয়সের যে প্রতিবন্ধকতা আছে তা প্রত্যাহার, তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী প্রচারে বাধা দূর করা, প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের কোন প্রকার হয়রানি, মামলা অথবা গ্রেফতার যাতে না করা হয় তা নিশ্চিত, সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর যে হামলা ও নির্যাতন হয়েছে তার নিরপেক্ষ তদন্ত করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান, ডাকসুর নির্বাচন পরিচালনা ও উপদেষ্টা কমিটিসহ এ বিষয়ে গঠিত সব কমিটির পুনর্গঠন, ডাকসু সভাপতির যে অগণতান্ত্রিক ক্ষমতা রয়েছে তাতে ভারসাম্য আনা। এজন্য ৫ (এ) ধারা সংশোধন করে ছাত্র সংসদ বিলুপ্তি অথবা কার্যক্রম স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সভাপতি ও ছাত্র সংসদের যৌথ সিদ্ধান্তের বিষয় সংযোজন করতে হবে এবং ৮ (এম) ধারাটি সংশোধন করতে হবে। উল্লেখ্য, গত ৭ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদল ঢাবি উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেয়। সেদিনও উল্লিখিত সাত দফা দাবি তুলে ধরা হয়। স্মারকলিপি প্রদান শেষে তারা মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করে। এদিকে সকাল সাড়ে দশটায় ছাত্রদলের বিশ^বিদ্যালয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ১৫ জনের একটি গ্রুপ মধুর ক্যান্টিনে আসে। এ সময় উপস্থিত বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এ সময় ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী ও সহ-সভাপতি তুহিন কান্তি উপস্থিত ছিলেন। ছাত্রদলের বিশ^বিদ্যালয় শাখার শীর্ষ দুই নেতা তাদের সঙ্গেও কুশল বিনিময় করেন। পরে মধুর ক্যান্টিনের তিনটি টেবিল জড়ো করে কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বসেন। ছাত্রদলের উপস্থিতি কেন্দ্র করে বিভিন্ন হলের ছাত্রলীগ কর্মীরা এ সময় স্লোগান দিতে থাকে। অন্যান্য দিনের চেয়ে অনেক বেশিসংখ্যক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এদিকে বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে মধুুর ক্যান্টিনে উপস্থিত হন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান। বারোটার দিকে আসেন কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা ‘অছাত্রদের আস্তানা, ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘বয়স যাদের পঁয়তাল্লিশ, ক্যাম্পাসে কেন ঘুরিস?’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে। অন্যদিকে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা ‘খালেদা জিয়া’ বলে স্লোগান দেয়। সংবাদ সম্মেলন শেষে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান বলেন, আজ থেকে শুরু হলো সহাবস্থানের যাত্রা। আগামীতে এ রকম পরিবেশ অব্যাহত থাকুক এটাই প্রত্যাশা করি। তবে পুরোপুরি সহাবস্থান নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ডাকসুর তফসিল পিছিয়ে পুনর্তফসিল ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি। ছাত্রদলের উপস্থিতিকে স্বাগত জানায় ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। তিনি বলেন, ছাত্রদল আজ মধুর ক্যান্টিনে এসেছে, আমি তাদের স্বাগত জানাই। তবে দীর্ঘদিন ধরে আপনাদের সম্মেলন হয় না। আপনারা সম্মেলন করে সাধারণ ছাত্রদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেন। না হলে আপনারা বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রহণযোগ্যতা পাবেন না এবং সাধারণ ছাত্ররা আপনাদের বয়কট করবে।
×