রশিদ মামুন ॥ দেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দর পায়রার জন্য একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে যাচ্ছে সরকার। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়নে বন্দর আর বন্দরকে ঘিরে বিদ্যুত কেন্দ্র তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল, তেল পরিশোধনাগার এবং রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল গড়ে তোলার বড় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে এই মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হচ্ছে।
নেদারল্যান্ডের রয়েল হাসকনিং ডিএইচভি এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্বদ্যিালয়ের (বুয়েট) গবেষণা, পরীক্ষা এবং পরামর্শক ব্যুরো (বিআরটিসি) যৌথভাবে মহাপরিকল্পা প্রণয়নের কাজ করবে। বন্দর উন্নয়নে মোট ১২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মহাপরিকল্পাটি প্রণয়ন করা হবে। এজন্য ১৮ মাস সময় প্রয়োজন হবে। আজ বৃহস্পতিবার নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে হাসকনিং ডিএইচভি এবং বিআরটিসি চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পায়রা বিদ্যুত কেন্দ্র ঘিরে নতুন প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বলা হচ্ছে আগামী ৫ বছরের মধ্যে নতুন অর্থনৈতিক মেরুকরণ হবে পায়রাকে ঘিরে। চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়েও আধুনিক বন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ৬ হাজার ৫০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। পায়রা বন্দরে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের পাশাপাশি রেল যোগাযোগ স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এজন্য বন্দর উন্নয়নের একটি মহাপরিকল্পনার প্রয়োজন রয়েছে। বন্দর নির্মাণ এবং বন্দের পাশে কোথায় কোন স্থাপনা নির্মাণ উপযোগী তা নির্ধারণ করা হবে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে বন্দর চ্যানেল ড্রেজিং করার জন্য একটি যৌথমূলধনী কোম্পানি গঠন করা হয়েছে। ওই কোম্পানিটি ড্রেজিং করার জন্য চুক্তিও সই করেছে। একই সঙ্গে বন্দর চ্যানেল ড্রেজিং করার অর্থায়নের সংস্থান করা হয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে বন্দরের ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু হবে। বন্দর চ্যানেল ড্রেজিং শেষ হলেই বন্দর শতভাগ ব্যবহার উপযোগী হবে। এজন্য সমান গুরুত্ব দিয়ে বন্দরের জেটিসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।
মহাপরিকল্পনা প্রণীত হলে- বন্দরের অধিগ্রহণের জন্য নির্ধারিত প্রায় ৬ হাজার ৫০০ একর জমিতে টপোগ্রাফি ও অন্য সার্ভের মাধ্যমে জমি ব্যবহার পরিকল্পনা প্রণয়ন হবে। এতে করে টার্মিনাল ও সকল স্থাপনার অবস্থান মহাপরিকল্পনায় চিহ্নিত হবে। ফলে পায়রা বন্দরের উন্নয়নের জন্য মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনাগুলো অগ্রাধিকার নির্ধারণ করে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
মহাপরিকল্পনায় আন্তর্জাতিকমানের সম্ভাব্যতা জরিপ করা হবে। যাতে বন্দরটি কতটা সম্ভাবনা তৈরি করবে তা জানা যাবে। শুধু বাংলাদেশ নয় প্রতিবেশী দেশগুলো কিভাবে পায়রা বন্দর ব্যবহার করতে পারে তাও জরিপে নির্ধারণ করা হবে। মনে করা হচ্ছে এতে বন্দর নির্মাণের জন্য বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা সহজ হবে। ইতোমধ্যে ভারত এবং চীন বন্দরে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে।