ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড প্রথম ওয়ানডে আজ

প্রকাশিত: ১১:১৬, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড প্রথম ওয়ানডে আজ

মিথুন আশরাফ ॥ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জেতা সম্ভব মনে করছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। এই জয়ের আশা নিয়েই আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে খেলতে নামবে বাংলাদেশ দল। নেপিয়ারের ম্যাকলিন পার্কে বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায় ম্যাচটি শুরু হবে। সত্যিই কী বাংলাদেশ পারবে নিউজিল্যান্ডকে হারাতে? দলে নেই সাকিব আল হাসান। যিনি থাকা মানে ব্যাটিং-বোলিং নিয়ে একজনের ওপরই ভরসা করা যায়। তিনি নাই মানে এখন ব্যাটিং এবং বোলিংয়ের জন্য আলাদা ক্রিকেটার ভাবতে হবে। তার অভাব পূরণ করা কঠিন। আবার নিউজিল্যান্ডের মাটিতে খেলবে বাংলাদেশ। কন্ডিশন কতটা কঠিন তা সবারই জানা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেতো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কখনও জেতা যায়নি। কোন ফরমেটেই জেতা যায়নি। এমনকি ড্র’ও করা যায়নি। বোঝাই যাচ্ছে বাংলাদেশ দলের সামনে কঠিন পরীক্ষায় আসছে। আবার দলের ক্রিকেটাররা মাত্রই বিপিএলে খেলে গেলেন। টি২০ খেলে, তাতে অনেকটাই অভ্যস্ত হয়ে নিউজিল্যান্ডে খেলতে নামছে। খেলা হবে ওয়ানডে ফরমেটে। অনেক দিক দিয়েই সমস্যা। সেই সমস্যাগুলো কী উতরাতে পারবে বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা? পারলে যে কোন দলের বিপক্ষেই জেতা সম্ভব। কিন্তু না পারলে অসম্ভব। মাশরাফি অবশ্য বলছেন সম্ভব। তা জোর দিয়েই বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘ওয়ানডে সিরিজ জেতা অবশ্যই সম্ভব। আমরা জিততে পারি না, তাতো নয়। এখন কঠিন (সাকিবকে ছাড়া)। তবে সম্ভব। আমাদের বিশ্বাস ও মানসিক শক্তি আছে। কিন্তু তা কাজে লাগাতে হবে। যদি পরিকল্পনামতো খেলা যায় তাহলে সম্ভব।’ নিউজিল্যান্ডে গিয়ে কখনই জিতেনি বাংলাদেশ। তা ভালভাবেই নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটারদের মাথায় আছে। ধরেই নেয়া হয়েছে যেন এবারও বাংলাদেশ পারবে না। তা না হলে বাংলাদেশের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে খেলা, অথচ দলে এত পরিবর্তন ঘটানো হয়? বাংলাদেশের বিপক্ষে সিনিয়র ক্রিকেটারদের আবার বিশ্রামে রাখার পরিকল্পনাও করেছে নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশকে পেস দিয়েই ঘায়েল করা যায়। এমন ভাবনা থেকে পেসার ট্রেন্ট বোল্ট, টিম সাউদি, লকি ফার্গুসন, ম্যাট হেনরিদের নিয়েই স্কোয়াড সাজিয়েছে স্বাগতিকরা। বিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসেবে শুধু মিচেল স্যান্টনারকে রাখা হয়েছে। কলিন মুনরোর মতো মারমুখী ব্যাটসম্যানকে, যিনি কিনা টি২০তে তিন সেঞ্চুরির মালিক, এমন ব্যাটসম্যানকে প্রথম দুই ওয়ানডেতে রাখা হয়নি! দুই ম্যাচে নেতৃত্ব দেয়ার পর আবার কেন উইলিয়ামসনকেও বিশ্রামে রাখা হয়েছে। মার্টিন গাপটিল ফিরেছেন। তবে তিনিও ইনজুরি থেকে ফিরে দলে ঢুকেছেন। বিশ্বকাপ ভাবনাই এখন নিউজিল্যান্ড শিবিরে ঘুরছে। বিশ্বকাপের জন্যই শুধু ভাবছে তারা। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজকে তাই এত বেশি পাত্তা দেয়া হচ্ছে না। ভাবখানা এমন সিরিজ তারাই জিতবে। নিউজিল্যান্ডের ভয়ঙ্কর ব্যাটসম্যান মার্টিন গাপটিল বলেছেন, ‘চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আমরা হেরেছি। তা মনে আছে। বাংলাদেশ ভাল দল। তবে আমরা এবার আত্মবিশ্বাসী। ভাল শুরু করতে চাই। তাদের (বাংলাদেশকে) শুরুতেই পেছনে ফেলতে চাই।’ দেশের মাটিতে এখনকার সময়ে সব দলই শক্তিশালী। বাংলাদেশতো যে কোন দলকেই দেশের মাটিতে এখন হারায়। নিউজিল্যান্ডও তাই অনেক শক্তিশালী। দলে দুই একজন ক্রিকেটার না রেখেও তাই জেতার আশা করছে কিউইরা। বাংলাদেশ কী করবে? তামিম ইকবাল যদি বিপিএল ফাইনালের মতো ঝড় তুলতে পারেন তাহলে নিউজিল্যান্ড বুঝবে, কাদের সামনে পড়েছে এবার। লিটন কুমার দাস ও সৌম্য সরকারের মধ্যে একজন যদি নিজেকে মেলে ধরতে পারেন তাহলে বাংলাদেশের স্কোর ফুলে ফেঁপে উঠতে বাধ্য। এরপর মুশফিকুর রহীম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদতো আছেনই। প্রস্তুতি ম্যাচেও এ দুইজন হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। বোঝা যাচ্ছে, রিদমে আছেন। সাব্বির রহমান রুম্মন আবার দলে সুযোগ পেয়েছেন। অনেক আশা করে সাব্বিরকে নেয়া হয়েছে। তিনি ভরসা হয়ে নিজেকে মেলে ধরতে পারলে নিউজিল্যান্ডের বারোটা বাজবেই। নিউজিল্যান্ডের উইকেটতো মুস্তাফিজুর রহমান, মাশরাফি বিন মর্তুজা, রুবেল হোসেনের জন্য আদর্শ উইকেটই। ব্যাটসম্যানরা নিজেদের কাজটা করে দিতে পারলে পেসাররাতো এমননিতেই উইকেটের সুবিধা পাবেন। সেই সুবিধা নিয়ে এখন নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের ওপর চড়াও হওয়া গেলেই হলো। ব্যাটসম্যান ও বোলারদের ঐক্যবদ্ধ নৈপুণ্য মিলে সাকিবকে ছাড়াও জেতা সম্ভব। এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে সেই প্রমাণ মিলেছেও। বাংলাদেশ দলের কোচ স্টিভ রোডসও যেমন বলেছেন, ‘আন্ডারডগ হিসেবে আমরা অনেক সময় অনেককে অবাক করে দিয়েছি। আমি মনে করি নিউজিল্যান্ডও জানে বাংলাদেশকে হারাতে হলে তাদের খুব ভাল ক্রিকেটই খেলতে হবে। আমি এখন কেবল এটাই বিশ্বাস করি নির্দিষ্ট দিনে আমার খেলোয়াড়রা প্রমাণ দেবে যে ভাল ক্রিকেট তারাও খেলতে জানে।’ এখন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আজ প্রথম ওয়ানডেতেই তেমনটি হোক সেই আশাই করা হচ্ছে।
×