পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ককে হত্যা

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের এক বিধায়ককে খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার স্থানীয় সময় রাত সোয়া ৮টার দিকে নদিয়া জেলার কৃষ্ণগঞ্জের হাঁসখালি এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। আনন্দবাজার পত্রিকা ও এনডিটিভি। খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সুজিত মন্ডল ও কার্তিক মন্ড ল নামে দুজন স্থানীয়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া একজনকে আটক করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের ধারণা, ভাড়া করা খুনী দিয়ে হত্যা করা হয়েছে বিধায়ককে। এলাকা সম্পর্কে আততায়ী রীতিমতো ওয়াকিবহাল। কারণ, ওই এলাকার পরিচিতি না থাকলে এভাবে অনুষ্ঠানের ভেতরে ঢুকে সত্যজিৎ বিশ্বাসকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে খুন করে এত দ্রুত পালানো সম্ভব হতো না। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভার কৃষ্ণগঞ্জ আসনের বিধায়ক ছিলেন নিহত সত্যজিৎ বিশ্বাস। হাঁসখালির ফুলবাড়িতে বাড়ির কাছে সরস্বতী পূজার অনুষ্ঠানে অনেক লোকের ভিড়ের মধ্যে তাকে গুলি করে খুন করা হয়। দর্শকাসনে বসে থাকা বিধায়ক সত্যজিতের কপালে বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি করা হয়। এতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত লোকজন কয়েক সেকেন্ডের জন্য স্তম্ভিত হয়ে পড়ে। কিন্তু পরক্ষণে তারা বিধায়ককে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লে ভিড়ের মধ্যে খুনী পালিয়ে যায়। পুলিশের বরাতে জানা গেছে, পূজার অনুষ্ঠান উদ্বোধনের জন্য একটি মোমবাতি জ্বালানোর কিছুক্ষণ পর পয়েন্ট-ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে সত্যজিতকে গুলি করে হত্যা করা হয়। স্থানীয় ক্লাব ‘আমরা সবাই’ পূজা অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিধায়ক সত্যজিৎ অনুষ্ঠান স্থলের সামনের সারির একটি চেয়ারে বসেছিলেন। ছোট একটি মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে, তা দেখার জন্য জমায়েত হয়েছে অল্প কিছু লোক। এরইমধ্যে হঠাৎ কেউ তাকে গুলি করে ভিড়ের মধ্যে মিশে যায়। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, পটকা ফাটার মতো শব্দ হলো। তখন দেখলাম সত্যজিৎ মাটিতে পড়ে গেলেন। আমি মাত্র পাঁচ ফুটের মতো দূরে ছিলাম। দৌড়ে তার কাছে গেলাম। এর মধ্যেই তার সারা শরীর রক্তে ভেসে গেছে। তার চেয়ারের পাশ থেকে দেশে তৈরি একটি ওয়ানশূটার গান উদ্ধার করা হয়েছে। এই অস্ত্রটিই সত্যজিৎ খুনে ব্যবহার করা হয়েছে কি না তা স্পষ্ট হয়নি। এ হত্যাকান্ডের জন্য বিজেপির মুকুল রায় ও তার লোকদের দায়ী করেছেন নদিয়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত। হত্যাকান্ডের প্রায় ৪৫ মিনিট আগে অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে যান রাজ্য সরকারের মন্ত্রী চাকদাহের বিধায়ক রত্না ঘোষ। তাকে গাড়িতে তুলে দেয়ার পরই দর্শকাসনের ওই চেয়ারে বসেছিলেন সত্যজিৎ। হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস।