ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গীয় শিল্পকলা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন

প্রকাশিত: ১১:২৬, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বঙ্গীয় শিল্পকলা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের হাজার বছরের প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাস নিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি আড়াই হাজার বছরের বঙ্গীয় শিল্পকলার ঐতিহ্যকে মেলে ধরেছে প্রকাশনার মাধ্যমে। এভাবেই বিগত ২৫ বছর ধরে বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক ও শিল্পকলার ঐতিহ্যের বিশ্বায়নে অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছে বঙ্গীয় শিল্পকলা চর্চার আন্তর্জাতিক কেন্দ্র। শনিবার প্রতিষ্ঠানটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো চার দিনব্যাপী তেরোতম বঙ্গীয় শিল্পকলা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন। দেশী-বিদেশী অতিথিদের প্রাণবন্ত আলোচনা ও আড্ডায় মুখর হয়ে ওঠে সম্মেলন। রাজধানীর উত্তরার চার নং সেক্টরের একটি অভিজাত হোটেলের মিলনায়তনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে সম্মেলন উদ্বোধন করেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের সাবেক অধ্যাপক নিরঞ্জন অধিকারী। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। সন্দর্ভ ভাষণ দেন কলকাতা বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাচীন ভারত ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. সুস্মিতা বসু মজুমদার। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন অস্ট্রিয়া আর্ট হিস্ট্রিয়ান ড. আনড্রে লোজারিস এবং ভারতের তামিলনাড়ু প্রদেশের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সাবেক পরিচালক ও কাঞ্চিপুরাম বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আর নাগাস্বামী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গীয় শিল্পকলা চর্চার আন্তর্জাতিক কেন্দ্রের ট্রাস্টি সৈয়দ মঞ্জুরুল এলাহি ও ভারতীয় হাইকমিশনের ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক নীপা চৌধুরী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে এএমএ মুহিত বলেন, আজকের এই একাডেমিক অনুষ্ঠানে দেশী-বিদেশী অর্ধশতাধিক বঙ্গীয় শিল্পকলা বিষয়ক নিবেদিত প্রাণ গবেষকদের সমারোহে একজন ট্রাস্টি হিসেবে অনেক আনন্দ বোধ করছি। বলে রাখা ভাল যে শুরু থেকে এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। বর্তমান সরকার এই প্রতিষ্ঠানকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে। তবে এর টেকসই উন্নয়নের জন্য বঙ্গীয় শিল্পকলা চর্চার আন্তর্জাতিক কেন্দ্রকে আর দেরি না করে একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে দ্রুত জাতীয়করণ করা উচিত। বিশেষ অতিথির ভাষণে নিরঞ্জন অধিকারী বলেন, গত ২৫ বছরে এই প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক কার্যক্রম বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাস বিষয়ক প্রকাশনী ও আন্তর্জাতিক সম্মেলন নিয়মিতভাবে করার মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্য অঙ্গনে বিশেষ অবদান রেখে চলেছে। এই প্রতিষ্ঠানকে নিয়মিতভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করার জন্য সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাই। সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, এই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্যের বিশ^ায়নে বিরাট অবদান রাখছে। বিশেষ করে বাঙালী জাতীয় আড়াই হাজার বছরের উপরে যে বঙ্গীয় শিল্পকলার ঐতিহ্য রয়েছে প্রকাশনা ও সম্মেলনের মাধ্যমে বিশ^ দরবারে তুলে ধরতে নিরলস কাজ করে চলেছে, তা প্রশংসার দাবি রাখে। স্বাগত বক্তৃতায় বঙ্গীয় শিল্পকলা চর্চার আন্তর্জাতিক কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. এনামুল হক বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করার জন্য ধন্যবাদ জানান। এই আমন্ত্রিত অতিথিরা তাদের বক্তব্যে বলেন, কোন প্রতিষ্ঠান ২৫ বছর ধরে নিয়মিতভাবে দ্বিবার্ষিক আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করছে-এটা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। শুধু তাই নয়, এই সম্মেলনটি বাংলাদেশের প্রাচীন শিল্পকলা চর্চার অন্যতম প্ল্যাটফর্ম হিসেবেও কাজ করছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর আমন্ত্রিত প্রতিনিধিরা তিন দিনের জন্য সুন্দরবনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। জাহাজের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে এই তিন দিনের একাডেমিক অধিবেশন ।
×