ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

২৪৪ ওয়েবসাইট বন্ধ

কর্পোরেট সিমে আঙ্গুলের ছাপ বাধ্যতামূলক

প্রকাশিত: ১১:০৫, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

কর্পোরেট সিমে আঙ্গুলের ছাপ বাধ্যতামূলক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি ২৪৪টি ‘ওয়েবসাইট (ডোমেইন ও লিংক)’ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। বুধবার বিটিআরসির সিস্টেম এ্যান্ড সার্ভিস বিভাগ থেকে দেশের সব আইআইজিকে (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) সংশ্লিষ্ট পর্নো সাইটগুলো বন্ধের নির্দেশনা পাঠানো হয়। নির্দেশনা পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই আইআইজিগুলো তা কার্যকর করতে শুরু করেছে। এ ছাড়া অপরাধমূলক কর্মকা- এড়াতে কর্পোরেট সিম উত্তোলন, প্রতিস্থাপন, হস্তান্তর এবং নিষ্ক্রিয়করণের ক্ষেত্রে অনুমোদিত ব্যক্তির আঙ্গুলের ছাপ বাধ্যতামূলক করেছে বিটিআরসি। এ সংক্রান্ত বিটিআরসির পাঠানো তালিকায় দেখা যায়, পর্নো সাইটগুলোর মধ্যে রয়েছে ৬২টি টপ পর্নো টিউব সাইট, ১টি মোবাইল পর্নো সাইট, ১০টি এ্যাডাল্ট ইঞ্জিন সাইট, ১২টি টপ পর্নো সাইট, ২টি বেস্ট ফেটিস পর্নো সাইট, ১টি আরব পর্নো সাইট, ১টি বেস্ট পিক ডাম্প সাইট, ৫টি মোস্ট ফেমাস পিকচার সাইট, ৩টি বেস্ট এ্যানাল প্রিমিয়াম সাইট, ৩টি বেস্ট এ্যামেচার প্রিমিয়াম সাইট, ৫টি বেস্ট এ্যামেচার পর্নো সাইট, ১২টি টপ লাইভ ক্যাম সাইট, ৯টি টপ ভিআর পর্নো সাইট, ৪টি বেস্ট গে পর্নো সাইট, ৪টি বেস্ট পর্নো টরেন্টস সাইট, ৬টি মোস্ট ফলোয়িং পিনার (পিন্টারেস্ট), ৬টি বেস্ট মডেল ডিরেক্টরি সাইট, ৩টি টপ ইরোটিক সাইট, ৫টি টপ ইন্ডিয়ান পর্নো সাইট, ১টি ল্যাটিন পর্নো সাইট, ১টি লেসবিয়ান পর্নো সাইট, ২টি বেস্ট শিমেল পর্নো সাইট, ৫টি পপুলার এ্যাডাল্ট গেমস সাইট, ২টি মোস্ট ডাউনলোড সফটওয়্যার, ৭টি রিলাইয়েবল এ্যাডাল্ট অনলাইন শপ, ৫টি টপ এ্যাডাল্ট ফোরাম সাইট, ৪টি টপ ম্যাগাজিন সাইট, ৬টি মোস্ট ফেমাস সেলেব ব্লগ, ২টি বেস্ট এ্যাডাল্ট চ্যাট সাইট, ৪টি ফেমাস হুকআপ সাইট, ৩০টি বেস্ট পে পর্নো সাইট। এছাড়া ১২টি অন্য ধরনের পর্নো সাইটও বন্ধ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দেন-২৪৪টি পর্নো সাইট বন্ধ করেছি। অভিযান চলছে। চলবে। এর আগে কয়েকটি নিউজ পোর্টালকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেছিলেন, আমাদের সক্ষমতার অভাবে এগুলো চিরদিনের জন্য বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। কিছুদিন বন্ধ থাকার পরে সাইটগুলো আবারও সচল হচ্ছে। এটাই বড় চ্যালেঞ্জ। শীঘ্রই আমরা পর্নো সাইট বন্ধের সক্ষমতা পুরোপুরি অর্জন করতে সক্ষম হবো। ইউটিউবও পর্নোগ্রাফির একটা বড় উৎস। ইউটিউব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হয়েছে। তারা আমাদের এ বিষয়ক অনুরোধ রাখবে বলে আশা করা যায়। এ ছাড়া ইউটিউব এরই মধ্যে আমাদের অনেক অনুরোধ রেখেছে। অনেক কনটেন্ট এরই মধ্যে তারা সরিয়ে ফেলেছে। পর্নো সাইট বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে দেশের ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক বলেন, ‘বিটিআরসির নির্দেশনা বাস্তবায়ন শুরু হয়ে গেছে। এর মধ্যে সবগুলোই পর্নো সাইট নয়। অনেক লিংক আছে যেগুলো পর্নো কনটেন্ট রয়েছে। সাইটগুলোর মধ্যে দেশী ও বিদেশী সাইট রয়েছে। আসলে এটা একটি চলমান প্রক্রিয়া। বিভিন্ন সময়ে এগুলো বন্ধের নির্দেশনার পাওয়ার পরে সেগুলো বন্ধও করা হয়েছে। কিন্তু পর্নো সাইটের নির্মাতারা কারিগরিভাবে বেশি শক্তিশালী হওয়ায় প্রযুক্তির আশ্রয় নিয়ে সাইটগুলো আবারও সচল করে ফেলে। কর্পোরেট সিমে আঙ্গুলের ছাপ বাধ্যতামূলক ॥ এদিকে অপরাধমূলক কর্মকা- এড়াতে কর্পোরেট সিম উত্তোলন, প্রতিস্থাপন, হস্তান্তর এবং নিষ্ক্রিয়করণের ক্ষেত্রে অনুমোদিত ব্যক্তির আঙ্গুলের ছাপ বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বুধবার বিটিআরসির সিস্টেম এ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সিদ্দিকী স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত নির্দেশনা মোবাইল অপারেটরদের প্রধানদের কাছে পাঠানো হয়েছে। বিদ্যমান কর্পোরেট সিমগুলোর ক্ষেত্রে এ নির্দেশনা তিন মাসের মধ্যে পালন করতে বলেছে বিটিআরসি। এ সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান, গণমাধ্যমের খবর এবং বিটিআরসির নিজস্ব পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে গ্রাহক নিবন্ধন কার্যক্রম প্রচলন পরবর্তী সময়ে ব্যক্তিগত গ্রাহক পর্যায়ে সিম নিবন্ধন বিষয়ক জালিয়াতি ও প্রতারণা প্রায় বন্ধ হয়ে গেলেও কর্পোরেট গ্রাহকদের ক্ষেত্রে প্রতারণার মাধ্যমে সিম নিবন্ধন, প্রতিস্থাপন এবং এ সব অযাচিত সিম বিভিন্ন অবৈধ কার্যক্রমে ব্যবহার করা হচ্ছে। কালোবাজারে বিভিন্ন নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে ইস্যুকৃত এ সব সিম উচ্চমূল্যে জঙ্গী, চাঁদাবাজ, অপহরণকারী, সন্ত্রাসীদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। যার কারণে প্রায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এ ধরনের অযাচিত সিম ব্যবহারকারীদের সঠিকভাবে শনাক্ত করতে পারে না। এর ফলে বিভিন্ন অপরাধের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে আরও বলা হয়- এ সব সিম ভিওআইপি প্রযুক্তি ব্যবহার করে অবৈধ কল টার্মিনেশন করার কাজেও ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে সরকার এ খাত থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হতে বঞ্চিত হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনায় অসাধু রিটেইলার, ডিস্ট্রিবিউটরের পাশাপাশি মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধির সরাসরি সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।
×