ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচীতে ছিলেন না শীর্ষ নেতারা

প্রকাশিত: ১০:৫৩, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচীতে ছিলেন না শীর্ষ নেতারা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট ডাকাতি হয়েছে অভিযোগ করে এর প্রতিবাদে কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচী পালন করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বুধবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিকেল ৩টা থেকে এক ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচী পালন করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তবে এ কর্মসূচীতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন, মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য কাদের সিদ্দিকী ও মাহমুদুর রহমান মান্না উপস্থিত ছিলেন না। কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচীতে প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের রাতে অর্থাৎ ২৯ ডিসেম্বর রাতেই নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে। তাই আমরা নির্বাচন বাতিল চেয়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন দাবি করেছি। এর মাধ্যমে মানুষের ভোটাধিকারকে ফিরিয়ে দিতে হবে। অবিলম্বে ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচন বাতিল করে নতুন নির্বাচন দেয়ার দাবি জানিয়ে মঈন খান বলেন, দেশের মানুষ কখনই কারও অন্যায় মেনে নেয়নি, নেবেও না। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে বন্দী করে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল সরকার, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। ইনশাআল্লাহ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনব। মঈন খান বলেন, দেশের পুলিশ, বিচার বিভাগ থেকে শুরু করে সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। মেগা উন্নয়নের নামে তারা মেগা দুর্নীতি করছে। এই হলো বর্তমান সরকারের উন্নয়নের নমুনা। এটাই একটা স্বৈরাচারী সরকারের চরিত্র। ড. মঈন খান বলেন, ভোট দখলের পর সরকার দেশের রাজনৈতিক সঙ্কটকে আরও দীর্ঘায়িত করেছে। এভাবে তো গণতান্ত্রিক অধিকারের সঙ্কট নিরসন হবে না। অথচ এজন্য কিন্তু দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেনি। সরকারকে একদিন জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচীতে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, আর প্রতিবাদ নয়, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ করা হবে। এ জন্য মাঠের আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। ঐক্যফ্রন্ট ছিল, আছে এবং থাকবে। রব বলেন, লাখ লাখ নেতাকর্মীর নামে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে খালেদা জিয়াাসহ সবার মুক্তি দিতে হবে। তিনি বলেন, ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের নামে প্রহসন ও গণতন্ত্র হত্যা এবং মানুষ নিহত-আহত করা হয়েছে। সন্তান প্রসবের আগের রাতেই হত্যা করা হয়েছে। মানে ৩০ নয়, ২৯ ডিসেম্বর রাতেই ভোট ডাকাতি করা হয়েছে। এর পরও উৎসব চলছে। রিজভী বলেন, দেশের সব প্রতিষ্ঠান এখন দল ও ব্যক্তির অধীনে নেয়া হয়েছে। রাষ্ট্র আজ ধ্বংসের মুখোমুখি। সব লুট হয়ে যাচ্ছে। যে দেশের প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনিয়ম করে সে দেশের স্বাধীনতার ভবিষ্যত থাকে না। তাই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। ৩০ ডিসেম্বর ভোট ডাকাতির সব তথ্য উদ্ঘাটন করা হবে। গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, এ সরকার নির্লজ্জ। বিশ্বের কোথাও এ ধরনের সরকার আর নেই। এ সরকার ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারকে ছাড়িয়ে গেছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি এক কান কাটা গেছিল। এবার দুই কান কাটা গেছে। তারা নোবেল পাক। সুব্রত চৌধুরী বলেন, সরকার রোহিঙ্গা ডেকে আনল কিন্তু তাদের ফেরত পাঠানোর মুরদ নেই। তারা ৩০ ডিসেম্বর গণতন্ত্রকে লাশ বানিয়ে তার ওপর দাঁড়িয়ে নর্তন-কীর্তন করছে। তাদের মনে অনেক জ্বালা আর মুখে কাষ্ঠ হাসি। এদের আমলে বিচার বিভাগ, ভোটাধিকার সব কিছু অর্থহীন। নিপীড়িতদের কান্নায় আকাশ ভারি হয়ে উঠেছে। ওই কান্নায় সরকারের পতন হবে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ জাফরউল্লাহ চৌধুরী বলেন, দেশের অবস্থা মর্মান্তিক। ৩০ ডিসেম্বর বিনা জানাজায় দেশের মানুষের ভোটাধিকারকে কবর দেয়া হয়েছে। এখন চলছে পুরস্কার প্রদানের উৎসব। অপেক্ষা করেন সামনে প্রশাসন ও পুলিশের রঙ্গ-লীলা দেখার জন্য। বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ঢাকা মহানগরের সমন্বয়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচীতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিএনপি নেতা কাজী আবুল বাশার, আবদুস সালাম আজাদ, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, হাবিবুল ইসলাম হাবীব, এম এ আউয়াল খান, শামীমুর রহমান শামীম, শিরিন সুলতানা, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, গণফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ, নাগরিক ঐক্যের নেতা শহিদুল্লাহ কায়সার, গণদলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী প্রমুখ।
×