ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ

দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ সময়োচিত

প্রকাশিত: ১০:০০, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ সময়োচিত

নতুন সরকারের যাত্রা শুরুর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। দুর্নীতির মূল উৎপাটনে ইতোমধ্যেই তৎপরতাও শুরু হয়ে গেছে। তবে দুর্নীতির মাত্রা যে পর্যায়ে পৌঁছেছে তাতে দুর্নীতিকে একেবারেই উচ্ছেদ দুরূহ বটে। তবু প্রধানমন্ত্রীর এই বিশেষ উপলব্ধি ও উদ্যোগকে স্বাগত জানাতেই হয়। এই উদ্যোগে আমরা আশায় বুক বাঁধতে পারি। জাতির ওপর জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসা দুর্নীতিকে যদি এ মুহূর্তে আঘাত করা না যায়, তবে আমাদের ভবিষ্যত হয়ে উঠবে খুবই ভয়াবহ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন সরকারে মন্ত্রিসভায় চমক এনেছেন মূলত দুর্নীতিকে লাগাম টানার উদ্দেশ্যেই। অবশ্য এর মানে এটা নয় যে- আগের মন্ত্রীরা ছিলেন দুর্নীতি প্রশ্রয়দানকারী। আগের মন্ত্রিসভাও সফল ছিল। আর সেজন্যই প্রধানমন্ত্রী দেশটাকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যেতে পেরেছেন। কিন্তু এবারের লড়াইয়ে প্রধানমন্ত্রী তারুণ্যের ঝড়তোলা গতি দেখতে চান। সে কারণেই তারুণ্যভরা একটি মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন তিনি। আর প্রবীণরা হবেন এ তারুণ্যের চালিকাশক্তি। অর্থাৎ নতুন সরকারের নতুন যুদ্ধে থাকবে নবীণ-প্রবীণের দারুণ সমন্বয়। নতুন সরকারে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। নতুন অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পরপরই দেশের অর্থব্যবস্থায় গতিশীলতা আনয়নে ফিনান্সিয়াল সেক্টরের দিকে জোর নজর দিয়েছেন। বিগত সরকারে পরিকল্পনামন্ত্রী থাকাকালীন তিনি এই সেক্টরে যে সীমাবদ্ধতাগুলো দেখেছেন, সেগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য দায়িত্ব নেয়ার প্রথম থেকেই কাজ শুরু করেছেন। তার তৎপরতায় এরই মধ্যে ঋণখেলাপী ও দুর্নীতিবাজরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। নতুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও বর্তমান গবর্নর ফজলে কবিরের সক্রিয় তৎপরতায় আশাবাদী হয়ে উঠছেন সৎ ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ। সরকারী-বেসরকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুর্নীতির যে ডালপালা বিস্তার করছিল এবং ঋণখেলাপীদের দৌরাত্ম্য দিন দিন যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছিল, পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্বে থেকে মুস্তফা কামাল তা খুব কাছ থেকেই দেখছিলেন। দেখছিলেন আর্থিক খাতে অব্যবস্থাপনা এবং অব্যবস্থাপনার কারণে পর্যাপ্ত দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ না হওয়ার ফলে অর্থনৈতিক গতিশীলতা হ্রাস। অনেক প্রকল্পের কাজ গতিশীলতা হারাচ্ছিল, অনেক প্রকল্প স্থবির হয়ে পড়ছিল। প্রকল্পের দীর্ঘসূত্রতার কারণে নির্ধারিত কাজের ব্যয় বেড়ে যাচ্ছিল। ওই সব কারণে তখন পরিকল্পনামন্ত্রী হিসেবে মুস্তফা কামাল সামর্থ্যরে সবটুকু দেয়ার পরও কাক্সিক্ষত ফল পাননি। এবার তিনি নিজেই দায়িত্বে। তাই আমরা আশাবাদী হতে চাই। কারণ, অর্থমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজকর্মে ও চিন্তা-ভাবনায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মিল থাকলে সরকারের গৃহীত উন্নয়ন কর্মকা-ের গতিশীলতা বাড়ে। প্রধানমন্ত্রী হয়তো অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কাজের সুসমন্বয়ই ঘটাতে চেয়েছেন। কারণ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানেন, সরকারের এই দুই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কাজের সুসমন্বয় ঘটলেই উন্নয়ন কর্মকা- প্রত্যাশিত পর্যায়ে বিকশিত হতে থাকবে এবং দেশ উন্নয়নের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে থাকবে। ঋণখেলাপীরা এখন দেশের আরেকটি আপদ। কিভাবে ব্যাংকের টাকা পকেটে পুড়ে ঋণখেলাপী হওয়া যায় তার যেন একটা প্রতিযোগিতা চলছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক পরিদর্শন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ব্যাংক খাত থেকে বৃহৎ অঙ্কের ঋণ নেয়া শতাধিক গ্রহীতার হদিস মিলছে না। নামে বেনামে ঋণ নিয়ে ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করে তারা গা-ঢাকা দিয়েছে। অনেকে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে। এসব ঋণগ্রহীতাকে নিয়ে বিপাকে পড়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো। একদিকে তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, অন্যদিকে এসব ঋণগ্রহীতার মর্টগেজ দেয়া কাগজপত্রও ভুয়া। এই প্রতারক ঋণগ্রহীতারা ব্যাংক খাত থেকে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে। এমন প্রতারণার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারী উভয় খাতের কিছু ব্যাংক পরিচালক। তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অসৎ কর্মকর্তাদেরও যোগসাজশ থাকতে পারে বলে মনে করে বাংলাদেশ ব্যাংক। আবার আরেক তথ্যে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে ঋণ জালিয়াতির এক অভিনব পদ্ধতি হচ্ছে একটি কোম্পানির সব ধরনের কাগজপত্র সঠিকভাবে উপস্থাপন করে ঋণ নেয়া। এই ঋণ নেয়ার সময় ওই কোম্পানির বিপরীতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে অনুমোদন অতিরিক্ত অর্থ তুলে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এমনকি পুরোপুরি ভুতুড়ে এ্যাকাউন্ট তৈরি করে কোটি কোটি টাকা ঋণ দেয়া হচ্ছে। ঋণ জালিয়াতির আরেকটি পদ্ধতি এখন এসএমই। এখাতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ জোর দেয়ার কারণে কর্মকর্তারা ভুয়া মর্টগেজে ঋণ প্রদান করছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়াই জনতা ব্যাংক কয়েক হাজার কোটি টাকা এসএমই ঋণ দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে বিষয়টি ধরা পড়লে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ৪১৮ কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক আটকও করে। ব্যাংক খাতের খেলাপী ঋণ কমিয়ে আনা এবং অনিয়ম ও দুর্নীতি রোধে নতুন অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশ ব্যাংক এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে ১৭ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে কোন ঋণগ্রহীতা খেলাপী হওয়ার পর আদালতে রিট করতে চাইলে তাকে নিজ ঋণের কমপক্ষে ৫০ শতাংশ পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া খেলাপী ঋণ আদায় এবং এখাতে অনিয়ম-দুর্নীতি ঠেকাতে একটি লিগ্যাল এ্যাকশন টিম গঠনের নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ তদারকি ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করার নির্দেশনাও দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এসব খেলাপী অনিয়ম রোধে ব্যাংক ঋণের বিপরীতে সম্পদের নিরাপত্তার জন্য জোর দিতে বলেছেন নতুন অর্থমন্ত্রী। পাশাপাশি ঋণ গ্রহণকারীকেও কঠোর নজরদারিতে রাখতে বলেছেন। ব্যাংকে জমা দেয়া সব ধরনের কাগজপত্রের সঠিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার নির্দেশনাও দিয়েছেন। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল করপোরেট গ্যারান্টির নামে ব্যাংকিং খাতে যে প্রতারণা চলছে, তার মূলোৎপাটন করবেন বলে জানিয়েছেন। এক ব্যাংকের পরিচালক অন্য ব্যাংক থেকে করপোরেট ঋণ গ্রহণের যে সংস্কৃতি চালু হয়েছে তাও পুরোপুরি বন্ধ করবেন বলে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন। কারণ, এক ব্যাংকের পরিচালক অন্য ব্যাংক থেকে যে করপোরেট ঋণ গ্রহণ করেন তাতে থাকে না কোন নিরাপত্তা গ্যারান্টি, দেয়া হয় না ঋণের বিপরীতে জমি, বাড়ি কিংবা অন্য কোন গ্যারান্টি। যার কারণে ভুয়া মানুষের নামে ব্যাংক ঋণ বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে খেলাপীর পরিমাণও। আদালতে মামলা গড়ালেও তা স্থগিত করে প্রভাবশালীরা এ সুবিধা নিয়ে থাকেন। এতে করে খেলাপীর পরিমাণ আরও বাড়তে থাকে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঋণখেলাপীদের প্রতি ইঙ্গিত করে নতুন অর্থমন্ত্রী বলেছেন, খেলাপীরা আদালতের আশ্রয় নিয়ে সব কিছু থামিয়ে রাখে, যে কারণে ঋণ আদায় হয় না। আবার কেউ কেউ পালিয়ে যায় বিদেশে। এতে সত্যিকারের বিনিয়োগকারীরা ঋণ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হন। দেশে বর্তমানে খেলাপী ঋণের পরিমাণ দেড় লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে, যা আদায় হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এর মধ্যে আবার ৪৫ হাজার কোটি টাকা অবলোপন করা হয়েছে, অর্থাৎ পাঁচ বছরেও আদায় না হওয়ায় এসব মন্দ ঋণ ব্যাংকের মূল হিসাব থেকে বাদ দিয়ে আলাদা খাতায় নেয়া হয়েছে। এর সবই দেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে ভয়াবহ দুঃসংবাদ বয়ে আনছে। এসব জালিয়াতি থেকে জাতিকে মুক্তি দিতে না পারলে আমাদের উন্নয়ন সহসাই মুখথুবড়ে পড়বে। উন্নয়নকে টেকসই করতে এসব দুর্নীতির লাগাম টানতেই হবে। আইনি নানা ফাঁক-ফোকরের মাধ্যমে খেলাপীরা পার পেয়ে যাওয়ায় দিন দিন ঋণখেলাপী, ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ ও ঋণ আত্মসাতের ঘটনা বেড়েছে। এসব ঋণখেলাপীর বিরুদ্ধে মামলা হয়, কিন্তু কারও কাছ থেকে ঋণ বা আত্মসাতের টাকা ফেরত পাওয়া আর হয় না। শোনা যায়, ব্যাংক থেকে ভেজাল সম্পত্তির বিপরীতে ঋণ জোগাড় করে দেয়ার জন্য প্রভাবশালী দালাল-কোম্পানি পর্যন্ত আছে। তাদের কাজই হলো দুই নম্বরী সম্পত্তির ডকুমেন্টস তৈরি করে দেয়া। এটা একটা ব্যবসা; বেশ বড় ব্যবসা। একশ্রেণীর ব্যবসায়ী ওঁৎ পেতে থাকে কিভাবে দুই নম্বরী জামানত দিয়ে ব্যাংক থেকে লোন নেয়া যায় এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বিপদে ফেলা যায়। দিন দিন এ ধরনের বাজে লোকের সংখ্যা বাড়ছে। তারা দুই নম্বরী সম্পত্তি বন্ধক দিয়ে ব্যাংক থেকে লোন নিচ্ছে, নেয়ার জন্য সব সময় উদ্যোগ নিচ্ছে, প্রভাব খাটাচ্ছে। সাধারণভাবে দেখা যায়, যেসব ঋণের বিপরীতে পর্যাপ্ত সিকিউরিটি বা বন্ধকী সম্পত্তি বা মালামাল আছে সেসব ঋণ সাধারণত খেলাপী ঋণে পরিণত হয় না। যেসব ঋণের বিপরীতে বন্ধকী সম্পত্তি কণ্টকাকীর্ণ, সেই ঋণের টাকা ব্যাংকে ফেরত আসে না বললেই চলে। বন্ধকীর ওই সম্পদ নিয়ে গ্রাহকরা আদৌ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত নয়। কারণ, এই সম্পত্তি বিক্রি হলে তার কোন ক্ষতি নেই। প্রথমত মামলা হবে। অল্প কিছু টাকা খরচ করলেই উচ্চতর আদালতে মামলার বিরুদ্ধে রিট করা যাবে। উচ্চতর আদালতে গেলেই সাধারণভাবে প্রটেকশন পান গ্রাহকরা। বিগত সময়ে এমনও দেখা গেছে, ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি, ঋণ কেলেঙ্কারি, জালিয়াতির নতুন নতুন ঘটনা ঘটেছে। এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলেও অর্থ উদ্ধার হয়নি। মামলায় গ্রেফতার, সাময়িক বরখাস্ত কিংবা দোষী কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত হলেও ব্যাংকের টাকা ফেরত আসেনি। আদালতের রায়ে আত্মসাত হওয়া অর্থ ফেরত পাওয়া না গেলে সম্পদ বাজেয়াফত করারও নির্দেশ থাকে। অধিকাংশ মামলায় দেখা যায়, আত্মসাতকৃত অর্থ ফেরত না দিলে সাজা খাটেন অপরাধী কর্মকর্তা। সম্পদ বাজেয়াফত করার নির্দেশ থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার নিজের নামের সম্পদ খুঁজে পাওয়া যায় না। যেটুকু পাওয়া যায়, তা আত্মসাতকৃত অর্থের তুলনায় নগণ্য। সে কারণে লোভী কর্মকর্তারা টাকা মেরে দিয়ে গ্রেফতার এবং নির্ধারিত কিছুদিন হাজতবাসের মধ্য দিয়ে রেহাই পেয়ে যায়। টাকা আত্মসাতের এমন অনেক ঘটনা রয়েছে যেসব ঘটনায় মামলা হয়েছে, বরখাস্ত হয়েছে, জেল হয়েছে বা সাজা হয়েছে; কিন্তু টাকা পাওয়া যায়নি। এ ধরনের ঘটনা উন্নত বিশ্বে বিরল। নতুন অর্থমন্ত্রী ফিনান্সিয়াল সেক্টরের পাশাপাশি নজর বাড়িয়েছেন পুঁজিবাজারের দিকেও। পরিকল্পনামন্ত্রী থেকে এবার অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সকল ফিনান্সিয়াল সেক্টরকে ঢেলে সাজানোর ঘোষণা দিয়েছেন। এতে করে ঋণখেলাপী ও দুর্নীতিবাজরা আতঙ্কিত হলেও খুশি দেশের সৎ ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ। তাছাড়া দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতির আলোকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল নজর বাড়িয়েছেন অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি দমনের দিকেও। কারণ সব মন্ত্রণালয়ের অর্থের সংস্থান যেহেতু অর্থ মন্ত্রণালয়কে করতে হয়, সেজন্য অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের অর্থখাত সংশ্লিষ্ট বিষয়েও বিশেষ নজর রাখতে হয় অর্থ মন্ত্রণালয়কে। আশার কথা হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চতুর্থ মেয়াদে দায়িত্ব নেয়ার প্রথম দিন থেকেই ‘দুর্নীতিকে কিছুতেই বরদাশত করা হবে না’- জানিয়ে আসছেন। তিনি দৃঢ় প্রত্যয়ের সঙ্গে বলেছেন, দুর্নীতির কালো ব্যাধি তিনি এবার দূর করবেনই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক সেক্টরে দুর্নীতি নির্মূলের যে স্বপ্ন দেখছেন তা একবারেই সময়োচিত। চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রথম মাস থেকেই শেখ হাসিনা সর্বস্তরে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য দুর্নীতি দমনে সোচ্চার হয়েছেন। এ কাজে দুর্নীতি দমন কমিশনকে এবার বেশ সক্রিয় দেখা যাচ্ছে। দুদককেও প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতি দমনের জিরো টলারেন্স নীতির মন্ত্রকে যথার্থ করে তুলতে হবে। আমরা কাঁধে চেপে বসা দুর্নীতির আবর্ত থেকে মুক্তি পেতে চাই। লেখক : শিক্ষাবিদ ও রাজনীতি বিশ্লেষক
×