ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নিউজিল্যান্ডে ওয়ানডে জেতার আশা মুশফিকের

প্রকাশিত: ১১:৩৯, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

নিউজিল্যান্ডে ওয়ানডে জেতার আশা মুশফিকের

মোঃ মামুন রশীদ ॥ মাত্র একদিন পরই নিউজিল্যান্ডের উদ্দেশে কয়েকজন ক্রিকেটার বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি নেপিয়ারে শুরু হবে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০ আসর নিয়ে ব্যস্ততার কারণে ওয়ানডে দলের সব ক্রিকেটার একসঙ্গে যেতে পারছেন না। বুধবার প্রথম ধাপে যে কয়েকজন ক্রিকেটার যাবেন তার মধ্যে মুশফিকুর রহীম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুস্তাফিজুর রহমান, লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজ অন্যতম। সবার আগে বিপিএল শেষ হয়ে যায় রিয়াদের খুলনা টাইটান্স ও মিরাজ-মুস্তাফিজের রাজশাহী কিংসের। তারাই প্রথম ধাপে নিউজিল্যান্ড যাবেন। অতীতে যে কয়বার নিউজিল্যান্ড সফর করেছে বাংলাদেশ দল, সেটার স্মৃতি বেশ দুঃসহ বেদনার। কিন্তু মুশফিক আশা প্রকাশ করলেন এবার নিউজিল্যান্ডে গিয়ে ওয়ানডে জিতবে বাংলাদেশ। তবে উপমহাদেশের অন্য দলগুলোর মতোই বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে সফরটা। তবে সফরে বাংলাদেশ দলের নৈপুণ্য যেমনই হোক সেটা আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য ভাল প্রস্তুতি হবে বলে দাবি মুশফিকের। ২০০১-০২ মৌসুম থেকে সবশেষ ২০১৭-১৮, এই ১৭ বছরে নিউজিল্যান্ড সফরে দুঃখের চাকায় পিষ্ট হয়েছে বাংলাদেশ দল। কোন ফরমেটেই দ্বিপাক্ষিক সিরিজগুলোয় স্বাগতিকদের হারাতে পারেনি। ২০০৭ সালের নিউজিল্যান্ড সফরে মোহাম্মদ আশরাফুলের অধিনায়কত্বে প্রথমবারের মতো তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলে বাংলাদেশ ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল। এরপর ২০১০ সালে সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে একই ভাগ্য বরণ করতে হয়। ২০১৬-১৭ সালের সিরিজে মাশরাফি বিন মতুর্জার অধীনে খেলা দলটিরও ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। অর্থাৎ এ তিনবারই ওয়ানডে সিরিজে শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে। টেস্ট সিরিজেও ফিরতে হয়েছে শূন্য হাতে। ওয়ানডে ও টেস্টে মাঝে মাঝে লড়াই করলেও টি২০ ক্রিকেটে আরও বাজে পরিস্থিতি ছিল। এর মূল কারণ নিউজিল্যান্ডের বিরূপ পরিবেশ, পরিস্থিতি। ঠা-া আবহাওয়ার পাশাপাশি তীব্র বাতাসের দাপট যেমন আছে তেমনি উইকেটগুলো বেশ গতিময় ও বাউন্সি। বর্তমানে অবশ্য সেখানে গ্রীষ্মকাল, কিন্তু তাপমাত্রা ১৪-২৫ ডিগ্রী সেলিসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য এমন উইকেট ও পরিবেশে ত্রাস হয়ে উঠতে পারেন স্বাগতিক দলের ট্রেন্ট বোল্ট, টিম সাউদি, কলিন ডি গ্যান্ডহোম ও ম্যাট হেনরিদের মতো গতি তারকারা। যারা অতীতেও বেশ সমস্যায় ফেলেছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। তবে এরপরও এবার বেশ আশাবাদী মুশফিক, ‘নিউজিল্যান্ড চ্যালেঞ্জ অনেক কঠিন। ওয়ানডে ফরমেটে ভারত জিতে গেছে কিন্তু তারা ভাল লড়াই করেছে। আমার বিশ্বাস আছে আমাদের যেই দল যাবে তারাও ভাল করবে।’ বুধবারই প্রথম ধাপে ওয়ানডে দলের কয়েকজন ক্রিকেটার যাচ্ছেন। প্রথম ওয়ানডের আগে তারা বেশ কয়েকদিন সুযোগ পাবেন পরিবেশ বুঝে ওঠার। এ বিষয়ে মুশফিক আরও বলেন, ‘জেতার সামর্থ্য আছে তো অবশ্যই। আপনি নিশ্চয় খেয়াল করলে দেখবেন যে, আমরা সর্বশেষ যখন সেখানে গিয়েছিলাম তখন কিন্তু আমরা দুইটা ওয়ানডেতে জেতার খুব কাছে গিয়ে হেরে গিয়েছিলাম। কারণ নেলসনে যে ওয়ানডে বা ক্রাইস্টচার্চে যেটা ছিল, আমরা যদি আরও একটু ভাল খেলতে পারতাম তাহলে কেউ জানে না কী হতো। আমার মনে হয় এটা বিশ্বকাপের আগে আমাদের জন্য খুব ভাল একটা প্রস্তুতি হবে। এখানে কিছু হাইস্কোরিং ম্যাচ হতে পারে। সেদিক থেকে আমি মনে করি এটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে।’ টানা এক মাস ধরে বিপিএল খেলে ক্রিকেটাররা বেশ পরিশ্রান্ত। এর মধ্যেই আবার নিউজিল্যান্ড সফরে যেতে হবে। শুধু ওয়ানডে সিরিজ খেলার জন্য সেভাবে প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগই পায়নি বাংলাদেশ দল। নিউজিল্যান্ডে গিয়েও খুব বেশি সময় পাবেন না ক্রিকেটাররা। এ বিষয়ে মুশফিক বলেন, ‘একটা সপ্তাহ যদি বিরতি পাওয়া যায়, তাহলে মোটামুটি ভাল হয়। সাত দিন আছে। মানিয়ে নিতে হবে। কারণ আমরা পেশাদার ক্রিকেটার। ম্যাচের মধ্যে থাকলে আত্মবিশ্বাস ভাল থাকে। এর চেয়ে ভাল কোন প্রস্তুতি হতে পারে না।’ কিন্তু এবার বিপিএলে বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানরা তেমন সুবিধা করতে পারেননি। বোলাররা ভাল করলেও শুধু মুশফিক, তামিম ব্যতীত বাকিদের ব্যাটিং নৈপুণ্য ছিল খুবই বাজে। এ বিষয়ে মুশফিক বলেন, ‘সার্বিকভাবে বিপিএল খুব ভাল হচ্ছে। অনেক প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ হচ্ছে। অনেক বিদেশী ক্রিকেটার এসেছে, খেলেছে। তাদের সঙ্গে আমরা অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করতে পেরেছি এবং অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। সবাই কিন্তু চেষ্টা করে। দলগুলোর টপঅর্ডারগুলোতে দেশী ক্রিকেটার কমই। টপঅর্ডারে খেলতে পারলে রান করা সহজ হয়। তারপরও স্থানীয়দের অনেক ভাল সুযোগ ছিল। ভাল ইনিংস খেলার ও বড় করার। তামিম ও সাকিব এখনও আছে, আমার মনে হয় তারা আরও ভাল করবে। এখন প্রস্তুতির কিছু নেই। যেই কয়দিন সময় আছে একটু বিশ্রাম নিতে হবে।’
×