স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বিভিন্ন কোম্পানির নকল ওষুধ ও তৈরির সরঞ্জামসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে আব্দুস সোবাহান, নাইমুর রহমান ওরফে তুষার, রিয়াজুল ইসলাম ওরফে মৃদুল, নারগিস বেগম ও ওয়াহিদ। দীর্ঘদিন ধরে তারা ইনসুলিন ও প্যাথেডিনের মতো সংবেদনশীল ওষুধের হুবহু নকল মোড়ক ও বোতল তৈরি করে ভেতরে ভেজাল ওষুধ দিয়ে বাজারজাত করছে।
রবিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোঃ আবদুল বাতেন এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ভেজাল ওষুধ তৈরি করে বিভিন্ন নামীদামী ওষুধ কোম্পানির মোড়ক ব্যবহার করে প্রতারণা করে আসছিল। ওষুধের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে তারা সিল মেরে মেয়াদ বর্ধিত করত। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবদুল বাতেন বলেন, নকল ও ভেজাল ওষুধ থেকে বাঁচতে ওষুধ কেনার আগে ভাল মানের ফার্মেসি থেকে ক্রয় করা উচিত। এ চক্রটি সাধারণত নরমাল ও অখ্যাত ফার্মেসিগুলোতে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ওষুধ সরবরাহ করে থাকে। এরা সাধারণত নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাসস্থল টার্গেট করে ভেজাল ওষুধ সরবরাহ করে। আব্দুল বাতেন জানান, গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে প্রিন্টার, মেশিন, রঙের কৌটা, তৈরির ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, মূল্য, ব্যাচ নং ইত্যাদি লেখাসহ বিভিন্ন প্রকার সিল, ৫ মিলি. পানির বোতল ৩০০ পিস, সেক্স পাওয়ার ক্যাপসুল ৮৫ হাজার পিস, এ্যাক্ট্রাপিড ১০ মিলি. ৬৫ পিস ইনসুলিন, মিক্সচার্ড ৩০ মিলি. ৫ পিস ইনসুলিন, জি প্যাথেডিন ইনজেকশনের খালি কাঁচের বোতল ১৬২৫টি, একটি এয়ার হটগান, জি প্যাথেডিন ইনজেকশনের প্লাস্টিকের ট্রে (ছোট) ১ বস্তা, গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালস লি. লেখা জি প্যাথেডিন ইনজেকশনের ফয়েল পেপার (স্টিকার) ১ রোল, প্রিমিয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লি. এর এ্যালার্ট লেখা ওষুধের ফয়েল পেপার ইত্যাদি জব্দ করা হয়েছে। অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই চক্রটি নকল ওষুধ তৈরি করে আসছিল। শিশুদের দিয়ে অভিনব কৌশলে তারা এসব বহন করত। বিভিন্ন অখ্যাত ফার্মেসির মাধ্যমে মার্কেটিং করে নকল ওষুধগুলো নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে জনসাধারণকে প্রতারিত করে আসছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত সোবাহান দীর্ঘদিন একাধিক কোম্পানির ওষুধ নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে নকল ওষুধ, লেভেল ইত্যাদি তৈরির কথা স্বীকার করেছে। এছাড়া, মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ বিভিন্নভাবে সংগ্রহ করে দেশীয় পদ্ধতিতে ওষুধের গায়ে মেয়াদ, ব্যাচ নং, মূল্য ইত্যাদি নতুনভাবে সংযোজন করে পুনরায় তা বাজারজাত করে আসছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন।