ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কারখানা সম্প্রসারণের সুফল পাচ্ছে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল

প্রকাশিত: ১০:২৪, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

 কারখানা সম্প্রসারণের সুফল পাচ্ছে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিএমআরইয়ের মাধ্যমে কারখানা সম্প্রসারণ ও প্রিন্টিং ইউনিট চালুর সুফল পাচ্ছে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল লিমিটেড। গেল বছরের ধারাবাহিকতায় চলতি বছরেও বিক্রি ও মুনাফায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে কোম্পানিটির। এর মধ্যে চলতি ২০১৮-১৯ হিসাব বছরের অর্ধবার্ষিকে (জুলাই-ডিসেম্বর) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৪ শতাংশ বিক্রয় প্রবৃদ্ধি হয়েছে তাদের। আর এ সময়ে কর-পরবর্তী নিট মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৬৫ শতাংশ। কোম্পানিটির কর্মকর্তারা বলছেন, গেল হিসাব বছরে কারখানায় বিএমআরই বাস্তবায়নের কারণে কোম্পানির সক্ষমতা বেড়েছে। পাশাপাশি নতুন প্রিন্টিং ইউনিট চালু হওয়ায় এ খাত থেকেও আয় বেড়েছে কোম্পানিটির। ফলে ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরে কোম্পানির বিক্রি ও মুনাফায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি হিসাব বছরের প্রথম ৬ মাসেও কোম্পানির বিক্রি ও মুনাফা প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। কারখানার সক্ষমতা বাড়াতে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪ লাখ ৭২ হাজার ইউরো ব্যয়ে নতুন যন্ত্রপাতি আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে কোম্পানিটির পর্ষদ। তাছাড়া সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীতে প্যারামাউন্ট বিট্র্যাক এনার্জি লিমিটেডের আওতায় এইচএসডিভিত্তিক ২০০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুতকেন্দ্রের কাজ চলছে। এতে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ৪৯ শতাংশ মালিকানা রয়েছে। বিদ্যুতকেন্দ্রটির নির্মাণ শেষে উৎপাদনে গেলে এ খাত থেকেও আরও মুনাফা আসবে। ফলে ভবিষ্যতে কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা আরও লাভবান হবেন। প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের অর্ধবার্ষিক সময়ের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির বিক্রি হয়েছে ২৭৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১৯৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৩১ কোটি ৬ লাখ টাকা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। চলতি হিসাব বছরের অর্ধবার্ষিকীতে কোম্পানিটির কর পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ১৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ২০ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৭৩ পয়সা। এদিকে চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের বিক্রি হয়েছে ১৩৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১০৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির পরিচালন মুনাফা হয়েছে ১৪ কোটি টাকা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা, যা এর আগের হিসাব বছরে ছিল ৫ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৬১ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৩৭ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর এর শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২০ টাকা ৩১ পয়সা। ৩০ জুন ২০১৮ সমাপ্ত হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের ৭ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের পর্ষদ। সমাপ্ত হিসাব বছরে এর শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ১৫ পয়সা ও শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ২০ টাকা ৭৮ পয়সা। এর আগে ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৭ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের ৫ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি। সে বছর এর ইপিএস ছিল ১ টাকা ৯২ পয়সা। সর্বশেষ রেটিং অনুসারে দীর্ঘমেয়াদে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ঋণমান ‘ডাবল এ’ ও স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি-ওয়ান’। ডিএসইতে সর্বশেষ শনিবার শেয়ারটির দর ১ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ বা ৭০ পয়সা কমে দাঁড়ায় ৬৮ টাকা ৯০ পয়সায়। এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন দর ছিল ৩৯ টাকা ৯০ পয়সা ও সর্বোচ্চ ৭৩ টাকা ৯০ পয়সা। ২০১৩ সালে তালিকাভুক্ত প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের অনুমোদিত মূলধন ২০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ১৩৫ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা। রিজার্ভ ৭৯ কোটি ৩০ লাখ ২০ হাজার টাকা। মোট শেয়ার ১৩ কোটি ৫৪ লাখ ৯৯ হাজার ৮২৯; যার ৬০ দশমিক ৭৫ শতাংশ কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ৯ দশমিক ৯৩ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে রয়েছে বাকি ২৯ দশমিক ৩২ শতাংশ শেয়ার। সর্বশেষ নিরীক্ষিত ইপিএস ও বাজারদরের ভিত্তিতে শেয়ারটির মূল্য-আয় অনুপাত বা পিই রেশিও ৩৩ দশমিক ৪১। অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যা ২৮ দশমিক ৫৪।
×