ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আফগানিস্তান থেকে দ্রুত সেনা প্রত্যাহার নয়

প্রকাশিত: ১১:৪৭, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

আফগানিস্তান থেকে দ্রুত সেনা প্রত্যাহার নয়

যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানের মধ্যে শান্তি আলোচনায় অগ্রগতি হওয়ায় আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সম্ভবনা তৈরি হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররা মনে করে তড়িঘড়ি সব সেনা ঘরে ফিরিয়ে নিলে তালেবান পুনরায় শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। দেশ নতুন করে অশান্ত হয়ে উঠতে পারে। -এপি মার্কিন প্রতিনিধি ও তালেবানের মধ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা আলোচনার অগ্রগতি হয়েছে বলে ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে। উদ্দেশ্য আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু করা। ওবামা প্রশাসনের আমলে কাবুলে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রায়ান ক্রোকার বলেন, সিদ্ধান্তটি মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারে একটি চমক সৃষ্টি করা। যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘতম যুদ্ধে সমঝোতা চুক্তিটি ট্রাম্পের জন্য উভয় সঙ্কট সৃষ্টি করেছে। তিনি প্রায়শই ঘোষণা করেন, দীর্ঘ সময় ধরে বিদেশে অবস্থান করা সেনাবাহিনীকে আর মোতায়েন রাখতে চান না। সামরিক সংঘাতগুলো শেষ করতে চান। ডিসেম্বর মাসে ইসলামিক স্টেট (আইএস) পরাজিত হয়েছে তাই আর মার্কিন সেনাদের সিরিয়ায় না রাখার ঘোষণা দেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছিলেন, দেশটিতে আর দুই হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রাখার দরকার নেই। তার এই ঘোষণা নিয়ে বৈদেশিক নীতি সম্পর্কিত উপদেষ্টাদের আপত্তি রয়েছে। আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের চরম মূল্য দিতে হচ্ছে। সেখানকার সংঘাতে এখনও পর্যন্ত ২ হাজার ৪শ’ আমেরিকান সৈন্যকে জীবন দিতে হয়েছে। করদাতাদের শত শত ডলার ব্যয় হয়েছে। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার জবাবে মার্কিন বাহিনী আল কায়েদা ও তালেবানদের উৎখাত করতে আফগানিস্তানে হামলা চালিয়েছিল। সিআইএ পরিচালক সম্প্রতি সতর্ক করেছেন যে, আফগানিস্তান আবারও সন্ত্রাসীদের আশ্রয়স্থল হতে পারে। তবে এখন রিপাবলিকান অনুসারীরাও উদ্বিগ্ন যে, শান্তি আলোচনার অগ্রগতির প্রতিবেদনগুলো ট্রাম্পকে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারে উৎসাহিত করবে। যদিও এর আগে ওই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও পরিস্থিতির উন্নতি নিশ্চিত করতে হবে। যা যুক্তরাষ্ট্রকে প্রথমেই নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করতে হবে। তালেবানরা এখন দেশটির প্রায় অর্ধেক এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রায় প্রতিদিনই তারা কোন না কোন হামলা চালাচ্ছে। কংগ্রেসের শীর্ষ রিপাবলিকান ও সিনেট সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা মিচ ম্যাককনেল জানান, তিনি প্রেসিডেন্টকে সতর্কতার সঙ্গে দেশটি থেকে সেনা প্রত্যাহার করার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, এটি আমাদের নিজেদের স্বাচ্ছন্দ্য ও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ফিরে যাওয়াকে প্রলুব্ধ করলেও এখনও অনেক কাজ বাকি আছে। ওবামা প্রশাসনের আমলে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে বিশেষ প্রতিনিধি জেমস ডোবিনস বলেন, ট্রাম্প ২০১৭ সালে গৃহীত শর্তভিত্তিক কৌশল পরিত্যাগ করেছে বলে মনে হয়। আফগানিস্তানে সৈন্যদের ভবিষ্যত যে কারও অনুমেয়। আমি মনে করি না তার সঙ্গের কেউ তার আচরণের পূর্বাভাস দিতে পারে। হোয়াইট হাউস প্রেস সেক্রেটারি সারাহ স্যান্ডার্স বলেন, প্রশাসনের অগ্রাধিকার হচ্ছে আফগানিস্তানে যুদ্ধ শেষ করা এবং এটিও নিশ্চিত করা হচ্ছে যে, আফগানিস্তানকে আর কখনই সন্ত্রাসবাদের ঘাঁটি হতে দেয়া হবে না। আফগান কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন যে, আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিত ট্রাম্পের স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে।
×