ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ক্লাসরুমে ফিরে যান

প্রকাশিত: ১১:৪৭, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

ক্লাসরুমে ফিরে যান

বিশ্বজুড়ে কোথায় সম্ভাব্য হুমকি রয়েছে তা নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগসহ মার্কিন অন্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সম্প্রতি সরকারকে যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, ইরান চুক্তি লঙ্ঘন করে পরমাণু অস্ত্র বানাচ্ছে না। এতে চরমভাবে রুষ্ট হয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার এক টুইট বার্তায় গোয়েন্দা প্রধানদের উদ্দেশ করে ট্রাম্প বলেন, ‘তারা চরম আনাড়ি নিষ্ক্রিয়’। Ñবিবিসি ও সিএনএন মার্কিন গোয়েন্দারা ইরান সম্পর্কে যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে তাকে ভুল মন্তব্য করে ট্রাম্প বলেন, ইরানের রকেট পরীক্ষা প্রমাণ করে তারা অস্ত্র তৈরির দ্বারপ্রান্তে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রধানদের লক্ষ্য করে ট্রাম্প বলেন, ‘আপনারা আবার স্কুলে ফিরে যান’। ইরান এবং উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে সম্ভাব্য হুমকি নিয়ে গোয়েন্দা রিপোর্টে যে পর্যবেক্ষণ দেয়া হয়েছে তা প্রেসিডেন্টের বক্তব্য থেকে ভিন্ন। গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে পরমাণু অস্ত্রের হুমকি এখনও বিদ্যমান, কারণ পিয়ংইয়ং পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচী ত্যাগে রাজি নয়। ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র থেকে বিরত রাখতে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার উদ্যোগে ২০১৫ সালে যে পরমাণু চুক্তি হয়েছিল ট্রাম্প গত বছর তা থেকে একতরফাভাবে তার দেশকে প্রত্যাহার করে নেন। ইরান ও ছয়টি পশ্চিমা দেশের মধ্যে জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব এ্যাকশনের (জেসিপিওএ) নামের চুক্তিটি হয়েছিল। তিনি একই সঙ্গে ইরানের ওপর কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এখন ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচী নিয়ে তারই গোয়েন্দাদের বক্তব্য প্রেসিডেন্টকে যে অস্বস্তিতে ফেলেছে তাতে সন্দেহ নেই। সে কারণেই তিনি গেয়েন্দা প্রধানদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন। ট্রাম্পের এই প্রতিক্রিয়ার পাল্টা জবাব দিয়েছেন সিআইএ’র সাবেক প্রধান জন ব্রেনান। তিনি বলেন, গোয়েন্দা রিপোর্টকে এভাবে প্রত্যাখ্যান করে প্রেসিডেন্ট প্রমাণ করছেন যে তিনি ‘বুদ্ধিতে দেউলিয়া হয়ে পড়েছেন’। গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়, ট্রাম্প প্রশাসন যতই আশা করুক, উত্তর কোরিয়া পরমাণু অস্ত্র সমূলে বিনাশ করবে না। আরও বলা হয়েছে, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে না। কিন্তু চীন এবং রাশিয়ার সাইবার হুমকি দিন দিনই উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে। দুটো দেশই ২০২০ সালে পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করতে পারে। মঙ্গলবার মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালক ড্যান কোটস ও অন্যান্য গোয়েন্দা প্রধানরা দেশটির সিনেট গোয়েন্দা কমিটিতে রিপোর্টটি পেশ করেন। এতে বলা হয়, ‘উত্তর কোরিয়া তাদের অস্ত্রভা-ার পুরোপুরি নির্মূল করবে না। তারা অস্ত্র সক্ষমতা ধরে রেখে আলোচনার মাধ্যমে কেবল আংশিকভাবে কিছু অস্ত্র ধ্বংস করার পদক্ষেপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে ছাড় পাওয়ার চেষ্টা করবে। কারণ পরমাণু অস্ত্র থাকাটা উত্তর কোরিয়ার টিকে থাকার জন্য জরুরী।’ ট্রাম্প এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন গত জুনে সিঙ্গাপুরে বৈঠক করেছিলেন। ওই বৈঠকে কোরিয়া উপদ্বীপকে অস্ত্রমুক্ত করতে রাজি হয়েছিলেন কিম। ফলে বৈঠকের পর উত্তর কোরিয়ার পরমাণু হুমকির অবসান ঘটে বলে ট্রাম্প ওই সময় দাবি করেছিলেন। ট্রাম্প ও উন পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে একটি চুক্তি করেছিলেন এবং সে পথে হাঁটায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধও হয়েছিলেন। কিন্তু কিভাবে তা সম্পন্ন করা হবে সে প্রক্রিয়া নিয়ে দুইজনের মধ্যে কোন সমঝোতা হয়নি।
×