ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়তে ১৪ দল শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকবে ॥ নাসিম

প্রকাশিত: ১১:১১, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়তে ১৪ দল শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকবে ॥ নাসিম

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, অসাম্প্রদায়িক, সন্ত্রাস-জঙ্গী-রাজকার ও শোষণমুক্ত দেশ গড়তে কেন্দ্রীয় ১৪ দল সব সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। এটা নিয়ে বিভ্রান্তির কিছু নেই। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ৯৭তম ঐতিহাসিক সলঙ্গা দিবস উপলক্ষে গণআজাদী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে ১৪ দল নিয়ে অনেক কিছু ভাবছেন যে, ১৪ দল থাকবে কি না? আমি বলতে চাই ১৪ দল একটি আদর্শিক জোট। অসাম্প্রদায়িক শোষণমুক্ত দেশ গড়তে ১৪ দল গঠিত হয়েছিল। শুধু ক্ষমতার জন্য ১৪ দল গঠিত হয়নি। ১৪ দলীয় জোটের ঐক্য অটুট রয়েছে।’ মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ১৪ দল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের দেশ গড়ার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাবে। ১৪ দলীয় জোটের নেতাদের চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। তিনি বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে সুষ্ঠু হয়েছে। জনগণ তাদের চূড়ান্তভাবে পরাজিত করেছে। সারাবিশ্ব এ নির্বাচনকে স্বাগত জানিয়েছে। কিন্তু পরাজিতরা নির্বাচন নিয়ে নানা অযৌক্তিক প্রশ্ন তুলছে। তার মানে তাদের চক্রান্ত নতুন করে শুরু হয়ে গেছে। এ চক্রান্ত রুখে দিতে ১৪ দল প্রয়োজনে মাঠে নামবে। তিনি বলেন, সরকার ও বিরোধী দল উভয়কেই হতে হবে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির। এ লক্ষ্যেই সংসদে ও বাইরে বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকবে ১৪ দলীয় জোটের শরিকরা। সরকার পরিচালনায় কোন ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে তা ধরিয়ে দিয়ে সতর্ক করবে ১৪ দল। পরাজিত অশুভ শক্তি কোন চক্রান্ত করলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তা রুখে দেয়া। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনে বিশাল বিজয় হলেও স্বাধীনতা বিরোধীদের চক্রান্ত এখনও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এ চক্রান্ত মোকাবেলা করেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। দেশের অগ্রযাত্রা কেউ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। আসন্ন উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র বলেন, আসন্ন উপজেলা নির্বাচন যেহেতু স্থানীয় নির্বাচন তাই এখানে ১৪ দল জোটবদ্ধভাবে অংশ নেবে না। প্রত্যেকে নিজ নিজ দলীয়ভাবে অংশ নেবে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু হয় সেজন্য কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে তিনি নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানান। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, নতুন প্রজন্মের অনেকেই সলঙ্গা বিদ্রোহের ইতিহাস জানে না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আমার বাবা কথা দিয়েছিলেন সলঙ্গাকে থানা ঘোষণা করবেন। পরবর্তীতে আমি যখন ১৯৯৬ সালে মন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করি তখন সলঙ্গাকে থানা হিসেবে ঘোষণা করি। তিনি আরও বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাবো সলঙ্গাকে যেন উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং এর ঐতিহ্য স্মরণীয় করে রাখতে ঢাকার ভেতরে যেন একটি স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়। জাসদ সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে রাজনীতির মাঠে ঘোরাফেরা করছে। বিএনপি একাত্তর ও ২১ আগস্টের খুনীদের পক্ষে কথা বলছে। যারা খুনীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় ও তাদের পক্ষে কথা বলে, তারা আসলে গণতন্ত্রের ময়ূর না, তারা স্বৈরতন্ত্রের কাক। তিনি বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রের ময়ূরদের ঠোকরাচ্ছে। এ জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার পরও তারা নির্বাচনের ফলাফল বানচালের জন্য নতুন চক্রান্ত করছে।’ জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে এদেশের অনেকের সক্রিয় ভূমিকা ছিল। ওই সময়ের ত্যাগী নেতাদের ভূমিকা এবং বর্তমান নেতাদের তুলনামূলক পার্থক্য তুলে ধরে তিনি বলেন, এখন রাজনীতিবিদরা দুর্নীতি ও প্রাচুর্য্যরে প্রতি ঝুঁকছে। স্বৈরাচারী মনোভাবের লোক তৈরি হচ্ছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর নীতি ঘোষণা করেছেন। আশা করি তিনি এই অবস্থানে থাকবেন এবং দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। গণআজাদী লীগের সভাপতি এসকে শিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রেসিডিয়াম সদস্য এজাজ আহমেদ মুক্তা, ন্যাপ নেতা ইসমাইল হোসেন, গণআজাদী লীগের প্রধান উপদেষ্টা সৈয়দ শামসুল আলম, গণআজাদী লীগের সিনিয়র সভাপতি ডক্টর নাসির উদ্দিন খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
×