ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর নয় বীর যোদ্ধাকে সম্মাননা প্রদান

প্রকাশিত: ১১:০১, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে  মিত্রবাহিনীর নয় বীর যোদ্ধাকে সম্মাননা প্রদান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বাঙালীর বন্ধু হিসেবে তারাও লড়েছিলেন যুদ্ধের ময়দানে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভ্রাতৃপ্রতিম রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নিজেদের প্রাণবাজি রেখেছিলেন। আটচল্লিশ বছর পর তারা আবার বাংলাদেশে এলেন। ১৯৭১-এ যখন এসেছেন তখন দেখেছিলেন এক বিধ্বংসী বাংলাদেশ। আর এবার দেখলেন সমৃদ্ধশালী এক বাংলাদেশে। মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া ভারতীয় মিত্রবাহিনীর এমন নয় বীর যোদ্ধা তাদের পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশে এসেছেন। এই মহান সেনানীদের আগমন উপলক্ষে তাদের অবদানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রদান করা হলো সম্মাননা। মিত্রবাহিনীর এই বীর যোদ্ধারা হলেন- মেজর জেনারেল যোশি মালাভেলান এভিএসএম, মেজর জেনারেল এস এন শাহ, ব্রিগেডিয়ার প্রাভিন কুমার, কর্নেল পি কে চ্যাটার্জি, কর্নেল আরপি গ্রোভার ভিএসএম, কর্নেল পি এম নায়েক, মেজর বিজয় কুমার, কর্নেল ডি এন দাস, কর্নেল অমর সিংহ। তাদের সম্মাননা জানিয়েছে ইন্দো-বাংলা ফ্রেন্ডশিপ ফোরাম। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে এ সম্মননা প্রদান করা হয়। মিত্রবাহিনীর যোদ্ধাদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। অতিথিদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য দেন ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলাম, মেজর ওয়াকার হাসান বীর প্রতীক ও সাংবাদিক আবেদ খান। শভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন স্বাধীনতা পদকজয়ী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির। এই আয়োজনে সংগঠনের সভাপতি ঝলক সোম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ হালদারসহ নানা অঙ্গনের বিশিষ্টজন উপস্থিত ছিলেন। যোশি মালাভেলান এভিএসএম তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, আমরা ১৯৭১ সালে ত্রিপুরা দিয়ে আখাউড়া হয়ে এসেছিলাম। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দিতাম। ৪৮ বছর পর বাংলাদেশে ঢুকার পর পথে পথে সেই সময়ের স্মৃতি হাতড়ে ফিরেছি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছিলাম প্রথম। সেখানে স্কুলের মেয়েরা, মুক্তিযোদ্ধাদের আবেগ আমদের ছুঁয়ে গেছে। কর্নেল পি কে চ্যাটার্জি বলেন, ৪৮ বছর আগে যখন এসেছিলাম তখন রাস্তায় নদীতে লাশের স্তুপ দেখেছি। সেই সব স্মৃতি ভুলবার নয়। আজ বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে গেলাম। সেখানে তার সেই গর্জন আরেকবার শুনেছি রেকর্ডারে। সবাই কেঁদেছি। বাংলাদেশের মানুষ আমদের এখনও যে মনে রেখেছে, সম্মানিত করছে এটা আমাদের অভিভূত করেছে। প্রয়াত সেনানী ডিএন দাসের স্ত্রী পুষ্পা এস দাস বলেন, আমার স্বামীর শুধু একটা কথা মনে আছে। একদিন অনেক রাতে ও লুঙ্গি পরে বাসায় এলো। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম তুমি কি মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে ছিলে। ও উত্তর দিল হ্যাঁ। ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলাম বলেন, আমাদের ১ কোটি মানুষ ভারতের আতিথেয়তা পেয়েছিল। ট্রেনিং দিয়েছিল। আমরা খালি হাতে গিয়েছিলাম। আপনারা সাহস যুগিয়েছিলেন। সেসব কথা ভুলবার নয়। আমি আশা করব ইন্দো-বাংলা ফ্রেন্ডশিপ ফোরামের এই কার্যক্রম চলমান থাকবে।
×