ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

উবাচ

প্রকাশিত: ১১:০০, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

উবাচ

হাল্কাভাবে বলব না স্টাফ রিপোর্টার ॥ এখন আর হাল্কাভাবে কোন কিছু বলতে নারাজ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। রাজনীতির মাঠে জেনে বুঝে কথা বলা ও পা ফেলতে চান তিনি। হুট হাট করে কোন কিছু বলে বিব্রত হতে চান না। এটাই সত্যি। হয়ত বদলে গেছেন বঙ্গবন্ধু সরকারের সাবেক মন্ত্রী কামাল হোসেন। প্রশ্ন হলো হঠাৎ করেই তিনি এত জানা বোঝার প্রয়োজন অনুভব করলেন কেন। দলের কারও কারও মত হলো, নির্বাচনে ভরাডুবির পর দেশের বাইরে চলে যান কামাল হোসেন। ১২ দিন পর দেশে ফেরেন তিনি। তাই একটু বুঝে শোনেই রাজনীতি নিয়ে কথা বলতে চান এই সংবিধান বিশেষজ্ঞ। তাছাড়া তিনি আসার আগেই বিএনপি নেতা হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্ব কামাল হোসেনের হাত থেকে নেয়ার কথা বলেন। তার বক্তব্য হলো, ঐক্যফ্রন্টের প্রয়োজন ছিল না। তাছাড়া এই জোটের নেতৃত্ব কামাল হোসেনের হাত থেকে সরিয়ে নিতে হবে। বিএনপির হাতে এর নেতৃত্ব দেয়ারও দাবি জানান সাবেক মন্ত্রী হাফিজ। দেশে ফিরেই এমন খবরে মাথা গরম কামাল হোসেনের। তাই কোন কিছু না বোঝেই হয়ত কথা বলতে সম্মত নন তিনি। বুধবার গণফোরামের ৫ম জাতীয় কাউন্সিলের প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয় রাজধানীর মতিঝিলে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। সেখানে কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমুখি হন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, সংসদ নিয়ে এখনই প্রশ্ন তুলতে চাই না। হালকাভাবে কিছু বলব না। সংসদে কী হচ্ছে না হচ্ছে খোঁজ-খবর রাখছি। এজেন্ডা নিয়ে পরে সংসদ বিষয়ে মন্তব্য করব। বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়েছে। এ অধিবেশন নিয়ে তার অবজারভেশন কী? জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন। গণফোরামের নির্বাচিতরা শপথ নেবেন কি না? জানতে চাইলে ড. কামাল হোসেন বলেন, সেগুলোর বিষয় এখন না, প্রেস কনফারেন্স করে পরে জানানো হবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ভেঙ্গে যাবে বলা হচ্ছে- এ জোট থাকবে কি না? তিনি উত্তর দেন, ‘ঐক্যফ্রন্ট ১০০ বার থাকবে।’ বিএনপির এক নেতা বলেছেন, ঐক্যফ্রন্ট থাকবে তবে আপনাকে সরে যেতে হবে। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী? ড. কামাল বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানে উত্তর দেব না, অন্য অনুষ্ঠানে দেব’। সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা কামাল বলেন, ‘যারা স্বৈরাচার, যারা জনগণের ক্ষমতাকে সহ্য করতে চায় না, আমাদের মধ্যে তারা বিভেদ সৃষ্টি করতে চায়’। বিব্রত মেনন ! স্টাফ রিপোর্টার ॥ আওয়ামী লীগের সঙ্গে একসঙ্গে নির্বাচন করলেও সংসদে ভিন্ন ভূমিকা নিতে বাধ্য হওয়ায় খেদ প্রকাশ করেছেন মহাজোট শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। দশম জাতীয় সংসদে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। আশা ছিল একাদশ সংসদ নির্বাচনের পরও মন্ত্রিত্ব পাবেন। কিন্তু বিধি বামই বলতে হয়। ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে কারও ডাক আসেনি মন্ত্রী হওয়ার। আগে তো মন্ত্রী হিসেবে বিএনপির সমালোচনা করেছেন। প্রশংসা করেছেন সরকারের। কিন্তু এখন বিরোধী দল হিসেবে নিয়ম অনুযায়ী সংসদে সরকারের সমালোচনায় অবতীর্ণ হতে হবে। তাই শুরুতেই কিছুটা বিব্রত অবস্থায় মেনন। তিনি অনুযোগ করেছেন, এবার একাদশ সংসদে তাদের ভূমিকার বিষয়ে কোন আলোচনাও হয়নি জোটে। দেড় যুগ আগে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে ১৪ দল গঠনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সঙ্গে গাঁটছাড়া বাঁধে ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদসহ কয়েকটি বাম দল। ২০০৮ সালের নির্বাচন তারা একসঙ্গে করে, নির্বাচিত হয়ে শেখ হাসিনা সরকার গঠনের সময় মন্ত্রী করেন সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়াকে। পরে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুকেও নেন মন্ত্রিসভায়। ওই মেয়াদের শেষ সময়ে শেখ হাসিনার তিন মাসের ‘নির্বাচনকালীন সরকারে’ স্থান পান মেনন। পরে ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে শেখ হাসিনা জোটের সবাইকে নিয়ে সরকার গঠন করেন, মেননও তাতে জায়গা পান। এবার একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ে ভোটে এলেও তারা মাত্র আটটি আসনে জয়ী হওয়ার পর আওয়ামী লীগ তাদের জোটসঙ্গী সব দলকেই বিরোধী দলে ঠেলে দিয়েছে। মহাজোট শরিক জাতীয় পার্টি মন্ত্রিত্ব বাদ দিয়ে আগের মতো প্রধান বিরোধী দলের আসনে বসতে গাইগুঁই করে রাজি হলেও ১৪ দলীয় জোটের শরিকরা স্পষ্ট আপত্তি জানিয়ে আসছিল। বুধবার একাদশ সংসদের অধিবেশন শুরুর দিন নবনির্বাচিত স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকারকে ধন্যবাদ দিতে দাঁড়িয়ে ওই প্রসঙ্গ তোলেন মেনন। তিনি বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আমরা আনন্দিত। তবে, এই আনন্দের সঙ্গে সঙ্গে আমরা একটু বিব্রতও বটে। আজকে ঢোকার মুখেও (সংসদে প্রবেশের সময়) আমাকে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। জানতে চেয়েছে সংসদে আপনাদের অবস্থান কী হবে? এই সংসদে সরকারী দল যেমনি মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের হবে, তেমনি বিরোধী দলও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের হবে। কিন্তু বিষয়টিকে কেন্দ্র করে শেষ পর্যন্ত যেটা দাঁড়িয়ে গেছে.. আমাদের বলা হচ্ছে আপনারা কেন বিরোধী দলে গিয়ে বসছেন না।’ মেনন বলেন, সংসদে তাদের অবস্থান নিয়ে জোটে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি নিয়ে তো আমাদের কেউ জিজ্ঞাসা করবে, প্রশ্ন করবে বা আলোচনা করবে, কিন্তু তা হয়নি। মনে হয় এই সিদ্ধান্ত, বলা হচ্ছে সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে। এই অবস্থায় সংসদে নিজেদের অবস্থান কী হবে- তা তুলে ধরে এই বাম নেতা বলেন, ‘আমরা সরকারের সকল উন্নয়ন কাজের প্রশংসা করব। সঙ্গে সঙ্গে ত্রুটি-বিচ্যুতি যা থাকবে, সেটার যদি বিরোধিতার প্রয়োজন হয়, তা অবশ্যই করব। স্বৈরতন্ত্রের কাক! স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে বিএনপিকে নিয়ে (প্রথম পৃষ্ঠার পর) সমালোচনার শেষ নেই। সরকারী দল থেকে শুরু করে দেশের প্রধান বিরোধী দলসহ অন্য নেতারাও সব সময় দলটিকে নিয়ে সমালেচনায় মুখর। বিভিন্ন ইস্যুতে বিএনপিকে তুলোধুনো করা হয়। বিএনপি গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে রাজনীতির মাঠে ঘোরাফেরা করছে বলে সর্বশেষ মন্তব্য করেছেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, ‘বিএনপি একাত্তর ও ২১ আগস্টের খুনীদের পক্ষে কথা বলছে। যারা খুনীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় ও তাদের পক্ষে কথা বলে, তারা আসলে গণতন্ত্রের ময়ূর না, তারা স্বৈরতন্ত্রের কাক। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ঐতিহাসিক সলঙ্গা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ইনু অভিযোগ করেন, ‘বিএনপি গণতন্ত্রের ময়ূরদের ঠোকরাচ্ছে। এজন্য সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার পরও তারা নির্বাচনের ফলাফল বানচালের জন্য নতুন চক্রান্ত করছে। তিনি বিএনপি-জামায়াতকে জাতির কাছে মাফ চেয়ে, তওবা করে রাজনীতি করার আহ্বান জানান।
×