ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় সাধারণের কৌতূহল

জাতীয় নির্বাচনের রেশ না ফুরোতেই দুয়ারে আরও দুই নির্বাচন

প্রকাশিত: ১১:৫৫, ৩১ জানুয়ারি ২০১৯

জাতীয় নির্বাচনের রেশ না ফুরোতেই দুয়ারে আরও দুই নির্বাচন

সমুদ্র হক, বগুড়া ॥ একাদশ সাধারণ নির্বাচনের রেশ না ফুরোতেই আপাতত দুয়ারে দুটি নির্বাচন টোকা দিয়েছে। একটি সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন। আরেকটি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। লোকমুখে বলাবলি- এরপর পৌর নির্বাচন। তারপর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনী আবহাওয়া আভাস দিচ্ছে হয়তো পরো বছর মাঠপর্যায়ে ইলেকশন আমেজ থাকতে পারে। বগুড়ার প্রেক্ষাপটে ইলেকশনগুলো নিয়ে আওয়ামী লীগ অনেকটাই ফুরফুরে মেজাজে। বিএনপি ধন্ধের মধ্যে। ১৪ দলীয় জোটের দলগুলো আওয়ামী লীগের দিকে তাকিয়ে। নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামীর অবস্থা পথিকের পথ হরানোর মতো। উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি আছে। বিএনপিরও আছে। তবে বিএনপি তাকিয়ে আছে হাইকমান্ডের দিকে। আবার বগুড়া-৬ (সদর) আসনে বিএনপির বিজয়ী সংসদ সদস্য (এমপি) কেন্দ্রীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে বিএনপির বিজয়ী এমপি মোশাররফ হোসেন এখনও শপথ গ্রহণ করেননি। ৯০ দিনের মধ্যে শপথ গ্রহণ না করলে নিয়ামানুযায়ী আসন দুটি শূন্য হবে। তা হলে পরে এই দুই আসনে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে বিভিন্ন সূত্রে খোঁজখবর করে জানা যাচ্ছে, শেষপর্যন্ত বিএনপি হয়তো তাদের আসনগুলো রাখবে। তারপরও বিএনপি শপথ না নিলে এই দুই আসনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নেবে। উল্লেখ্য, একাদশ নির্বাচনে বগুড়ার ৭টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ দুইটি, বিএনপি দুইটি, জাতীয় পার্টি (জাপা) দুইটি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী একটিতে বিজয়ী হন। বগুড়ার দুই আসন নিয়ে বিএনপির বিজয়ী এমপিদের দোদুল্যমানতায় প্রচ্ছন্ন নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে। তবে তার আগে বগুড়া থেকে কে হতে যাচ্ছেন সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি এ নিয়ে সাধারণের মধ্যে কৌতূহল বেশি। এ পর্যন্ত বগুড়ার ১১ নারী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে নবীন ও প্রবীণ উভয়েই আছেন। প্রবীণরা তাদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দিয়েছেন। তরুণরা চাইছেন আধুনিক বাংলাদেশ নির্মাণে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে। প্রবীণদের মধ্যে রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য ডাঃ শামসুন্নাহার শেফালী জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা। তার স্বামী ডাঃ হেদায়েতুল ইসলাম (প্রয়াত) ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা। তার বাবা মোশাররফ হোসেন ম-ল (প্রয়াত) ছিলেন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির নেতা। ডাঃ শেফালী ছাত্রজীবন থেকেই প্রগতিশীল ধারার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থীর মধ্যে আছেন কামরুন্নাহার পুতুল, অধ্যক্ষ খাদিজা খাতুন। তারা দু’জনই বিভিন্ন মেয়াদে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ছিলেন। তারুণ্যের মধ্যে আছেন বেশ কয়েকজন। তারা হলেনÑ এ্যাডভোকেট জান্নাতুল ফেরদৌস রূপা, ডালিয়া নাসরিন রিক্তা, সুলতানা রাজিয়া, লাইজিন আরা লিমা, হাসনা খাতুন, সুরাইয়া নিগার সুলতানা, হেফাজত আরা মিরা, সুমনা রায়। এদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ এখন মাঠে। সাধারণ নির্বাচনের বিশাল বিজয় ধরে রাখতে তারা জনসংযোগ বাড়িয়েছে। ২০০৯ সালের উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বগুড়ার ১২ উপজেলার মধ্যে ৫টিতে বিজয়ী হয়েছিল। ২০১৪ সালের নির্বাচনে ৭টিতে বিএনপি ও ৫টিতে জামায়াতের প্রার্থীরা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন। জেলা আওয়ামী লীগের সূত্র জানান, গত পাঁচ বছরে চিত্র অনেকটা পাল্টেছে। এলাকার উন্নয়নে যারা বড় অবদান রাখবেন সাধারণ মানুষ তাদেরই নির্বাচিত করবে। ধুনট উপজেলা পরিষদের বর্তমান বিএনপি দলীয় চেয়ারম্যান এবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে না পারলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিতে পারেন। বিএনপি নেতা আখতার আলম সেলিম প্রস্তুতি নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের উপজলা সভাপতি টিআই নরুন্নবী তারিক ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই খোকন, মাসুদুল হক নির্বাচনে অংশ নিতে ওপর মহলে যোগাযোগ রাখছেন। আওয়ামী লীগ সমর্থক সাংবাদিক জিয়া শাহীন দৃঢ় প্রত্যয়ে জানিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। তার দাবি গোসাইবাড়ি ও ভান্ডারাবড়ি ইউনিয়নে তার সমর্থকরা তাকে এগিয়ে নেবে। বগুড়ার ১২ উপজেলার মধ্যে প্রতিটিতেই এবার আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতারা অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। বিএনপি যদিও সিদ্ধান্তহীনতার মধ্যে আছে তারপরও অনেক নেতা আশাবাদী শেষ পর্যন্ত বিএনপি দলীয় প্রতীকেই উপজেলা নির্বাচনে যাবে।
×