ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

৪ নবীন লেখক পেলেন কালি ও কলম পুরস্কার

প্রকাশিত: ১১:১১, ৩০ জানুয়ারি ২০১৯

৪ নবীন লেখক পেলেন কালি ও কলম পুরস্কার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অগ্রজদের পথরেখায় তরুণরাই এগিয়ে নেবে দেশের সাহিত্যচর্চাকে। নবীন লেখকের সাহিত্য সাধনায় বিকশিত হবে আগামী সাহিত্য ভুবন। এমন প্রত্যাশায় সাহিত্যচর্চায় গতিশীলতার প্রত্যয়ে ২০০৮ সাল সাহিত্য পত্রিকা কালি ও কলম প্রবর্তন করে তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার। মঙ্গলবার একাদশবারের মতো প্রদান করা হলো কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার। ২০১৮ সালে সাহিত্যচর্চায় বিশেষ ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ চার তরুণ লেখককে এ সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। এই নবীন লেখকরা হলেন কথাসাহিত্যে ‘যূথচারী আঁধারের গল্প’ গ্রন্থের জন্য নাহিদা নাহিদ ও ‘তিস্তা’ গ্রন্থের জন্য হারুন পাশা। প্রবন্ধ গবেষণা ও নাটক বিভাগে ‘হুমায়ূন আহমেদের চলচ্চিত্র : চিরায়ত রসবোধ’ গ্রন্থের জন্য শাহাদৎ রুমন এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা ও প্রবন্ধ বিভাগে ‘একাত্তরের রমজান : গণহত্যা ও নির্যাতন’ গ্রন্থের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন আরাফাত তানিম। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে চার লেখকের হাতে পুরস্কারের স্মারক ও অর্থমূল্য তুলে দেন অতিথিরা। পুরস্কারের অর্থমূল্য হিসেবে প্রত্যেক লেখককে এক লাখ টাকা করে প্রদান করা হয়। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কালি ও কলমের সম্পাদকম-লীর সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। সম্মানীয় অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট কবি ও গবেষক অধ্যাপক কায়সার হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন কথা সাহিত্যিক ও কবি আনিসুল হক। পুরস্কৃতদের অভিনন্দন জানান কালি ও কলমের প্রকাশক আবুল খায়ের। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন কালি ও কলম সম্পাদক আবুল হাসনাত। পুরস্কার গ্রহণের পর বিজয়ীরা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, এ পুরস্কার তাদের কাজের স্বীকৃতি। এই পুরস্কার বাড়িয়ে দিল সাহিত্যচর্চায় তাদের মননের স্পৃহাকে। পাশাপাশি সাহিত্য রচনায় তাদের মধ্যে নতুন করে দায়বোধ জাগ্রত হলো। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, পুরস্কার পাওয়ার জন্য কেউ লেখে না, এ কথা যেমন সত্য তেমনি পুরস্কারপ্রাপ্তিতে উৎসাহিত হয় লেখক। পুরস্কারের কারণে লেখকের দায়িত্ব বেড়ে যায়। এই বিবেচনাতেই পুরস্কারের প্রকৃত সার্থকতা। তিনি বলেন, তারুণ্যের একটা নিজস্ব শক্তি আছে। তারুণ্য নিজের পথ কেটে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। এ শক্তিকে সংবর্ধিত করা প্রয়োজন। এ বোধ থেকেই তরুণদের পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। আনিসুল হক বলেন, তরুণ লেখক ও প্রবীণ লেখক দুই জনেরই বেদনা অভিন্ন। প্রবীণ লেখক নতুন সৃষ্টি করতে গিয়ে যে যন্ত্রণা অনুভব করেন, নবীন লেখকও একই যন্ত্রণা অনুভব করেন। কালি ও কলমের পুরস্কারকে সাধুবাদ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, শিল্প মানেই ব্যর্থ হওয়া, শিল্পী মানেই ব্যর্থতার বশংবদ। বিজয়ী লেখকদের অভিনন্দন জানিয়ে অধ্যাপক কায়সার হক বলেন, এক অর্থে পুরস্কারপ্রাপ্তরা কেউই তরুণ নয়, পরিপক্ব। আধুনিক কালে কবি সাহিত্যিক ও পাঠকের মধ্যে দূরত্ব কমাতে সাহিত্য পুরস্কার দেয়া হয়ে থাকে যা প্রশংসনীয়। অনুষ্ঠানে বিজয়ী লেখকদের নাম ঘোষণা করেন অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ। শংসা বচন পাঠ করেন কবি মাহবুব সাদিক ও কথা সাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন। অনুষ্ঠানের শেষপর্বে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এতে প-িত তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদারের সরোদ বাদনের সঙ্গে হাসান আরিফের কবিতা আবৃত্তির যুগলবন্দী পরিবেশিত হয়। এ ছাড়াও আয়োজনের শুরুতেই দেখানো হয় বিগত বছরগুলোয় এ পুরস্কারের ওপর নির্মিত ভিডিওচিত্র। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী। তিন সদস্যের বিচারকম-লী উল্লিখিত চারজনকে তাদের সৃজনশীল ও মননশীল গ্রন্থের জন্য নির্বাচিত করেছেন। শিশু ও কিশোর বিভাগে কোন মানসম্মত গ্রন্থ জমা না পড়ায় এবার এ বিভাগে কোন পুরস্কার প্রদান করা হয়নি।
×