ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সনজীদা খাতুনের ‘নজরুল মানস’ গ্রন্থের প্রকাশনা

প্রকাশিত: ১১:০৭, ৩০ জানুয়ারি ২০১৯

সনজীদা খাতুনের ‘নজরুল মানস’ গ্রন্থের প্রকাশনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সঙ্গীত আর সন্্জীদা খাতুন যেন অপরের প্রতিশব্দ। সুরের সঙ্গে কাটিয়ে দিলেন দীর্ঘ একটা জীবন। সেই সার্থক জীবনে সুরকে অবলম্বন করে অসুরের বিরুদ্ধে লড়াই তাঁর। আর এই সঙ্গীতসাধকের সঙ্গে কবি নজরুল এবং তার গানের সম্পর্কটা অনেক বেশি আত্মিক। তার বাবা কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন নজরুলপ্রেমিক। তার বড়দি যোবায়দা মির্জা কবি কাজী নজরুল ইসলামের কাছে গানও শিখেছেন। এভাবে সন্জীদা খাতুনের জন্মের আগেই তাদের পরিবারের আত্মীয় ছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। সেই সুবাদে নজরুলকে ছেলেবেলার একটি বয়স পর্যন্ত দেখেছেন এবং নানাভাবে জেনেছেন। এবার প্রকাশিত হলো বহুমাত্রিক নজরুলের গান, কবিতা, গদ্যের বিশ্লেষণায় সন্জীদা খাতুন রচিত গ্রন্থ ‘নজরুল-মানস’। মঙ্গলবার কবি কাজী নজরুল ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সন্জীদা খাতুন রচিত ‘নজরুল-মানস’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠান হয়। সন্জীদা খাতুনের উপস্থিতিতে বইটি নিয়ে কথা বলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক ও ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বেগম আকতার কামাল। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন বইটির প্রকাশনা সংস্থা নবযুগ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী অশোক রায় নন্দী। প্রখ্যাত শিল্পী খায়রুল আনাম শাকিলের নজরুলসঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে শেষ হয় অনুষ্ঠান। অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, এই বইটির একটি চমৎকার অধ্যায় হলো সন্জীদা খাতুনের লেখায় তাদের পরিবার ও নজরুলের সম্পর্কের গভীরতা। কাজী মোতাহের হোসেনের বাসা ছিল তখন বর্ধমান হাউজে। সেখানে একটি কক্ষে তারা আড্ডা দিতেন। বাংলা একাডেমির মহাপরিরচালক থাকাকালীন সেখানে নজরুল স্মৃতিসংগ্রহ নিয়ে একটি কক্ষ রাখা হয়েছিল। কিন্তু গত কয়েক বছরে সেই কক্ষ বিলুপ্ত করা হয়েছে। আমি জেনে আনন্দিত যে বাংলা একাডেমির বর্তমান মহাপরিচালক সেই কক্ষটি আবার চালু করতে যাচ্ছেন। অনুভূতি প্রকাশে সন্জীদা খাতুন বলেন, বেগম আকতার কামাল নজরুলের উপন্যাস বিশেষ করে মৃত্যু ক্ষুধা নিয়ে লিখতে বলেছেন। আমি আগামীতে সেই বিষয়ে লিখব। অনেকেই নজরুলের সঙ্গীত, গীতি গান নিয়ে যে কথাগুলো বলা হয় এগুলো সঠিক নয়। সঙ্গীত বলতে একটু উঁচু দরের আর গান বা গীতি একটু নিচু কিছু- এটা আমার ধারণা নয়। আসলে সবই এক। আমাদের মনে অনেক সংস্কার জমে। আমি এই বইটির বিষয়ে দুজন মানুষকে ধন্যবাদ দিতে চাই। একজন পিয়াস মজিদ। যে আমার একটি লেখা দেখে নজরুলের ওপর বইটি করার কথা বলেন। আরেকজন বইটির প্রকাশক নবযুগ প্রকাশনীর অশোক রায় নন্দী। হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, বিচিত্রমাত্রিক নজরুল দেখা দিয়েছে সন্জীদা খাতুনের বইটিতে। নজরুল সম্পর্কে তার যে অভিনিবেশ অসাধারণ। সহজ-সরল প্রকাশে তিনি অনেক গভীরের কথা তুলে ধরেছেন। বইটি ইতিহাসের অন্তর্গত হবে। আকতার কামাল বলেন, পারিবারিভাবে নজরুলের সঙ্গে যা সন্জীদা খাতুন তুলে ধরেছেন সেটা ইতিহাসের অংশ এবং সুপাঠ্য। এখানে তিনি নজরুল বিষয়ক তথ্য ভাবনার সন্নিবেশ ঘটিয়েছেন। পুরো বইয়ের লেখায় এ লাবণ্যময়তা আছে। নজরুল মানস বইটিতে সন্জীদা খাতুনের লেখায় ‘সবার কবি নজরুল/পারিবারিক অভিজ্ঞতা’, আবেগ উচ্ছ্বসিত নজরুল, নজরুল সঙ্গীত, নজরুল কাব্যে আধুনিকতা: প্রেম ও নারী, রাক্ষুসী, যুগ সৃষ্টিকারী বাণী, গদ্যরচনায় নজরুল-মানস, নজরুল জীবনের শেষ অধ্যায়, পত্রাবলীতে কাজী নজরুল ইসলাম অধ্যায়গুলোতে বিভক্ত। ১১২ পৃৃষ্ঠার বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন ধ্রুব এষ। দাম রাখা হয়েছে ২২০ টাকা। আজিজুল ইসলামের বাঁশিসন্ধ্যা ॥ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওস্তাদ আজিজুল ইসলামের বাঁশির সুরে মুগ্ধ হলো শ্রোতারা। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ও একুশে পদকপ্রাপ্ত এই গুণী শিল্পী বাঁশির সুরে হামীর, চন্দ্রকোষ, মিশ্র খামবাজ ধূন, দরবারী কানাড়া এবং ঝিনঝটি ও ভাটিয়ালি রাগ পরিবেশন করেন। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে জাতীয় নাট্যশালার মিলনায়তনে তার একক বাঁশি সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়।
×