ফিরোজ মান্না ॥ বিশ্বজুড়েই দক্ষ কর্মীর চাহিদা রয়েছে। মন্ত্রণালয়ের প্রথম টার্গেট হবে দক্ষ কর্মী সৃষ্টি করা। এজন্য প্রশিক্ষণের মান বাড়াতে হবে। প্রতিটি জেলায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে দক্ষ কর্মী সৃষ্টি করতে পারলে উন্নত বিশ্বে কর্মী পাঠানো যাবে। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ভাষা শিক্ষাকে প্রাধান্য দিতে হবে। কারণ ভাষা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একজন কর্মী যদি সংশ্লিষ্ট দেশের ভাষা জানেন তাহলে তার কাজের মানও ভাল হবে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, কর্মীদের বিষয়ে কোন প্রকার অবহেলা না করার জন্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান। প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি করার জন্য নির্দেশ দেন। দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টিই বর্তমান সরকারের মূল লক্ষ্য। দক্ষ জনবল তৈরি হলেই চাহিদা ভিত্তিক বৈশ্বিক কর্মসংস্থান করা সম্ভব হবে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) কর্মকর্তাদের নিয়ে সম্প্রতি এক মতবিনিময় বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতির বিষয়ে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। আর দুর্নীতি দূর হলেই সুশাসন আপনা-আপনি চলে আসবে। নিজের উপর নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সবাইকে জনকল্যাণের মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। জনগণের সেবা ছাড়া সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সবচেয়ে বড় কাজ। এই কাজে কেউ কোন অবহেলা করলে তাকে শাস্তি পেতে হবে। জনশক্তি রফতানিতে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়-এ বিষয়টি সমাজের সব স্তরের মানুষ জানে। এই বদনাম ঘুচাতে সততার সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদেশে আমাদের মানুষগুলো অমানবিক পরিশ্রম করে টাকা উপার্জন করেন। তাদের সুরক্ষা দেয়া আমাদের প্রধান দায়িত্ব। তাদের বিষয়ে কোন প্রকার অবহেলা যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। বিশেষ করে বিমানবন্দরে কর্মীদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। কোন কর্মী যাতে হয়রানির শিকার না হন তার জন্য যা কিছু করণীয় তাই করতে হবে। কর্মীরা যাতে কোনভাবেই কোন পক্ষের মাধ্যমে হয়রানির শিকার না হন সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী জেনে বুঝেই আমাকে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি অতীতের কোন দায় নিতে চাই না। তবে এখন থেকে সব কিছুই চলবে স্বচ্ছতার মাধ্যমে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারী আর ব্যবসায়ী কারও কোন অনিয়ম পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে প্রথম দিন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের তিনি এ কথা বলেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নাম সুনাম দু’টিই রয়েছে। আমার ৩২ বছরের রাজনীতির জীবনে কোন কালিমা নেই। আশা করি বাকি জীবনটাও কালি ছাড়া চলে যেতে চাই। এজন্য সংবাদ মাধ্যমের সহযোগিতা লাগবে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদেরও সহযোগিতা তো থাকবেই। আমি শুনেছি বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসগুলো আমাদের কর্মীদের বিষয়ে খুব একটা কাজ করেন না। যাতে তারা কর্মীদের সুরক্ষার জন্য কাজ করেন এ জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। কর্মীদের সব ধরনের সুবিধা নিশ্চিত করতে সব পক্ষের সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে। বিদেশগামী কর্মীদের অভিবাসন ব্যয় কমানো হবে। এটা আমি বাইরে থেকেই শুনেছি-উচ্চ ব্যয়ে কর্মীদের বিদেশ যেতে হয়। স্বল্প খরচে যদি একজন কর্মী বিদেশ যেতে পারেন, তাহলে তিনি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভাল একটা টাকা জমাতে পারেন। বেশি খরচ দিয়ে বিদেশ গিয়ে কর্মীদের কোন লাভ হয় না। আমি শুনেছি, জনশক্তি ব্যবসায়ীদের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। আমি তাদের অনৈতিক কোন প্রভাবে প্রভাবিত হব না। প্রবাসী বাংলাদেশীদের কল্যাণ, নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করা হবে। নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টি করা হবে, মানবসম্পদ উন্নয়নে উন্নত প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা করা হবে।