ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্লে-অফ নিশ্চিত করল কুমিল্লা, রংপুর

প্রকাশিত: ১০:৫২, ৩০ জানুয়ারি ২০১৯

প্লে-অফ নিশ্চিত করল কুমিল্লা, রংপুর

মোঃ মামুন রশীদ ॥ একটি ম্যাচের ফলাফল অন্যরকম হলেই সমীকরণের ফাঁদ তৈরি হতো। কিন্তু রাজশাহী কিংসকে মঙ্গলবার রাতে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে জিততে দেয়নি শক্তিশালী রংপুর রাইডার্স। রাইলি রুশোর অর্ধশতকে রাজশাহীকে ৬ উইকেটে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল রংপুর। এর ফলে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই ১৪ পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফ খেলা নিশ্চিত করেছে তারা। তবে হারের পরেও সমান ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে থাকা রাজশাহীর ক্ষীণ সম্ভাবনা বেঁচে আছে। এর আগে একই ভেন্যুতে দিনের প্রথম ম্যাচে তামিম ইকবালের অর্ধশতকে বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে চিটাগং ভাইকিংসকে ৭ উইকেটে উড়িয়ে দিয়ে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সও। ১০ ম্যাচে তাদেরও পয়েন্ট ১৪, অবস্থান নেট রানরেটে পিছিয়ে থেকে দুই নম্বরে। উল্লেখ্য, অনেক আগেই লীগ পর্ব থেকে ছিটকে গেছে খুলনা টাইটান্স। টেবিলের পাঁচে থাকা রাজশাহী (১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট) ও ছয়ে থাকা সিলেট সিক্সার্সের (১০ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট) কোনভাবেই ১৪ পয়েন্ট পাওয়া সম্ভব নয়। তাই লীগ পর্ব শেষ হওয়ার আগেই রংপুর, কুমিল্লার নিশ্চিত হয়ে গেল কোয়ালিফায়ার পর্বে ওঠা। সন্ধ্যার ম্যাচটি রাজশাহীর জন্য অতীব জরুরী ছিল, প্লে-অফে ওঠার সম্ভাবনা উজ্জ্বল করতে জয়ের বিকল্প ছিল না। সেই ম্যাচে তারা টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামে। কিন্তু দলীয় ২৮ রানের মধ্যেই ওপেনার জনসন চার্লস (১২) ও মুমিনুল হক (৪) সাজঘরে ফিরে গেলে বিপদে পড়ে তারা। এরপর লরি ইভান্সের সঙ্গে সৌম্য সরকার ৩৪ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন। সৌম্য এদিনও বেশিদূর এগোতে পারেননি, ১৬ বলে ১৪ রান করার পর শহীদুল ইসলামের পেসে সাজঘরে ফেরেন। এরপর রংপুর বোলারদের দারুণ বোলিংয়ে কোন ব্যাটসম্যানই তেমন বড় ইনিংস খেলতে পারেননি, নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারিয়েছে রাজশাহী। বিশেষ করে ফরহাদ রেজার পেসে অসহায় হয়ে ওঠে রাজশাহীর ব্যাটসম্যানরা। লড়াই করে ইভান্স ৩১ বলে ৫ চারে সর্বোচ্চ ৩৫ এবং ফজলে রাব্বি ২৪ বলে ১৮ ও কাইস আহমেদ ২০ বলে ১ চার, ২ ছয়ে ২২ রান করেন। ৮ উইকেটে ১৪১ রানের সংগ্রহ পায় রাজশাহী। ফরহাদ ৩০ রানে নেন ৩টি, শহীদুল ২৮ রানে ও নাজমুল ইসলাম অপু ৩৯ রানে ২টি করে উইকেট নেন। ক্রিস গেইল, এ্যালেক্স হেলস, রাইলি রুশো আর এবি ডি ভিলিয়ার্সে ভয়ঙ্কর ব্যাটিং লাইনআপ রংপুরের জন্য এমন লক্ষ্য একেবারেই মামুলি। তবে জবাব দিতে নামার পর শুরুতে রংপুরকে চাপেই রেখেছিল রাজশাহীর বোলাররা। বিশেষ করে মেহেদি হাসান মিরাজের স্পিনে ক্রিস গেইল ১৪ বলে ১০ এবং কাইসের বলে হেলস ১৫ বলে ১৬ রান করে সাজঘরে ফিরলে লড়াইয়ের সম্ভাবনা জেগে ওঠে। কিন্তু এরপর তৃতীয় উইকেটে রুশো-ভিলিয়ার্স জুটি রাজশাহীর সব স্বপ্ন শেষ করে দেন। তারা ৭১ রানের জুটি গড়েন মাত্র ৩৫ বলে। রুশো ৪৩ বলে ৫ চার, ২ ছক্কায় ৫৫ রানে সাজঘরে ফেরেন। এ রানের ফলে চলতি আসরে ৫১৪ রান নিয়ে বিপিএলের এক আসরে সর্বাধিক রান করার রেকর্ড গড়েন রুশো। ভিলিয়ার্সও ২৭ বলে ১ চার, ৩ ছক্কায় ৩৭ রান করে আউট হন। কিন্তু ততক্ষণে জয়ের একেবারে কাছে চলে গেছে রংপুর। শেষ পর্যন্ত ৮ বল হাতে রেখেই ১৮.৪ ওভারে ৪ উইকেটে ১৪৫ রান তুলে ৬ উইকেটের বিজয় ছিনিয়ে নেয় তারা এবং শীর্ষে উঠে নিশ্চিত করে প্লে-অফ। এর আগে দিনের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক চিটাগংকে টানা তৃতীয় হারের স্বাদ উপহার দেয় কুমিল্লা। টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ১৯ ওভারে ৮ উইকেটে মাত্র ১১৬ রান তুলতে পেরেছিল চট্টগ্রাম। বৃষ্টির বাগড়ায় ম্যাচটি ১ ওভার করে কমিয়ে আনা হয়েছিল। ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদের ৩৫ বলে ৩৩ রানের পর আর কেউ ভাল করতে পারেননি। মাত্র ৭০ রানে ৭ উইকেট হারানোর পরেও আট নম্বরে নেমে মোসাদ্দেক হোসেনের ২৫ বলে ৩ চার, ৩ ছক্কায় করা অপরাজিত ৪৩ রানে এ পুঁজি পায় চিটাগং। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, ওয়াহাব রিয়াজ ও শহীদ আফ্রিদি ২টি করে উইকেট নেন। জবাব দিতে নেমে দলীয় ২৬ রানে ওপেনার এনামুল হক বিজয়ের (৮) উইকেট হারায় কুমিল্লা। এরপর তামিম ও শামসুর রহমান জুটি ৬৫ রান যোগ করে দলের জয় পাওয়াটাকে সহজ করে দেন। শামসুর ২২ বলে ৩ চার, ২ ছক্কায় ৩৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন। এরপর দ্রুতই ইমরুল কায়েসও (৮) আউট হয়ে যান। তবে তামিম ৫১ বলে ৪ চার, ২ ছক্কায় ৫৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন। ২০ বল হাতে রেখেই ১৬.৪ ওভারে ৩ উইকেটে ১১৭ রান তোলে তারা। চিটাগংয়ের হয়ে পেসার আবু জায়েদ রাহী ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। এই জয়ে ২ ম্যাচ হাতে রেখেই প্লে-অফে খেলা নিশ্চিত করে কুমিল্লা। ১০ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ১৪।
×