ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সিলোনার সহজ জয়

প্রকাশিত: ১২:০১, ২৯ জানুয়ারি ২০১৯

রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সিলোনার সহজ জয়

জাহিদুল আলম জয় ॥ দুই পরাশক্তি রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সিলোনা স্প্যানিশ লা লিগায় সহজ জয় পেয়েছে। রবিবার রাতে এ্যাওয়ে ম্যাচে স্বাগতিক জিরোনাকে ২-০ গোলে হারিয়েছে অতিথি বার্সা। আরেক ম্যাচে স্বাগতিক এস্পানিওলকে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়েছে সফরকারী রিয়াল। বর্তমানে ২১ ম্যাচে ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান অটুট রেখেছে বার্সিলোনা। ৪৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে তিনে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ। প্রতিপক্ষের মাঠে ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে এগিয়ে যায় রিয়াল। একক প্রচেষ্টায় ডি বক্সে ঢোকা লুকা মডরিচের শট ফেরালেও পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি রিয়ালের সাবেক গোলরক্ষক দিয়াগো লোপেজ। ডি বক্সের ভেতর থেকে ফিরতি শটে সুযোগ কাজে লাগান ফরাসী ফরোয়ার্ড করিম বেনজোমা। ১৫ মিনিটে মডরিচের বাড়ানো ক্রসে হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন অধিনায়ক সার্জিও রামোস। ২৫ মিনিটে লিও বাপটিস্টার গোলের ব্যবধান কমিয়ে ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দেয় এস্পানিওল। তবে প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নিয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে চলে যায় রিয়াল। ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে বল বাড়ানোর পর ফিরতি বল পেয়ে দ্রুত দৌড়ে গিয়ে দারুণ শটে লক্ষ্যভেদ করেন বেনজেমা। বিরতির পর ৫৯ মিনিটে হ্যাটট্রিকের সুযোগ নষ্ট করেন ফরাসী ফরোয়ার্ড। ভিনিসিয়াসের বদলি নামার এক মিনিট পরই স্কোরলাইন ৪-১ করেন গ্যারেথ বেল। অর্থাৎ ম্যচের ৬৭ মিনিটে লুকাস ভাসকুয়েজের থেকে বল পেয়ে গোল করেন তিনি। ৭০ মিনিটে বেনজেমার পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দানি কারভাহালের নেয়া শট ফেরান এস্পানিওল গোলরক্ষক। দুই মিনিট পর আক্রমণে ওঠা পিয়াট্টিকে ডি বক্সের ঠিক বাইরে পেছন থেকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন রিয়াল ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারানে। ৮১ মিনিটে সতীর্থের বাড়ানো বল অফসাইডের ফাঁদ ভেঙ্গে বুক দিয়ে নামিয়ে দারুণ শটে স্কোরলাইন ৪-২ করেন এস্পানিওলের ভেনিজুয়েলার রবার্টো রোসালেস। জিরোনার বিপক্ষে লীগের প্রথমপর্বে ঘরের মাঠে পয়েন্ট হারাতে হয়েছিল বার্সিলোনাকে। ফিরতি পর্বে তেমন কোন অঘটন ঘটেনি। লিওনেল মেসি ও নেলসন সেমেডোর গোলে সহজ জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে লীগের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। গত সেপ্টেম্বরে ন্যুক্যাম্পে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়েছিল। প্রতিপক্ষের ভুলে ম্যাচের নবম মিনিটেই এগিয়ে যায় বার্সিলোনা। লুইস সুয়ারেজের ক্রস ডি বক্সে জিরোনার খেলোয়াড়রা বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হলে কয়েকজনের পা ঘুরে পেনাল্টি স্পটের কাছে ফাঁকায় বল পেয়ে যান সেমেডো। বাঁ পায়ের শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন পর্তুগীজ এই ডিফেন্ডার। বিরতির পর সুয়ারেজকে পেছন থেকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন উরুগুয়ের ডিফেন্ডার বানার্ড এসপিনোসা। ফলে বাকি সময় দশজন নিয়ে খেলতে হয় জিরোনাকে। দারুণ ছন্দে থাকা মেসি ৬৮ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। জর্দি আলবার পাস ডি বক্সের মুখে ফাঁকায় পেয়ে চিপ শটে আগুয়ান গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে বল ঠিকানায় পাঠান আর্জেন্টাইন তারকা। এ নিয়ে লীগে টানা ছয় ম্যাচে গোল করেছেন বার্সিলোনা অধিনায়ক। এই সময়ে মোট নয়টি গোল করেছেন তিনি। আসরে তার মোট গোল হলো সর্বোচ্চ ১৯টি। এই গোলে রিয়াল মাদ্রিদের ‘ঘরের ছেলে’ খ্যাত রাউল গঞ্জালেসকে টপকে গেছেন মেসি। লা লিগার ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক ম্যাচ জয়ের তালিকায় রাউল এখন চারে। ২০১০ সালে শালকেতে যোগ দেয়ার আগে রিয়ালের হয়ে ৫৫০ লীগ ম্যাচে ৩২৭ জয়ের মুখ দেখেছিলেন রাউল। মেসি বার্সার হয়ে পরশু লীগে তুলে নিয়েছেন ৩২৮তম জয়। স্পেনের কিংবদন্তি ফরোয়ার্ডের চেয়ে ১১৩ ম্যাচ কম খেলেই তাকে টপকে গেছেন মেসি (৪৩৭ ম্যাচ)। এখন তার সামনে স্পেনের দুই কিংবদন্তি গোলরক্ষক আন্দোনি জুবিজারেটা ও ইকার ক্যাসিয়াস। স্পেনের হয়ে এক সময় সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়া জুবিজারেটা লা লিগায় খেলেছেন এ্যাথলেটিক বিলবাও, বার্সিলোনা ও ভ্যালেন্সিয়ার হয়ে। এই পথে ৬২২ ম্যাচে ৩৩৩ জয়ের মুখ দেখেছেন জুবিজারেটা। তবে লীগে সর্বোচ্চ ম্যাচ জয়ের রেকর্ডটি তার নয়, ক্যাসিয়াসের। রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে ২০১৫ সালে পর্তুগীজ ক্লাব এফসি পোর্তোয় যোগ দেয়ার আগে লা লিগায় ৫১০ ম্যাচে ৩৩৪ জয় পেয়েছেন বিশ্বকাপ জয়ী স্প্যানিশ অধিনায়ক। এখন সবাইকে ছাড়িয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন বার্সিলোনার আর্জেন্টাইন সুপারস্টার।
×