ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘সবসময়ই নিজেকে বিশ্বাস করি’

প্রকাশিত: ১২:০০, ২৯ জানুয়ারি ২০১৯

‘সবসময়ই নিজেকে বিশ্বাস করি’

জিএম মোস্তফা ॥ নতুন মৌসুমের শুরুতেই বাজিমাত করলেন নোভাক জোকোভিচ। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রাফায়েল নাদালকে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের শিরোপা জিতলেন তিনি। সেই সঙ্গে নিজেকেও ইতিহাসে নিয়ে গেলেন সার্বিয়ান তারকা। এযাবতকালের ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে সর্বোচ্চ সপ্তমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করলেন তিনি। যা পারেননি আর কোন খেলোয়াড়। শুধু তাই নয়, সর্বকালের সর্বোচ্চ গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের তালিকায় আমেরিকান কিংবদন্তি পিট সাম্প্রাসকেও ছাড়িয়ে গেলেন জোকোভিচ। সর্বোচ্চ গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের তালিকায় সার্বিয়ান তারকা এখন তৃতীয় স্থানে। তার ওপরে কেবল রাফায়েল নাদাল আর রজার ফেদেরার। অসামান্য কীর্তির অনুভূতিটা কেমন? বিশ্ব টেনিস তারকা ১৫ গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের পরই জানালেন ইতিহাস নিয়ে তিনি বেশ সতর্ক। এ প্রসঙ্গে তার অভিমত, ‘ক্রীড়াজগতে ইতিহাস গড়ার বিষয়ে আমি খুব সতর্ক। সত্যি আমি বিশেষ কিছু করতে সবসময় ভালবাসি। অবশ্যই অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয় আমাকে আরও অনুপ্রাণিত করবে। গ্র্যান্ডস্লাম হলো সবচেয়ে বড় এটিপি ইভেন্ট। এই মৌসুমে এমনকি আসন্ন মৌসুমগুলোতেও মেজর টুর্নামেন্টে পারফর্ম করতেই বেশি প্রাধান্য দিব। তবে আর কয় মৌসুম? সেটা আমি জানি না। ভবিষ্যত নিয়ে আমি এই মুহূর্তে খুব বেশি ভাবতে চাই না।’ গত মৌসুমের শেষ দুই গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন জোকোভিচ। মেলবোর্নে শিরোপা উঁচিয়ে ধরে টানা তিন মেজর শিরোপা জয়ের স্বাদ পেলেন তিনি। তবে জোকোভিচ জানালেন, নিজের খেলায় আরও উন্নতি করতে চান তিনি। এ বিষয়ে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর খেলোয়াড় বলেন, ‘আমার খেলা নিয়ে আরও কাজ করতে চাই। বিশেষ করে ক্লে কোর্টে আরও বেশি মনোযোগী হতে চাই। আরও সুস্পষ্ট করে বলতে হলেÑ গত মৌসুমে যেমনটা করেছি তারচেয়েও ভাল করতে চাই। আমি ইতোমধ্যেই ভাল খেলছি, এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। তবে শিরোপা জয়ের জন্য আরও ভাল পারফর্ম করতে চাই। ক্লে কোর্টে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ নাদাল। তার বিপক্ষে জেতাটা সবসময়ই খুব কঠিন। এরপর ডোমিনিক থিয়েম এবং আলেক্সান্ডার জেরেভ। রজারও (ফেদেরার) সম্ভববত ক্লে কোর্টে খেলতে যাচ্ছেন। ক্লে কোর্টে আমাকে কিংবা অন্য যে কেউকে চ্যালেঞ্জ করার মতো অনেক খেলোয়াড় রয়েছে।’ নিজের ক্যারিয়ারের সাফল্যের সবচেয়ে বড় সূত্রটা কী? সেটাও জানিয়েছেন জোকোভিচ। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমার কিংবা অন্য যে কোন এ্যাথলেটেরই সাফল্যের সবচেয়ে বড় রহস্য হলো আত্মবিশ্বাস। আমি সবসময়ই নিজেকে বিশ্বাস করি।’ এদিকে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে হেরে গেলেও হতাশ না রাফায়েল নাদাল। এর কারণটাও সুস্পষ্ট। কেননা ইনজুরির কারণে টানা কয়েক মাস যে কোর্টের বাইরে ছিলেন তিনি। যে কারণে প্রস্তুতিটা এবার খুব ভাল হয়নি রাফায়েল নাদালের। নোভাক জোকোভিচের কাছে হেরে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন হাতছাড়া করার পর এমন কথাই জোর দিয়ে বলেছেন ক্লে কোর্টের রাজা। তিনি বলেন, ‘আমি পুরোপুরি পারফেক্ট ছিলাম না। গত কয়েকদিন দারুণ কয়েকটি ম্যাচ খেলেছি। কোন রকম খুঁত চোখে পড়েনি। তবে আমার মনে হয়েছে প্রস্তুতিটা ভাল হয়নি। পাঁচ মাস প্রতিযোগিতার বাইরে ছিলাম। এরপর অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে নামা সত্যিই বড় একটা চ্যালেঞ্জ।’ অবশ্য জোকোর কাছে এভাবে হেরে যাওয়ায় খুব একটা হতাশ নন নাদাল। তার অভিমত ভাল কারোর কাছেই পরাজিত হয়েছেন তিনি, ‘আমি খুব বেশি উদ্বিগ্ন হচ্ছি না। ভাল কারোর কাছে হেরেছি।’ পুরো ম্যাচে অনেক ভুল করেছেন নাদাল। ২৮ আনফোর্ডস এরর তার, যেখানে জকোভিচের মাত্র নয়টি। ফাইনালের মতো ম্যাচে এত এত ভুল কখনই ভাা ফল বয়ে আনে না। নাদালও তেমন ইঙ্গিত দিয়েছেন, ‘আমি অনেক বেশি ভুল করেছি। যেটা মোটেও ইতিবাচক ছিল না। তবে আমি হাল ছাড়িনি।’ এখন পর্যন্ত ১৭টি গ্র্যান্ডস্লাম জিতেছেন নাদাল। তার চেয়ে বেশি কেবল রজার ফেদেরারের (২০)। অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতলে আরেক ধাপ এগিয়ে যেতেন। কিন্তু তা আর হতে দেননি জোকোভিচ।
×