ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গান কবিতায় সঙ্গীতজ্ঞ ওয়াহিদুল হক স্মরণ

প্রকাশিত: ১১:১০, ২৯ জানুয়ারি ২০১৯

গান কবিতায় সঙ্গীতজ্ঞ ওয়াহিদুল হক স্মরণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গান, কবিতা আবৃত্তি আর স্মৃতিচারণের মধ্য দিয়ে স্মরণ করা হয় সঙ্গীতজ্ঞ, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ওয়াহিদুল হককে। গুণী এই ব্যক্তিত্বের দ্বাদশ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করে কণ্ঠশীলন। রাজধানীর নীলক্ষেতের বৃহত্তর যশোর সমিতি ভবনে সংগঠনটির নতুন কার্যালয়ে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে পথচলার স্মৃতি তুলে ধরেন কণ্ঠশীলন অধ্যক্ষ মীর বরকত, সভাপতি গোলাম সারোয়ার, সাধারণ সম্পাদক রইস উল ইসলাম, সহ-সভাপতি মোস্তফা কামাল, সদস্য লিটন বারুরী ও অনন্যা গোস্বামী। অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন রাজিয়া সুলতানা মুক্তা, বাদল সাহা শোভন, শিরিন জাহান মিথিলা, রুবেল মজুমদার, মারিয়া কিবতিয়া ও আবু ওবায়দা টিপু। তাকে নিবেদন করে সঙ্গীত পরিবেশন করেন নাদিমুল ইসলাম। ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে পথচলার স্মৃতিময় কিছু ঘটনা তুলে ধরে বক্তারা বলেন, ওয়াহিদুল হক ছোট বড় সকলের সঙ্গে মিশতেন এবং সকলকে সম্মান করতেন। তার ভক্ত ছিল না এমন মানুষ খুব কম পাওয়া যাবে। তার সমস্ত কর্মজীবনে বাঙালী সংস্কৃতির আলো ফুটেছিল। সকল সাংস্কৃতিক আন্দোলনেও তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি মানুষের ভেতরে সঙ্গীতের অনুরণন তুলেছিলেন। ওয়াহিদুল হকের আদর্শে পথ চললে জীবনের পথগুলো অনেক বেশি সুন্দর হবে। ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ, দেশের সব ধরনের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে ওয়াহিদুল হক ছিলেন এক নিরন্তর যোদ্ধা। তাকে অনুসরণ করলে আমরা অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক হতে পারব এবং মানুষের জন্য কাজ করতে পারব। তিনি দেশের নামকরা পত্রিকায় কাজ করেছেন। শেষ জীবনে তিনি কলাম লিখতেন। এমন কোন বিষয় ছিল না যে বিষয়ের ওপর তিনি লিখতে পারতেন না। শব্দের উৎপত্তি ও ব্যবহার তিনি অভিধান না দেখেই বলে দিতে পারতেন। অসাধারণ সুন্দর মানসিকতার মানুষ হয়েও তিনি সাধারণ জীবনযাপন করতেন। ওয়াহিদুল হক আজ বহুদূরে, জগতের যত হাসি-কান্না, হিসাব-নিকাশের বাইরে। আবার বহু কাছেও আছেন তিনি, তার কর্মে, তার সৃষ্টির পথে পথে, অন্তরের অনুরণনে-কথাহীন, শরীরহীন অনন্ত হয়ে। দিন চলে যায়, চলে যাবে। তবে তার ছোঁয়াটুকু, কর্মটুকু থাকবে, থাকতেই হয়, যেমনটি করে সক্রেটিস, লালন বেঁচে আছেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। প্রয়াত নাজিম মাহমুদ ওয়াহিদ ভাইকে বলতেন ‘হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা’। ঠিক তাই। বাঁশির সুর ছড়িয়েছিলেন তিনি পথে পথে, পদে-পদে জাতিসত্তার ‘চির উন্নত শিরে’ অবগাহনে। সেই সুর তাকে চিনিয়ে দিবে কালে কালে। অবিশ্বাস্য তার পথচলা সীমানা, অবিশ্বাস্য তার পরিচিতজন-স্বজন পরিধি বয়সের গণনাকে তুচ্ছ করে। আমরা বিশ্বাস করি, এই আত্মীয়তা নিয়ে ওয়াহিদ ভাই বেঁচে থাকবেন সবার মাঝে। জীবিতকালে ২৭ সংখ্যাটিকে ওয়াহিদুল হক খুব পছন্দ করতেন, বয়স গণনায় তিনি আনন্দের সঙ্গে বলতেন যে, ‘বয়সটাকে আমি সাতাশে রাখতে চাই’। আরও বলতেন ‘একজন মানুষের সেরা বয়সকাল হওয়া উচিত ২৭’। কত পথ-মতকে তিনি সাবলীল করেছেন, অর্জন করেছেন। আবৃত্তিকেও তার আরেক ভালবাসার জগত বলে মেনেছিলেন।
×