খালেদার জামিন নিয়ে সরকার টালবাহানা করছে ॥ রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে সরকার ‘টালবাহানা’ করছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার জামিন পেতে আইনী কোন বাধা নেই। অথচ তাকে আটকিয়ে রাখতে আইনের ফাঁক দিয়ে বেআইনী রাস্তায় নানা চক্রান্ত চলছে উল্লেখ করেন। সোমবার নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন। এ সময় তিনি সরকারের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ আরোপেরও অভিয়োগ আনেন। বলেন, দেশের গণমাধ্যমকে ‘অন্ধকার ছায়া’ থেকে নজরদারি করা হচ্ছে। ভোট পরবর্তী পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে আরও বলেন, নির্বাচনের পর গণমাধ্যম হচ্ছে গণতন্ত্রের অন্যতম একটি অনুষঙ্গ। এখন সেই গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে যে কেউ কোন সরকারবিরোধী কথা বলছে কিনা? দেশ এখন একদলীয় দুঃশাসন প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত পর্বে উপনীত হয়েছে। এখানে টু-শব্দ করা যাবে না। ভিন্নমত প্রকাশিত হলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশি আক্রমণের মুখে পড়তে হচ্ছে। মানুষকে রুদ্ধশ্বাসে একদল ও এক ব্যক্তির বন্দনা করতে হবে। নইলে কারাবাস বা ভয়াবহ শাস্তি ভোগ করতে হবে উল্লেখ করেন। বলেন, ভোটের পর সারাদেশে খুন, গুম, ধর্ষণ, অপহরণ, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ৩০ ডিসেম্বরের ভোটে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করতে মহাভোট ডাকাতিতে নিয়োজিত থাকায় তারা এখন সমাজে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের বদলে এখন রাজনৈতিক কর্মকা-ে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে। ফলে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরমভাবে অবনতিশীল হয়েছে। সমাজ জীবনে শান্তিশৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে। রাষ্ট্র এমন এক ভয়াবহ একদলীয় রূপ ধারণ করেছে যেখানে অন্যায়ের প্রতিকার চাওয়ার কোন জায়গা নেই। এত বড় মহাভোট ডাকাতি ও জালিয়াতির নির্বাচন গোটা জাতির সামনে সংঘটিত হলো, অথচ নির্বাচন কমিশন জানাল যে, নির্বাচনে কোন অনিয়ম হয়নি। প্রধান নির্বাচনসহ অন্যান্য কমিশনারের মনে কোন অনুশোচনা নেই। সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে প্রার্থীদের মামলা করার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, যার যার মতো করে প্রার্থীরা মামলা করবে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ কোন মামলা করেছে কিনা জানা নেই। করলেও করতে পারে। গণভবনে চায়ের দাওয়াত সম্পর্কে রিজভী বলেন, আমি একা বললে তো হবে না। এটা দলীয়ভাবে যারা সিনিয়র আছেন তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। এ বিষয়ে যথাসময়ে জানান হবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহদফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ।