ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তরাঞ্চলে আর কয়লাবিদ্যুত কেন্দ্রের অনুমোদন নয়

প্রকাশিত: ০৯:৩১, ২৯ জানুয়ারি ২০১৯

উত্তরাঞ্চলে আর কয়লাবিদ্যুত কেন্দ্রের অনুমোদন নয়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের উত্তরাঞ্চলে নতুন করে আর কোন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণ করবে না সরকার। ভূগর্ভের পানির আধার ঠিক রাখতেই নীতিগত এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিদ্যুত বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, উত্তরাঞ্চল হচ্ছে দেশের কৃষিপণ্য উৎপাদনের অন্যতম ভা-ার। আর এই পণ্য উৎপাদনের জন্য ভূগর্ভের জলাধার থেকেই প্রয়োজনীয় পানির সংস্থান হয়ে থাকে। এ কারণে খাদ্যশস্যের জলাধার যেন নষ্ট না হয়, সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি মুখে নির্মিত বিদ্যুতকেন্দ্রে ভূগর্ভের পানি ব্যবহার করা হচ্ছে। বিদ্যুত বিভাগের সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এ প্রসঙ্গে বলেন, উত্তরাঞ্চলে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র না করতে আমরা নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মূলত কৃষি উৎপাদনে ভূগর্ভের পানি ব্যবহারে যেন কোন সমস্যা না হয়, এজন্য এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ভূগর্ভের পানির জলাধার ঠিক রাখতে এরই মধ্যে রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রামে কয়লাভিত্তিক একটি বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে। আশুগঞ্জ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের মালিকানাধীন এই কেন্দ্র দেশের অন্য জায়গায় নির্মাণের চিন্তাভাবনা চলছে। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী সরকারী-বেসরকারী ও যৌথ বিনিয়োগে মোট ১৮টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। এগুলোর সম্মিলিত উৎপাদন ক্ষমতা ১৮ হাজার ৩৯২ মেগাওয়াট। এছাড়া সরকারী পর্যায়ে নির্মিতব্য কেন্দ্রের মধ্যে সব থেকে এগিয়ে রয়েছে পায়রায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কেন্দ্রের কাজ। এরই মধ্যে কেন্দ্রটির ৩০ ভাগের ওপর কাজ শেষ হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত নর্থ -ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি ও চীনের সিএমসি এই কেন্দ্রের সমান অংশীদার। দুই কোম্পানি মিলে বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি (বিসিপিসিএল) গঠন করে। প্রকল্পটির মালিক বাংলাদেশ ও চীন সরকার। চীনের এক্সিম ব্যাংক প্রকল্পটিতে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে। বিদ্যুতকেন্দ্রটি ২০১৯ সালেই উৎপাদনে আসবে। রামপাল বিদ্যুতকেন্দ্রটির মালিক বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও ভারতের ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার লিমিটেড (এনটিপিসি)। বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ কোম্পানি (বিআইএফসিএল) ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি নির্মাণ করছে। এরই মধ্যে এর টেস্ট পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ চলছে। শিগগিরই কেন্দ্রের মূল পাইলিংয়ের কাজ শুরু হবে। এ ধরনের একটি কেন্দ্রের জন্য সাড়ে সাত থেকে আট হাজার পাইলিং প্রয়োজন হয়। কেন্দ্রটিতে ঋণ সহায়তা দিয়েছে এক্সিম ব্যাংক। সরকারী প্রতিষ্ঠান কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ মাতারবাড়িতে নির্মাণ করছে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) প্রকল্পটিতে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে। এছাড়া এস আলম গ্রুপ ৬১২ মেগাওয়াট করে দুটি বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণ করছে।
×