ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৯:২২, ২৯ জানুয়ারি ২০১৯

ঢাকার দিনরাত

মাঘের মাঝামাঝি নাকি রয়েছি আমরা! অথচ শীতের বদলে অনুভূত হচ্ছে গরম! দিনের বেলা এত গরম পড়ছে আর সূর্য আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে যে তার আগুন-গোলায় নগরবাসীর হাঁসফাঁস অবস্থা। অথচ ঢাকার বাইরে শীত। ঢাকায় এত গরম লাগার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন পরিবেশবাদীরা। বাসাবাড়ি ও অফিসে দিনের বেলায়ও বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালানো, এবং কলকারখানা আর চলমান গাড়ির তাপ বিচ্ছুরণের ফলে অত্যধিক ঘনবসতিসম্পন্ন এই শহরে প্রতিনিয়ত তাপ উৎপন্ন হচ্ছে। স্বাভাবিক শীতকালের ঠা-া পরাস্ত হচ্ছে তাতে অনেকটা। তবে জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলেও ঢাকা হয়ে উঠছে উষ্ণাঞ্চল। যা হোক, শীত রসিকতা করছে বলে তো আর পিঠা উৎসব থেমে থাকতে পারে না। ঢাকায় শিল্পকলা একাডেমিতে মহাসাড়ম্বরে ক’দিন চলছে জাতীয় পিঠা উৎসব। শুক্রবার উৎসবের শেষ দিন। এত ধুলো! ঢাকাবাসী অসহায় শীতকাল বিদায় নেয়ার আগেই অসহনীয় গরম পড়ে যাওয়ায় ঢাকাবাসীর কষ্টকে বহুগুণ বাড়িয়ে তুলেছে শহরময় ধুলোর দাপট। ঢাকার বেশ কয়েকটি প্রধান সড়ক মেট্রোরেলের প্রকল্পের কাজের কারণে সংকীর্ণ হয়ে সোজাসুজি অর্ধেক হয়ে গেছে। ফলে যানবাহনের চাপ সামলাতে গিয়ে সড়কগুলোর লবেজান অবস্থা। গাড়ি চলছে এক লেনে। মানে এক সারিতে। কোন কোন রাস্তায় পাশাপাশি দুটো প্রাইভেট কারও চলতে পারছে না। ফলে ধীরগতিতে এবং থেমে থেমে চলতে গিয়ে যাত্রীদের সময় ব্যয় হচ্ছে বেশি। অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ লাইন ও পানি বা গ্যাসলাইনের জন্য সড়কের একপাশ বা মাঝখানে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। সব মিলিয়ে ধুলো হচ্ছে প্রচুর। কিছু কিছু রাস্তায় তো প্রায় কুয়াশার মতো বিস্তৃতি পাচ্ছে ধুলো। রীতিমতো মরুভূমি দশা। পানি ছিটালে ধুলার আগ্রাসন কমে যাবে, জানে কর্তৃপক্ষ। তবে অজ্ঞাত কারণে তারা নিয়মিত পানি ছিটানোর কাজ করছে না। বললে ভাল শোনায়, করতে পারছে না। কেউ বলবেন, ঘণ্টায় ঘণ্টায় ধুলো বাড়ছে। প্রতি ঘণ্টায় তো আর পানি দেয়া সম্ভব নয়। কথা সত্য। যে সড়কে প্রতি মিনিটে শত গাড়ি পার হচ্ছে সংকীর্ণ পথ দিয়ে, সেখানে ধুলো উড়বেই। সেই ধুলোকে বাগে আনার জন্যে যত ঘন ঘন পানি দেয়া দরকার রাস্তায়, সেটি করতে গেলে মহাব্যস্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে গভীর রাতে পানি দিতে হচ্ছে। সকালে রাস্তা থাকছে কর্দমাক্ত, অথচ বাতাসে ধুলোর ওড়াউড়ি। ঢাকা এখন ধুলিধূসরিত তো বটেই, তবে বিষয়টি কাব্যিক নয় মোটেই। ধুলোয় লুটানো দিন থেকে কবে রেহাই মিলবে ঢাকাবাসীর তা নিশ্চিত করে কে বলবে? তবে ধুলোর ধকল অনেকেরই সহ্য হচ্ছে না। ধুলোজনিত অসুখবিসুখ বাড়ছে। শিশু ও বয়স্কদের কষ্ট একটু বেশি। চড়ুইভাতি এবং প্রীতিসম্মিলন শীতকালে পিকনিকের ধুম পড়ে যায় ঢাকায়। শুক্রবার সকালে গাড়ি নিয়ে হৈহৈ করে বেরিয়ে পড়া, অদূরেই কোন দর্শনীয় এলাকায় যাওয়া এবং দলবদ্ধভাবে ভোজন সারা। ভোজনের পাশাপাশি রয়েছে প্রীতিকর কিছু আনন্দময় খেলা। পরপর দুই শুক্রবার দুটি ভিন্ন ধরনের এমন আয়োজনে যাওয়ার সুবাদে বলতে পারি ঢাকার ব্যস্তত্রস্ত জীবনে সেঁদিয়ে থাকেন যারা, বিদেশে বেড়াতে যাওয়ার সুযোগ যাদের কম, তাদের জন্য দারুণ রিফ্রেশিং হয় এ ধরনের পিকনিক। যশোর সমিতির যে পিকনিকে গিয়েছিলাম সেটিকে প্রীতি সম্মিলন বলাই সঙ্গত। আবার লেখকদের বনভোজনের নামকরণ করা হয়েছিল লেখক চড়ুইভাতি বলে। দিনভর বিচিত্র আয়োজন, ঘুরে বেড়ানো, আড্ডা আর প্রীতিকর ক্রীড়ায় অংশ নিয়ে আনন্দসন্ধানীরা নিজেদের ভেতর আত্মিক বন্ধন নবায়নের সুযোগ পেয়েছেন। যশোর জেলা সমিতির বনভোজন মানেই যশোর বিজয় উৎসব। এজন্যেই ভালো লাগে। সাভারের লাজপল্লীতে ছিল আয়োজন। ঘুরে বেড়ানোর মতো বিস্তৃত পরিসর। শিশু-কিশোরদের প্রধান আকর্ষণ সুইমিং পুল। এবারের মন্ত্রীসভায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়েছে যশোরের সন্তান স্বপন ভট্টাচার্য্যকে, তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। দিনভর উপস্থিত ছিলেন তিনি। যশোর জেলাই একাত্তরে প্রথম মুক্ত হয়েছিল। যুদ্ধ শুরুর পর কলকাতা অভিমুখে শরণার্থীদের ঢল নেমেছিল যশোর রোডে। এ নিয়ে মার্কিন কবি অ্যালেন গিন্সবার্গের কবিতা আছে ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’ নামে। সেই যশোরের কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা দেয়া হলো এই বিজয় উৎসবে, অর্থাৎ পিকনিকে। এদের ভেতর সবচেয়ে প্রবীণ হলেন রবিউল আলম। তিনি ডায়াসে এসে দাঁড়ালেন। শত শত দর্শক কান পেতে শুনলেন যুদ্ধের স্মৃতিচারণ। যশোর মাইকেল মধুসূদন কলেজে একসঙ্গে পড়েছি এমন পনেরজনের মতো সহপাঠী উপস্থিত হয়েছিলাম। সম্ভবত এই পিকনিকে যশোরের সবচেয়ে বড় গ্রুপ। ঢাকাবাসী যশোরের সন্তানদের বনভোজন হলেও এতে অংশ নিতে যশোর থেকেও চলে আসেন অনেকে। সব মিলিয়ে উপভোগ্য। তবে পিকনিকে খাদ্য ঘাটতি পড়ে, এমন অভিজ্ঞতা প্রথম হলো। এত বড় আয়োজনে বিশ-পঁচিশজনের মতো লোকের খাবার অতিরিক্ত রান্না করা যেতেই পারে। তাছাড়া সমিতির মহাসচিব এত বাগাড়ম্বর ও আত্মপ্রচার করেন যে লজ্জাই লাগে অনেকের। গাজীপুরের মৌচাকে স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গাছপালায় ঘেরা সুন্দর একটি জায়গা। বিশাল মাঠ ও বনভূমি রয়েছে। লেখকদের চড়ুইভাতি হলো সেখানে। নানা রকম খেলাধুলার প্রতিযোগিতা ছিল। ছিল সাংস্কৃতিক অুনষ্ঠান। আশির দশকের দুই বিশিষ্ট কবি সরকার মাসুদ ও জুয়েল মাজহার রীতিমতো ব্যান্ড গায়কদের ধরনে সংগীত পরিবেশন করলেন ‘ও ভাবীজান, পান খাইয়া মুখ...’। বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও র‌্যাফেল ড্রয়ের পুরস্কার হিসেবে ছিল বই শুধু বই। অনেক লেখকই সপরিবারে গিয়েছিলেন। লেখকদের এমন সপরিবারে দলবদ্ধ বেড়ানোন ভিন্ন কোনো আয়োজনের কথা আমার জানা নেই। উদ্যোক্তাদের পক্ষে কবি অনিকেত শামীম জানালেন প্রতি বছর জানুয়ারির শেষ শুক্রবারে এমনি আয়োজন করা হবে পিকনিক। সঙ্গীতশিল্পী পরিবার মাস ছয়েক আগে রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী মাহবুবা বিনুর বাসায় ঘরোয়া আসরে গিয়ে মুগ্ধ হয়েছিলাম। এক পরিবারের সবাই সংগীত সাধনা করেন, কারো বা সিডি বেরিয়ে গেছে, কেউ রেডিও-টিভির নিয়মিত শিল্পী- এমন উদাহরণ এখন আর আমাদের সমাজে খুব বেশি নেই। শিল্পীর দুই সন্তান তাসনুভা তপা ও সাকিব কামাল সংগীত সাধনা করেন। দু’জনারই দারুণ কণ্ঠ ও গায়কী। মা ও দুই সন্তানের গান সেবার আমাদের মুগ্ধ করেছিলো। সত্যি বলতে কি পরিবারের সদস্যদের সংগীতপ্রতিভার পরিচয় প্রকাশের জন্য ওই আয়োজন ছিল না। সতীর্থ ক’জন সংগীতশিল্পী, লেখক-গীতিকার বন্ধুর সঙ্গে ঈদ-পরবর্তী আড্ডা দেয়ার জন্যই ছিল ওই আয়োজন। কিন্তু শিল্পীরা একত্রিত হবেন আর সেখানে গান হবে না- এমন কি হতে পারে? আর এবার মানে গত সপ্তাহের আয়োজনটি ছিল পারিবারিক। তবু বন্ধু ও শ্রোতা হিসেবে আমরা কয়েকজন আমন্ত্রিত হয়েছিলাম। অস্ট্রেলিয়াবাসী সহোদর ওয়াসিম মাহমুদ দেশে এসেছেন, এটাই উপলক্ষ। তিনি তো গান শোনালেনই, মাহবুবা-ওয়াসিমের অনুজ রুমন মাহমুদও গান করলেন। দুই ভাই পেশাগতভাবে গান না করলেও উভয়েই ভালো গান করেন। মান্না দে এবং সুবীর নন্দীর কয়েকটি জনপ্রিয় গান শোনালেন ওয়াসিম। রুমন শোনালেন লাকী আকান্দের ‘আগে যদি জানিতাম তবে মন ফিরে চাইতাম’। সত্যিই উপভোগ্য ছিল সেই সন্ধ্যা। সমমনা শিল্পী ও সৃষ্টিশীল বন্ধুদের একসঙ্গে মাঝেমধ্যে এমন আড্ডা হওয়া তাঁদের সংগীতচর্চা ও সৃজনপ্রেরণার জন্য যে গুরুত্বপূর্ণ, সেকথা বলাই বাহুল্য। শিল্পকলার কাগজ শিল্পপ্রভা এদেশে শিল্পকলা বিষয়ক পত্রিকা প্রকাশ এবং সাত বছর ধরে মান বজায় রেখে সেটি চালিয়ে যাওয়া কম কথা নয়। গুলশানের এজ গ্যালারিতে ‘শিল্পপ্রভা’ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পত্রিকার লেখকদের সম্মান জানানো হয়। এছাড়াও কয়েকজন গুণীজনকে সম্মান জানানো হয়। পত্রিকাটির প্রকাশক অঞ্জন চৌধুরী ও সম্পাদক শিল্পী রফি হকের আন্তরিক বক্তব্য উপস্থিতজনদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। শিল্পী, শিল্পরসিক ও শিল্পসমালোচকদের মিলনমেলায় পরিণত হয় অনুষ্ঠানটি। প্রসঙ্গত সম্পাদক রফি হক ফেসবুক পোস্টে তার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেছেন: ‘শিল্পপ্রভা শুধুমাত্র তাদের লেখকদের সম্মান জনিয়েছে। যারা কিনা শিল্পপ্রভাতে কন্ট্রিবিউট করেছেন। এটা পরিষ্কার কথা। আমার ভালো লাগলো জেনে যে, বাংলাদেশে এত আর্ট-রাইটার আছেন। আমার ৭ বছরের অভিজ্ঞতায় আমি লেখক খুঁজে খুঁজে গলদঘর্ম হয়েছি। অনেকে লেখা দেবেন বলে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস ঘুরিয়েছেন, তাও শেষ পর্যন্ত লেখা দেন নি। প্রতিভা মূল্যায়ণের জন্য আমি আশা করবো দেশে আরও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান আছে, তারাও শিল্প-সমালোচক, শিল্প-লেখকদেরকে সম্মান করবেন। এভাবে আস্তে ধীরে সকলেই এগিয়ে আসবেন। তখন দেখবেন একটা সুস্থ পরিবেশের মধ্যে সকল প্রতিভা মূল্যায়িত হচ্ছে।’ এসে গেল বইমেলা মাঝখানে দুদিন, এরপর শুক্রবারে শুরু হচ্ছে একুশের বইমেলা। ছুটির দিনে বইমেলার শুরু। ওই দিন আবার কবিতা উৎসবেরও সূচনা। চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে লেখক-প্রকাশকদের। পাঠকদেরও কি নয়? ধরা যাক লেখক-প্রকাশক মিলিয়ে সংখ্যাটা যদি হয় এক হাজার, তবে পাঠকের সংখ্যা কত? প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ যান বইমেলায়, একুশে ফেব্রুয়ারিতে লাখো মানুষ। শুক্রবারেও লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়। এদের সবাই অবশ্য বই কেনেন না। পড়েন কি? বইয়ের ক্রেতা ও পাঠক লক্ষ্যযোগ্যভাবে বাড়ছে না। অথচ প্রতিবছরই নতুন প্রকাশক আসছেন, নতুন লেখকেরও জন্ম হচ্ছে। বই নিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় মেলা একুশের বইমেলায় বইয়ের বিক্রয়লব্ধ অর্থ আগের বছরের হিসাবকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ফলে নানা সীমাবদ্ধতা, আক্ষেপ ও অভিযোগ সত্ত্বেও বইমেলা বাণিজ্য-বিচারে তার সাফল্য বজায় রেখেছে। আগে বাংলা একাডেমির মাঠে মেলাটি হতো। প্রকাশনা সংস্থার সংখ্যা বাড়তে বাড়তে এমন পর্যায়ে গেল যে গাদাগাদি- ঠাসাঠাসি একটা পরিবেশ সৃষ্টি হলো। পরবর্তীকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শে বইমেলাটি চলে এল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। তবে লেখক-পাঠক-প্রকাশকদের দীর্ঘদিনের চাওয়া ছিল বইমেলাটি বড় কোন জায়গায় অনুষ্ঠিত হোক। অবশ্য এখনও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ বইমেলার অংশ বটে। এ কথা আমাদের বার বার বলতে হবে যে, বই হলো অনন্য পণ্য, যা নিবেদিত হয় মহাকালের উদ্দেশে। তাই কালের মহার্ঘ্য হতে হলে তাকে হতে হয় যোগ্য, সম্পূর্ণ বা পূর্ণাঙ্গ এবং সূচাররূপে প্রকাশিত। সে কারণেই পাণ্ডুলিপি উত্তমরূপে সম্পাদনা ও গ্রন্থ মুদ্রণপ্রমাদমুক্ত হওয়া বাঞ্ছনীয়। কিন্তু কয়জন গ্রন্থ উৎপাদক বা প্রকাশক এই শর্তগুলো পূরণ করেন? সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সফল বইমেলা করতে হলে মুক্ত মত গ্রহণের বিকল্প নেই। আমরা বলতেই পারি ‘বইপ্রিয় বাঙালীর অনন্য এক মেলা’ আমাদের একুশের চেতনাকে প্রতিবছর সমুন্নত করছে। এটা সত্যি যে নানা দিক দিয়ে একুশের বইমেলাটি অনন্যই বটে। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা, বাংলা ভাষার প্রতি ভালবাসা এ সবই কোন না কোনভাবে প্রকাশিত হয়ে চলে পুরোটা মাস। লেখক-পাঠক-প্রকাশকদের মিলন মেলাই বটে এই বইমেলা। ভুলে গেলে চলবে না শুধু একুশের বইমেলাকে উপলক্ষ করেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশের লেখক-পাঠকরা মাতৃভূমিতে ফেরেন। বিশ্বের আর কোন দেশে এতগুলো দিন, মানে মাসজুড়ে বইমেলা হয় না। কোন মেলায় হুড়মুড় করে হাজারও দর্শক এবং পাঠক-ক্রেতা মেলায় প্রবেশের জন্য অস্থির হয়ে ওঠে না। প্রত্যেক মেলায় কয়েক হাজার করে বই প্রকাশিত হচ্ছে, কিন্তু ভাল বই বা গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ নির্বাচন করতে গেলে হতাশা এসে ভর করে। তার পরও মানসম্পন্ন না হলেও লেখকদের, বিশেষ করে নবীন-তরুণ লেখকদের বই প্রকাশ বা লেখালেখির সঙ্গে সংযুক্ত থাকা ইতিবাচক একটি কাজ। সাহিত্য বা সংস্কৃতিচর্চায় যতক্ষণ নিয়োজিত থাকেন তরুণরা ততক্ষণ মাদকের মতো নেশার হাতছানি বা অন্যান্য অপকর্ম থেকে তারা মুক্ত থাকেন- এই সামাজিক বাস্তবতাকে আমরা উপেক্ষা করতে পারি না। তাই যার যা খুশি লিখুন, বই বের করুন, বন্ধুদের বই উপহার দিন। এই কর্মকাণ্ড থেকেই আগামীতে বেরিয়ে আসবে নতুন পথরেখা। তাই নিয়ন্ত্রণ নয়। তবে এটা ভুললে চলবে না যে কোন লেখকের পা-ুলিপি অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ সম্পাদক দ্বারা সম্পাদিত হওয়ার পর প্রকাশ করাই বাঞ্ছনীয়; আন্তর্জাতিক মানদণ্ডও সেটা। ২৭ জানুয়ারি ২০১৯ [email protected]
×