ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কল্যাণের প্রত্যাশায় শুরু ঢাবির সঙ্গীত উৎসব

প্রকাশিত: ১২:২৬, ২৮ জানুয়ারি ২০১৯

 কল্যাণের প্রত্যাশায় শুরু ঢাবির সঙ্গীত উৎসব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অশুভর বিরুদ্ধে কল্যাণের পথ দেখায় সঙ্গীত। অমঙ্গলের বিরুদ্ধে মঙ্গলের প্রতিধ্বনি উচ্চারিত হয় সুরের গহীনে। সেই কল্যাণ আর মঙ্গলের প্রত্যাশায় রবিবার থেকে শুরু হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের আয়োজিত দুই দিনব্যাপী সঙ্গীত উৎসব। বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তনে (টিএসসি) উৎসব উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সঙ্গীত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক টুম্পা সমদ্দার, কলা অনুষদের ডীন অধ্যাপক আবু মোঃ দেলোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক নারায়ণ চন্দ্র শীল এবং ভারতীয় হাইকমিশনের ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের (আইজিসিসি) পরিচালক ড. নীপা চৌধুরী। অনুষ্ঠানের শুরুতে সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা সম্মেলক কণ্ঠে পরিবেশন করে ‘জয় হোক, শান্তির জয় হোক’ এবং ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ শিরোনামের গান। সম্মেলক সঙ্গীতের পর প্রদীপ প্রজ¦ালনের মাধ্যমে উৎসবের উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানসহ অন্য অতিথিরা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের চেয়ারম্যান টুম্পা সমদ্দার। আখতারুজ্জামান বলেন, এ বছর আয়োজনে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। এমন উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে এ আয়োজন এবারই প্রথম অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এছাড়া এবারের উৎসবে নতুন রং আছে, নতুন সুর আছে। বাংলার মানুষ অনেক উদার ও মানবিক। কারণ তাদের মধ্যে সুর আছে। যাদের মাঝে সুর থাকে, রং থাকে, তারাই মানবিক হয়। সুরের ধারা যত বহমান হবে জাতি তত বেশি এগিয়ে যাবে। টুম্পা সমদ্দার বলেন, শাস্ত্রীয় সঙ্গীত আমাদের মনের কালিমা দূর করে সামনে এগোনোর প্রেরণা জোগায়। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত এমন একটি সঙ্গীত যা আমাদের খারাপ থেকে দূরে টেনে এনে শুভ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে। নিপা চৌধুরী বলেন, শাস্ত্রীয় সঙ্গীতকে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ অবদান আছে এবং তারা এক্ষেত্রে কাজ করে চলেছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আজকের যে সংযোগ, তা অনন্য। নারায়ণ চন্দ্র শীল বলেন, সঙ্গীত বর্তমানে একটি দুঃসময় পার করছে। এখন রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলসঙ্গীত, দেশাত্মবোধক গান, লোকগীতি, বাউল গানকে ফিউশন করে সামনে আনা হচ্ছে। কিন্তু একটি সৃষ্টির মাঝে অন্য একটি সুরের প্রয়োগকৃত ফিউশন গ্রহণযোগ্য নয়। একইসঙ্গে ফিউশনের কারণে গানের বাণীরও অবক্ষয় হচ্ছে। এমন সময়ে এ উৎসব শুদ্ধ সংস্কৃতিচর্চায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। উদ্বোধনী আলোচনা শেষে সম্মেলক সঙ্গীত নিয়ে মঞ্চে হাজির হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষার্থী শিল্পীরা। প্রিয়াঙ্কা গোপ ও স্বরূপ হোসেনের পরিচালনায় তারা দুটি রাগ পরিবেশন করেন। এরপর গান শোনান অসিত দে, স্বর্ণময় চক্রবর্তী, মোহাম্মদ শোয়েব, ঋতুপর্ণা চক্রবর্তী এবং শ্রীলঙ্কার ড. চিন্তাক প্রগীত মেড্ডেগোডা। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আশ্রয়ে হৃদয় রাঙান শ্রোতাদের। সঙ্গীতায়োজনে এস্রাজ পরিবেশন করেন অধ্যাপক শুভায়ু সেন মজুমদার এবং সেতার পরিবেশন করেন ফিরোজ খান। সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত চলে শুদ্ধ সঙ্গীতের এ উৎসব।
×