ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হোল্ডার-চেইসে বিধ্বস্ত ইংল্যান্ড

প্রকাশিত: ১০:১২, ২৮ জানুয়ারি ২০১৯

  হোল্ডার-চেইসে বিধ্বস্ত ইংল্যান্ড

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অধিনায়ক জেসন হোল্ডারের ইতিহাস গড়া ব্যাটিং আর ‘পার্ট টাইম’ বোলার রোস্টন চেইসের ঘূর্ণিবিষে নীল ইংল্যান্ড ব্রিজটাউন টেস্টে হেরে গেছে ৩৮১ রানে। জয়ের জন্য ৬২৮ রানের অসম্ভব লক্ষ্যে নামা জো রুটের দল চতুর্থদিন দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট ২৪৬ রানে। ১০ উইকেটের ৮টিই নিয়েছেন অকেশনাল স্পিনার চেইস। প্রথম ইনিংসে মাত্র ৭৭ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল সফরকারীরা। উইন্ডিজ ২৮৯ ও ৪১৫/৬ ডিক্লেয়ার। ইতিহাসের মাত্র তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আট নম্বর বা তার নীচে নেমে অবিশ্বাস্য ডাবল সেঞ্চুরির জন্য ম্যাচসেরা হয়েছেন অধিনায়ক হোল্ডার (দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ২০২)। রানের হিসেবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়। স্মরণীয় এ জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ১-০তে এগিয়ে গেল ক্যারিবীয়রা। এ্যান্টিগায় বৃহস্পতিবার শুরু দ্বিতীয় টেস্ট। ম্যাচের ভাগ্য অনেকটা ঠিক হয়ে গিয়েছিল জেসন হোল্ডারের ডাবল সেঞ্চুরির পরই। দেখার ছিল ইংল্যান্ড কতটা লড়াই করতে পারে। চেইসের জাদুকরি বোলিংয়ের সামনে সেটিও করতে পারেনি ইংলিশরা। অফস্পিনে ৬০ রানে ৮ উইকেট নিয়েছেন চেইস। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্টে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন। এরপর আর সেই স্বাদ পাচ্ছিলেন না। দলে তার মূল কাজ ব্যাটিং। ২৭তম টেস্টে এসে আবার শুধু ৫ উইকেটই নেননি, ক্যারিবীয় ইতিহাসের ষষ্ঠ সেরা বোলিংয়ের কীর্তিও গড়েছেন। চেইসের ছোবলের আগে এই ইনিংসে অতিথিদের লড়াইয়ের ইঙ্গিত ছিল। বিনা উইকেটে ৫৬ রান নিয়ে দিন শুরু করে ররি বার্নস ও কিটন জেনিংস লড়াই চালিয়ে যান। ৮৫ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গেন ফাস্ট বোলার আলজারি জোসেফ। ফিরিয়ে দেন ৮৪ বলে ১৪ রান করা জেনিংসকে। দারুণ খেলতে থাকা বার্নসকে বোল্ড করে চেইস শুরু করেন শিকার। চতুর্থ টেস্ট খেলতে নামা বাঁহাতি ওপেনার ১৫ চারে করেছেন ক্যারিয়ার সেরা ৮৪ রান। এরপর আর বড় কোন জুটি গড়ে ওঠেনি। জো রুট, বেন স্টোকসরা থিতু হলেও লম্বা সময় উইকেটে টিকতে পারেননি। তিনে নামা জনি বেয়ারস্টোকে ৩০ রানে ফিরিয়েছেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। পরের সবকটি উইকেট নিয়েছেন চেইস একাই। ৩১ রানে শেষ ৬ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। চেইস ৮/৬০- ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে এটি কোন ক্যারিবিয়ান বোলারের দ্বিতীয় সেরা বোলিং। এই ব্রিজটাউনেই ১৯৯০ সালে ৪৫ রানে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন কার্টলি এ্যামব্রোস। সেই হিসেবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে এটি কোন ক্যারিবিয়ান স্পিনারের সেরা বোলিং। টেস্টে এক ইনিংসে ৮ উইকেট নেয়ার পাশাপাশি ক্যারিয়ারে অন্তত একটি সেঞ্চুরি করা প্রথম ক্যারিবীয় ক্রিকেটারও এখন চেস। ২৬ বছর বয়সী কীর্তি গড়েছেন আরও। টেস্ট ম্যাচে প্রথম ইনিংসে বল না করে দ্বিতীয় ইনিংসে সেরা বোলিং ফিগারের রেকর্ডটি এখন তার দখলে। এর আগে রেকর্ডটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার অফস্পিনার হিউ ট্রেম্বলের (৭/২৮), ১৯০৪ সালে মেলবোর্নে। স্কোর ॥ ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস- ২৮৯/১০ (১০১.৩ ওভার; ব্রেথওয়েট ৪০, ক্যাম্পবেল ৪৪, হোপ ৫৭, ব্রাভো ২, চেইস ৫৪, হেটমায়ার ৮১, জোসেফ ০, গ্যাব্রিয়েল ০*; এ্যান্ডারসন ৫/৪৬, কুরান ০/৫৪, স্টোকস ৪/৫৯, মঈন ১/৫৯, রশিদ ০/৫৬, রুট ০/১০) ও দ্বিতীয় ইনিংস- ৪১৫/৬ ডিক্লেয়ার (১০৩.১ ওভার; ব্রেথওয়েট ২৪, ক্যাম্পবেল ৩৩, হোপ ৩, ব্রাভো ১, চেইস ০, হেটমায়ার ৩১, ডাওরিচ ১১৬*, হোল্ডার ২০২*; এ্যান্ডারসন ০/৫৮, কুরান ১/৬৯, মঈন ৩/৭৮, স্টোকস ২/৮১, জেনিংস ০/২৯)। ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস- ৭৭/১০ (৩০.২ ওভার; বার্নস ২, জেনিংস ১৭, বেয়ারস্টো ১২, রুট ৪, স্টোকস ০, বাটলার ৪, মঈন ০, ফোকস ২, কুরান ১৪, রশিদ ১২, এ্যান্ডারসন ০*; রোচ ৫/১৭, গ্যাব্রিয়েল ১/১৫, হোল্ডার ২/১৫, জোসেফ ২/২০) ও দ্বিতীয় ইনিংস- ২৪৬/১০ (৮০.৪ ওভার; বার্নস ৮৪, জেনিংস ১৪, বেয়ারস্টো ৩০, রুট ২২, স্টোকস ৩৪, বাটলার ২৬, মঈন ০, ফোকস ৫, কুরান ১৭, রশিদ ১, এ্যান্ডারসন ৪*; রোচ ০/৫৮, গ্যাব্রিয়েল ১/৫৫, হোল্ডার ০/২৪, চেইস ৮/৬০, জোসেফ ১/৩৫)। ফল ॥ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩৮১ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ জেসন হোল্ডার (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)। সিরিজ ॥ তিন টেস্ট সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১-০তে এগিয়ে।
×