স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোরে এমপির বাসভবন ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বাসভবন এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ ছয়টি স্থানে বোমা হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার মধ্যরাতে (আড়াই টার দিকে) পরপর এই বোমা হামলা হয়েছে। এতে কেউ হতাহত হয়নি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরিত বোমার আলামত ও কৌটা উদ্ধার করেছে। ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ।
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপূর্ব হাসান জানিয়েছেন, শনিবার রাত আড়াইটার দিকে যশোর-৩ আসনের এমপি কাজী নাবিল আহমেদের বাসভবনে বোমা হামলা হয়েছে। এরপর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন চাকলাদারের মালিকানাধীন হোটেলে বোমা বিস্ফোরণ হয়। এর আগে শাহীন চাকলাদারের চাচাত ভাই যুবলীগ নেতা তৌহিদ চাকলাদার ফন্টুর বাসভবনে বোমা হামলা করা হয়। এরপর চাকলাদার ফিলিং স্টেশনে বোমা হামলার খবর পান তারা। এর আগে শহর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমাম হাসান লাল ও যুবলীগ নেতা রাজিবুল আলমের বাসভবনে বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে। প্রত্যেক স্থান থেকে দুটি করে ১২টি বোমার কৌটা ও বিস্ফোরিত বোমার আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।
ওসি বলেন, কারা বোমা হামলা করেছে সেটা তারা তদন্ত করছেন। এ ঘটনায় কেউ আটক হয়নি।
ক্ষতিগ্রস্ত চাকলাদার ফিলিং স্টেশনের ক্যাশিয়ার ইলিয়াস হোসেন জানান, রবিবার ভোর চারটার দিকে এক দল দুর্বৃত্ত মুখে কাপড় বেঁধে ফিলিং স্টেশনে এসে বোমা হামলা করে। তারা সেখানে অবস্থানরত পরিবহন ভাংচুর ও ফিলিং স্টেশনের গ্লাস ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে। এক পর্যায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে ক্যাশ বাক্স থেকে এক লাখ ৫০ হাজার ৫১২ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
এদিকে, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়িতে একযোগে বোমা হামলার প্রতিবাদে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। রবিবার সকালে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব বোমা হামলার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের আটকের আল্টিমেটাম দেয়া হয়। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে বলে সমাবেশ থেকে জানানো হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগের নিবেদিত নেতাকর্মীদের যারা হত্যা করেছে সেসব সন্ত্রাসী এই বোমা হামলায় জড়িত। ফিঙ্গে লিটন, ম্যানসেল বাহিনীর সদস্যরা একযোগে এই হামলা চালায়। নজরুল ইসলাম, আবদুল মান্নান, মনোয়ার হোসেন ইমনসহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের নিবেদিত নেতাকর্মীদের যারা হত্যা করেছে তারা এখন প্রকাশ্যে। এরাই যশোর শহরকে অশান্ত করার চক্রান্তের অংশ হিসেবে এই হামলা চালিয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই সন্ত্রাসীদের আটক করতে হবে। তা না হলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের নির্দেশে নেতাকর্মীরা রাজপথে নামবে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি একেএম খয়রাত হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর জহুরুল ইসলাম, দফতর সম্পাদক মাহমুদ হাসান বিপু, সদস্য শাহারুল ইসলাম, কবিরুল আলম, ইঞ্জিনিয়ার কাজী আলমগীর হোসেন, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান মাহামুদ বিপুল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল, যশোর পৌরসভার কাউন্সিলর হাজী সুমন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি নেয়ামত উল্লাহ, সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান কবির শিপলু, নুরুল্লাহ খান লিখন, বর্তমান সভাপতি রওশন ইকবাল শাহী, সাধারণ সম্পাদক ছালছাবিল আহমেদ জিসান, পৌর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান রনি প্রমুখ।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: