ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

শিক্ষার্থীদের নান্দনিক পরিবেশনার গীতি নৃত্যালেখ্য বুদ্ধু ভুতুম

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ২৮ জানুয়ারি ২০১৯

 শিক্ষার্থীদের নান্দনিক পরিবেশনার গীতি নৃত্যালেখ্য  বুদ্ধু ভুতুম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঘোড়া, খরগোশ, বানর ও পেঁচার রূপ ধরে মঞ্চজুড়ে নেচে বেড়ায় শিল্পীরা। নাচের সমান্তরালে উচ্চারিত হয় সংলাপ। সেই সংলাপের রেশ ধরে গীত হয় গান। এগিয়ে যায় ময়ূরপঙ্খী নাও। দর্শনার্থীদের নয়নে মুগ্ধতা ছড়ায় কল্পলোকের গল্পগাথা। এভাবেই নান্দনিকতার পথরেখায় পরিবেশিত হয় ‘বুদ্ধু ভুতুম’ শীর্ষক গীতিনৃত্যালেখ্য। আর রূপকথার গল্প ঠাকুরমার ঝুলির অন্তর্ভুক্ত গল্পটি নৃত্য-গীত ও অভিনয়ের সম্মিলনে উপস্থাপন করে ভিকারুননিসা নূন স্কুল এ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী শিল্পীরা। রাজধানীর নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে রবিবার সকালে মঞ্চস্থ হয় গীতিনৃত্যালেখ্যটি। হাজার অভিভাবকের উপস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে স্থাপিত মঞ্চে পরিবেশিত হয় গীতিনৃত্যালেখ্যটি। শিক্ষার্থী শিল্পীদের অনবদ্য নাচের সমান্তরালে অভিনয় আর সঙ্গীতের প্রয়োগে পরিবেশনাটি পৌঁছে যায় ভিন্ন মাত্রায়। দেড় ঘণ্টার প্রযোজনাটি দর্শকদের মননে ছড়িয়েছে ভাললাগার অনুভব। সেই সুবাদে মুহুর্মুহু করতালিতে অভিনন্দিত হয়েছে পরিবেশনায় অংশ নেয়া শতাধিক শিক্ষার্থী শিল্পী। অভিশপ্ত এক রাজপরিবারের দুই রাজপুত্রকে কেন্দ্র করে এগিয়েছে রূপকথার গল্পনির্ভর প্রযোজনাটির কাহিনী। অভিশাপের কারণে রাজা-রানীর সাত ছেলের মধ্যে বুদ্ধু ও ভুতুম নামের দুই রাজপুত্র পরিণত হয় বানর আর পেঁচায়। তবে পশুতে পরিণত হলেও অক্ষুণ্ন থাকে রাজপুত্রদ্বয়ের ভেতরের মানবিকতা। তাই যে কারও বিপদে-আপদে তারাই ছুটে যায় সবার আগে। অন্য ভাইরা হত্যা করতে চায় ভুতুম ও বুদ্ধুকে। উল্টোদিকে সেই ভাইরাই নদীতে পড়ে ডুবে যেতে থাকলে তাদের উদ্ধার করে বানর ও পেঁচারূপী ভুতুম ও বুদ্ধু। একসময় অভিশাপমুক্ত হয় মানবহিতৈষী ভুতুম ও বুদ্ধু। বানর ও পেঁচা থেকে আবার তারা রূপান্তরিত হয় রাজপুত্রে। পাতালপুরী থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে দুই রাজকন্যা কলাবতী ও হীরামতিকে। সেই দুই রাজকন্যার সঙ্গে প্রণয়সূত্রে আবদ্ধ হয় ভ্রাতৃদ্বয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ হাসিনা বেগমের সঙ্গে অতিথি হিসেবে পরিবেশনাটি উপভোগ করেন বরেণ্য নৃতশিল্পী লায়লা হাসান। অতিথির বক্তব্যে পরিবেশনার প্রতি মুগ্ধতার প্রকাশে লায়লা হাসান বলেন, প্রযোজনাটিতে অংশ নেয়া শিল্পীরা নাচের অভিব্যক্তি থেকে শুরু করে সঙ্গীত পরিবেশনা ও অভিনয়ে দারুণ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। মনের ভেতর সুন্দর একটা অনুভূতি সঞ্চার করেছে। এককথায় অসাধারণ ছিল তাদের পরিবেশনা। মঞ্চটি বড় হলে প্রযোজনাটি আরও বেশি পরিস্ফূটিত হতো। প্রযোজনাটির পরিচালনা করেছেন কোরিওগ্রাফার সাইফুল ইসলাম ইভান। নৃত্য পরিবেশনায় অংশ নেয় আদিবা আঞ্জুম অন্তিপা, লাজ, মাইসুন, কৃতি, অরিন, আনিকাসহ ৫২ শিক্ষার্থী শিল্পী। সঙ্গীত পরিবেশনায় অংশ নিয়েছে ৬২ শিক্ষার্থী শিল্পী। অভিনয়ে অংশ নিয়েছে ১৮ জন শিক্ষার্থী শিল্পী। সব মিলিয়ে ১২২ শিল্পীতে সজ্জিত প্রযোজনাটির সমন্বয় করেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষিকা সৈয়দা তানজীনা ইমাম। শিল্পীদের অভিনয় প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন তামান্না তিথি। সঙ্গীত পরিচালনার কাজটি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকবৃন্দ।
×