ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বৈলগাঁও চা বাগান এবার সাড়ে তিন লাখ কেজি চা পাতা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা

প্রকাশিত: ০৪:২১, ২৮ জানুয়ারি ২০১৯

বৈলগাঁও চা বাগান এবার সাড়ে তিন লাখ কেজি চা পাতা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা

জোবাইর চৌধুরী, বাঁশখালী ॥ চট্টগ্রামের বাঁশখালী বৈলগাঁও চা বাগান ক্লোন চা উৎপাদন করায় এই বাগানটি বর্তমানে দেশের অন্যতম শীর্ষ স্থানে রয়েছে। বাঁশখালীতে অবস্থিত ৩ হাজার ৪শ’ ৭২.৫৩ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত এই চা বাগানটির রয়েছে বিশাল এক ইতিহাস। যা পর্যালোচনা করে দেখা যায় বাগানটির প্রতিষ্ঠার সঠিক তথ্য কারও জানা নেই, লোক মুখে জানা গেছে যে, ১৯১২ সালে ইংরেজরা বাগানটি শুরু করেন তখন বাগানের ম্যানেজার ছিলেন মি. হিগিন। মাত্র ৮ (আট) একর চা বাগানটি বাংলাদেশ চা বোর্ড ১৯৯২ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তিপত্র অনুযায়ী চাঁদপুর বেলগাঁও চা বাগানটি ব্যবস্থাপনার জন্য রাগীব আলীর স্বত্বাধিকারী বাঁশখালী টি কেম্পানির কাছে হস্তান্তর করেন। অতপর ২০০৩ সালে বাঁশখালী টি কেম্পানির সমূদয় শেয়ার ব্র্যাক ক্রয় করে এবং কোম্পানি আইন ১৯৯৪ এর বিধান অনুযায়ী এ কোম্পানিকে ব্র্যাক বাঁশখালী টি কোম্পানি লিঃ নামকরণ করেন। ব্র্যাক চা বাগানটির মালিকানাস্বত্ব গ্রহণ করার পর ২০০৪ সালে চা কারখানা চালু করে। অতপর চাঁদপুর বেলগাঁও চা বাগানের মালিকানা ব্র্যাক, বাঁশখালী টি কোম্পানি লিমিটেডের কাছ থেকে গত ২০১৫ সালের ৫ নবেম্বর সিটি গ্রুপ পরিচালিত ফজলুর রহমান গংয়ের ভ্যান ওমেরান ট্যাংক টার্মিনাল (বাংলাদেশ) লিমিটেড এবং ইন্টারন্যাশনাল অয়েল মিলস্ লিমিটেড ক্রয় করেন। এ শ্রেণীভুক্ত চা বাগানটিতে ম্যানেজার- ১ জন, সহকারী ম্যানেজার ৪ জন, স্টাফ ২৬ জন, শ্রমিক ৬০০ জন। সারা বাংলাদেশে ১৬২টি চা বাগানের মধ্যে বাঁশখালী বৈলগাঁও চা বাগানটি গুণগতমান অনুযায়ী ১২তম এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলের মধ্যে ৩য় স্থানে রয়েছে। বর্তমানে চা বাগান এলাকায় ৬৩৮ একর আবাদী এবং ৫০ একর জায়গায় আগর চাষ করা হয়েছে। চাঁদপুর বেলগাঁও চা বাগানে শতকরা ৯০ ভাগ ক্লোন চা এবং চায়ের গুণগতমান ভাল। চায়ের উৎপাদন সম্পূর্ণভাবে আবহাওয়া নির্ভর। সে কারণে চা বাগানের উপযোগী বৃষ্টিপাতের উপর উৎপাদনের তারতম্য হয়। বাগানে ৪০-৫০টি বন্য হাতি বিচরণের ফলে শ্রমিকদের কাজের বিঘ্ন ঘটে এবং প্রায়ই নতুন আবাদীর চারাসহ নার্সারির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে। ২০০২ সালে ৮০ হাজার কেজি চা উৎপাদন দিয়ে কার্যকর্ম শুরু করা বাগানটি চলতি বছরে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৫০ হাজার কেজি। তবে তা অনেক ক্ষেত্রে বৃষ্টির কারণে বিঘ্ন হয়ে থাকে। প্রতিবছর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে চা পাতা উৎপাদন কম হয়ে থাকে। চা বাগানের অভ্যন্তরে ৬ শতাধিক কর্মচারী নাগরিক সুযোগ-সুবিধা, স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষাসহ অন্য সার্বিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে বলে জানান চা বাগানের ম্যানেজার আবুল বাশার। চা বাগান কর্তৃপক্ষ নিজস্ব উদ্যোগে প্রতিদিন বাগানের সর্বত্র আধুনিক উপায়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রয়েছে। বর্তমান শীত মৌসুম আসতে না আসতেই এই চা বাগানে পর্যটকরা ভিড় জমাচ্ছে। চা বাগানের যাতায়াতের সড়কটি যথাযথ ভাবে সংস্কার না হওয়ায় এখানে ঘুরতে আসা সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে সকলেই নানাভাবে বেকায়দায় পড়তে হয়। তবে সড়ক সংস্কার শুরু হলে ও তা অদৃশ্য কারণে বন্ধ রয়েছে। বাগানের সড়কটি জরুরী ভিত্তিতে সংস্কারের জন্য বাঁশখালীর সাংসদ আলহাজ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
×