ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মধ্যম আয়ের দেশের জন্য শ্রম অধিকার বড় চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ২৮ জানুয়ারি ২০১৯

 মধ্যম আয়ের দেশের জন্য শ্রম অধিকার বড় চ্যালেঞ্জ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন, বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতে অভূতপূর্ব সাফল্যের কারণে শ্রম অধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা বাড়ছে। শ্রমিকদের মজুরি, কর্মপরিবেশ এবং ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার নিয়ে জোরালোভাবে আলোচনা চলছে। এসব বিষয় নিয়ে দেশের ভেতর থেকে যতটা না দাবি জানানো হচ্ছে তার চেয়েও বাইরের থেকে বেশি আওয়াজ আসছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মধ্যম আয়ের দেশের জন্য শ্রম অধিকার একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্রেতাদের নিয়ে গঠিত সংগঠন এ্যাকর্ড বাংলাদেশে আরও বেশি সময় কাজ করার দাবি তুলছে। শুধু তাই নয়, ট্রেড ইউনিয়ন করতে ১০ শতাংশ শ্রমিকের সমর্থন, ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন সহজীকরণ ও শ্রমিক নেতাকর্মীদের হেনস্থা না করার দাবিও তুলেছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। সরকার ১০ শতাংশ শ্রমিকের সমর্থনের বিষয়ে একমত না হয়ে ২০ শতাংশে রাজি হয়েছে এবং এ সংক্রান্ত শ্রম আইন সংশোধন করা হয়েছে। এ্যাকর্ডের কাজ করার বিষয়টি বর্তমানে আদালতে রয়েছে এবং তাদের আগামী এক মাস কাজ করার অনুমতি দিয়েছে আদালত। নিবন্ধন এবং হেনস্থার বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন হলেও বড় ধরনের কোন পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এটি প্রবৃদ্ধির সমস্যা। দেশ যত এগিয়ে যাবে শ্রম অধিকারের বিষয়গুলো তত বেশি পরিলক্ষিত হবে।’ শ্রম অধিকার মধ্যম আয়ের দেশের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে এই দাবির বিষয়টি নিয়ে বাইরের দেশগুলো যতটা সরব অভ্যন্তরীণ শক্তিগুলো ততটা নয়। এই উদ্যোগ সরকার, উদ্যোক্তা ও শ্রমিকদের মিলে করা উচিত। এটি নতুন কোন বিষয় নয় কারণ পৃথিবীর অনেক দেশ এই ধাপ পার হয়ে মধ্যম আয়ের দেশ হয়েছে।’ তিনি মানসিকতার সমালোচনা করে বলেন, ‘কোন কিছু অপ্রীতিকর ঘটলে আমরা অন্যকে দোষ দেই বা ষড়যন্ত্রের গন্ধ খুঁজি। আমাদের এই ধ্যান ধারণা থেকে বের হয়ে এসে সমস্যার সঠিক কারণ চিহ্নিত করতে হবে।’ বাংলাদেশ যদি একটি সম্মানজনক মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে পরিচিত হতে চায় তবে আমাদের এই চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলা করতে হবে। সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মাদ তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘পশ্চিমা দেশগুলো শ্রম অধিকার নিয়ে বাংলাদেশের ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে আমরা শুল্ক সুবিধা পাই না। সে কারণে তাদের নিয়ে আমাদের চিন্তাটা কম।’ চীন, কম্বোডিয়া বা ভিয়েতনামের শ্রম পরিস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘সেখানকার পরিস্থিতি যে বাংলাদেশে থেকে অনেক বেশি উন্নত সে রকম নয়। কিন্তু তাদের নিয়ে এত বেশি কথা হয় না কারণ ওইসব দেশে রানা প্লাজার মতো ঘটনা ঘটেনি। আমাদের সুশাসনের দিকে আরও বেশি নজর দিতে হবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য।’
×