ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শান্তি আলোচনায় অগ্রগতি

প্রকাশিত: ০৪:১০, ২৮ জানুয়ারি ২০১৯

শান্তি আলোচনায় অগ্রগতি

যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবান শনিবার বলেছে, ১৭ বছরের আফগানিস্তান যুদ্ধ অবসানে আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। তবে অনেক বিষয় এখনও অমীমাংসিত থেকে গেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আফগানিস্তানে তার দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ যুদ্ধ শেষ করতে চান। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর হামলার কয়েকদিন পর মার্কিন নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী এ যুদ্ধ শুরু করে। এএফপি। ট্রাম্প প্রশাসন আফগান যুদ্ধ অবসানের উপায় নিয়ে আলোচনার দায়িত্ব জালমে খলিলজাদকে দিয়েছে। তিনি সম্প্রতি কাতারে তালেবানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনির্ধারিত ছয় দিনের আলোচনা শেষ করেছেন। খলিলজাদ টুইটারে লিখেছেন, ‘আগের যে কোন সময়ের চেয়ে এবারের বৈঠকগুলো অনেক বেশি ফলপ্রসূ হয়েছে। আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে অগ্রগতি হয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ের আলোচনা শীঘ্রই শুরু হবে। এখনও অনেক কিছু নিয়ে কাজ করা বাকি আছে। মতৈক্য না হওয়া পর্যন্ত তাকে অগ্রগতি গণ্য করা যায় না, আন্তঃ আফগান সংলাপ এবং একটি সর্বাত্মক যুদ্ধ বিরতি পরবর্তী আলোচ্যসূচীর মধ্যে থাকবে।’ খলিলজাদ আলোচনার সর্বশেষ অগ্রগতি নিয়ে কথা বলতে কাবুল রওনা হয়েছেন। তালেবান প্রতিনিধিদের সঙ্গে তার কি কথা হয়েছে এ সম্পর্কে বিস্তারিত প্রকাশ না করলেও জানা গেছে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের বিনিময়ে সেখানে বিদেশী চরমপন্থীদের আশ্রয় দেয়া হবে না, তালেবানের কাছে এমন প্রতিশ্রুতি চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এটি আফগানিস্তানে মার্কিন আগ্রাসনের অন্যতম কারণ ছিল। ট্রাম্প সম্প্রতি আফগানিস্তানে মোতায়েন ১৪ হাজার মার্কিন সৈন্যের সংখ্যা কমিয়ে অর্ধেকে নিয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছেন। তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, মার্কিন প্রতিনিধির সঙ্গে তাদের আলোচনায় কিছু অগ্রগতি হয়েছে। তবে কাবুলের সঙ্গে অস্ত্রবিরতি নিয়ে আলোচনার খবর সত্য নয়। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘যেহেতু আলোচনার বিষয়বস্তু বেশ জটিল ও স্পর্শকাতর তাই ভবিষ্যত আলোচনায় বিষয়গুলো আবার আসবে।’ তবে একজন সিনিয়র তালেবান খলিলজাদের সঙ্গে আলোচনা নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন। উল্লেখ্য, খলিলজাদের জন্ম আফগানিস্তানে। তিনি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের সময় কূটনীতিকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ওই তালেবান কমান্ডার নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে টেলিফোনে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমাদের অনেক দাবি মেনে নিয়েছে। অনেক বিষয় আলোচনা হয়েছে। অনেক বিষয় এখন আলোচনা বাকি।’ তিনি বলেন, যেসব বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য এখনও আছে তার একটি হলো আফগান সরকার। এসব নিয়ে মতৈক্যে পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান। তালেবান এর আগে আশরাফ গনি সরকারের সঙ্গে কোন ধরনের সমঝোতা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। গনি সরকারের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি রয়েছে। আফগানিস্তানের কার্যত প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ সম্প্রতি হতাশা ব্যক্ত করে বলেছিলেন তালেবান শান্তি প্রক্রিয়া থেকে কাবুল সরকারকে বাদ দেয়ার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, প্রক্সি শান্তি প্রক্রিয়া টেকসই হবে না। এদিকে আশরাফ গনি বৃহস্পতিবার বলেন, ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত আফগান নিরাপত্তার বাহিনীর প্রায় ৪৫ হাজার সদস্য নিহত হয়েছে। এসব ঘটনা নিরাপত্তা বাহিনীর মনোবল দুর্বল করে দিতে পারে। গনি চলতি বছর জুলাইয়ে পুনরায় নির্বাচনে দাঁড়াবেন। এ সময়ের মধ্যে কোন যুদ্ধবিরতি না হলে তালেবানের হামলা আরও বেড়ে যেতে পারে। কাতারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় মোল্লা আবদুল গনি বারাদারকে তালেবান মুখ্য আলোচক করেছে।
×