ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘শেখ হাসিনা তাঁত পল্লী’র প্রস্তাবিত জমিতে অবৈধ বাড়ি নির্মাণ

প্রকাশিত: ০১:২৪, ২৭ জানুয়ারি ২০১৯

‘শেখ হাসিনা তাঁত পল্লী’র প্রস্তাবিত জমিতে অবৈধ বাড়ি নির্মাণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ও শরীয়তপুর ॥ পদ্মা সেতু সংলগ্ন মাদারীপুরের শিবচর ও শরীয়তপুরের জাজিরায় ১৯‘শ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে শেখ হাসিনা তাঁত পল্লী। এই প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমিতে ক্ষতিপূরণ বাবদ অবৈধ উপায়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতে জমির মালিক ও এক শ্রেণির দালাল তৎপর হয়ে উঠেছে। তারা প্রকল্পের প্রস্তাবিত জমিতে রাতারাতি শত শত ঘর-বাড়িসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করছে। শনিবার প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগ সংসদীয় দলের সাধারণ সম্পাদক নূর-ই-আলম চৌধুরী এমপি। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, গত বছর ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘শেখ হাসিনা তাঁত পল্লী’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯‘শ ১১ কোটি টাকা। প্রকল্পটির জন্য মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কুতুবপুরে ৬০ একর ও শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকায় ৪৮ একর জায়গা নির্ধারণ করা হয়। এই প্রকল্পে অসংখ্য ৬তলা বিশিষ্ট ভবনে প্রত্যেক তাঁতীর জন্য ৬‘শ ফুটের কারখানা ও ৮‘শ ফুটের মধ্যে আবাসন সুবিধা থাকবে। সরকারের পক্ষ থেকে সুতা রংসহ কাঁচামালের সুবিধা দেয়া হবে। নির্মিত হবে আন্তর্জাতিক মানের শো-রুম। প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। তাঁতীদের ছেলে মেয়েদের জন্য থাকবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এরই মধ্যে মাদারীপুর ও শরীয়তপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট উপজেলা ভূমি অফিসে রেকর্ডি ভূমির মালিকদের দাগ ভিত্তিক তথ্য চাওয়া হয়েছে। এ সংবাদ জাজিরার নাওডোবা ও শিবচরের কুতুবপুরের প্রকল্প এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এই সুযোগে সংশ্লিষ্ট জমির মালিকরা এক শ্রেণীর দালালের যোগসাজসে প্রকল্প এলাকায় নতুন করে শত শত ঘর-বাড়িসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ ও গাছপালা রোপণ শুরু করেছে। প্রতিদিন অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে ক্ষতিপূরণে বাড়তি বিলের আশায়। সরকারের কোটি কোটি টাকা অবৈধ পন্থায় লুটপাটের মহোৎসবের আয়োজন শুরু করেছে অর্থ লোভিরা। শনিবার বিকেলে স্থানীয় সংসদ সদস্য নূর-ই-আলম চৌধুরী এলাকায় অবৈধ স্থাপনা জনসম্মুক্ষে অবাধে উঠতে দেখে মাদারীপুর ও শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও তাঁতবোর্ডের উদাসীনতাকে দায়ী করে প্রকল্পটি অন্যত্র স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। এসময় তিনি এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রয়োজনে জাতীয় সংসদে বিষয়টি উত্থাপন করে প্রধানমন্ত্রীকে অবগত করার হুশিয়ারি দেন। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি জেলা উপজেলা প্রশাসনের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে ব্যবস্থা না নেয়ার কারণ জানতে চান। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সংসদীয় দলের সাধারণ সম্পাদক নূর-ই-আলম চৌধুরী এমপি ক্ষোভ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নামে ‘শেখ হাসিনা তাঁত পল্লী’এর জন্য প্রস্তাবিত জমি। এই জমিতে দূর্নীতির আশ্রয় নিয়ে নতুন নতুন ঘর-বাড়িসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করে জমি অধিগ্রহণের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এসব দেখেও মাদারীপুর ও শরীয়তপুর জেলা প্রশাসন ও তাঁতবোর্ড নীরব রয়েছে। আমি সংসদ সদস্য হিসেবে মনে করি এখানে তাঁত পল্লী করা ঠিক হবে না। আমি সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।’
×