ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজধানীর বাজার

চালের দাম কমেছে, নিত্যপণ্যের মূল্যেও স্বস্তি

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ২৬ জানুয়ারি ২০১৯

 চালের দাম কমেছে, নিত্যপণ্যের মূল্যেও স্বস্তি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ চাল সবজি ও মাছ-মাংসের দাম স্বাভাবিক থাকায় নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি বিরাজ করছে। গত এক বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে বাজারে। ভোগ্যপণ্য বিশেষ করে ভোজ্যতেল, চিনি, আটা ও পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক থাকায় বাজার পরিস্থিতি নিয়ে ভোক্তাদের সন্তুষ্টি রয়েছে। চলতি জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে চালের দাম বেড়ে গেলেও সরকারের বিশেষ মনিটরিংয়ের ফলে মূল্য হ্রাস পেয়েছে। মোটা চাল স্বর্ণা ও চায়না বিক্রি হচ্ছে ৩৮-৪২ টাকায়। এছাড়া উন্নত মানের সরু মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬৪ টাকায়। মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা ৪৬-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। শুক্রবার রাজধানীর কাপ্তান বাজার, কাওরান বাজার, ফার্মগেট কাঁচা বাজার, মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেট এবং মিরপুর সিটি কর্পোরেশন বাজারের দ্রব্যমূল্যের তথ্যে দেখা যায় অধিকাংশ নিত্যপণ্যের দাম এখন পড়তির দিকে রয়েছে। বিশেষ করে শীতের সবজিতে ঠাসা রাজধানীর বাজার। দামও কম। আর এক মাসের মধ্যে বাজারে আসবে গ্রীষ্মকালীন সবজি। কৃষকের মাঠে সেই সবজি রোপণের প্রস্তুতি চলছে। শীতের বিদায়লগ্নে সরবরাহ বাড়ায় দাম কমে গেছে সব ধরনের সবজির। দাম এত পড়ে গেছে যে, কৃষকের ন্যায্যদাম প্রাপ্তি নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে। কাওরান বাজারে সবজি কিনতে এসেছেন পূর্ব রাজা বাজারের বাসিন্দা নিয়ামত আলী। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, টাটকা সবজি পেতে তিনি প্রায় কাওরান বাজার থেকে সবজি কিনেন। তবে গত এক বছরের মধ্যে এখন সবচেয়ে কম দামে পাওয়া যাচ্ছে সবজি। প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ১০-১৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে ওই বাজারে খুচরা পর্যায়ে নতুন আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা, গাজর ২০-২৫ টাকা কেজি, প্রকার ও মানভেদে শিম ও বেগুন ২৫-৩০, কাঁচা টমেটো ২০ থেকে ২৫ টাকা ও পাকা টমেটো ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাওরান বাজারের সবজি বিক্রেতা মোঃ জসিম জনকণ্ঠকে বলেন, শীতের বিদায় সময়ে বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়ে। সাধারণত এ সময়টাতে সব ধরনের সবজির দাম হ্রাস পায়। তবে সরববরাহ বাড়া ও উৎপাদন ভাল হওয়ায় এবার দাম আরও বেশি হারে কমেছে। তিনি বলেন, সবজির দাম কমায় বাজারে স্বস্তি বিরাজ করছে। সাধারণত সবজির দাম বেড়ে গেলে অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। এদিকে, এছাড়া চলতি সপ্তায় পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দাম আরও কমেছে। জাত ও মানভেদে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ২০-২৫, আদা ৯০-১৩০ এবং রসুন ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে, মানভেদে আটা ২৭ থেকে ৩০ টাকা কেজি, সয়াবিন তেল লিটার ৮০ থেকে ১০০ টাকা, মশুর ডাল কেজি ৬০ থেকে ৯০ টাকা, মুগ ডাল ৯০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ সপ্তাহেও ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি হালি ৩২ থেকে ৩৫ টাকায়, চিনি ৪৮ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সবজির পাশাপাশি নিত্যপণ্যের বাজারে মাছ ও মাংসের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। দেশী জাতীয় মাছের সরবরাহ বেড়েছে। নদী, নালা, খালবিল ও হাওরের মাছ আসছে ঢাকায়। এছাড়া শীতে ও বাজারে ইলিশের সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। এ কারণে বাজারে মাছের দাম তেমন বাড়তে পারেনি। ৮০০ গ্রাম সাইজের প্রতি জোরা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকায়। এছাড়া ছোট সাইজের প্রতি জোরা ইলিশ ৬০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা পর্যায়ে। এছাড়া রুই মাছ ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, চিংড়ি ৬০০-১২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা দরে কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি গরুর মাংস ৪৭০ থেকে ৫০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, দেশী মুরগি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির মাংস প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পুরান ঢাকার কাপ্তান বাজারের মাছ বিক্রেতা আবুল হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, বাজারে মাছের সরবরাহ অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে এখন বেশি। বিশেষ করে দেশী জাতীয় শৌল, বোয়াল, কৈ, শিং কাতলা, টেংরা ও পাবদা মাছের সরবরাহ বেড়েছে। এ কারণে দামও কিছুটা কম।
×