ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সড়ক দুর্ঘটনায় তিন বছরে বিশ হাজার ৫শ’ নিহত

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ২৬ জানুয়ারি ২০১৯

 সড়ক দুর্ঘটনায় তিন বছরে বিশ হাজার  ৫শ’ নিহত

রাজন ভট্টাচার্য ॥ বিদায়ী বছরের ৩ এপ্রিল রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় রাজীবের বিচ্ছিন্ন হাত দুইবাসের মাঝে আটকে থাকার ছবি নিশ্চয় ভুলে যাওয়ার কথা নয়। যে ছবিটি দেশের মানুষের হৃদয় কাঁদিয়েছে। সবাই অনুভব করেছিলেন সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এখনই সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন। তাছাড়া সড়ক যে কতটা অনিরাপদ ছবিটা তা আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে রাস্তা পার হতে গিয়ে গৃহকর্মী রোজিনা গত ২০ এপ্রিল প্রথমে পা হারান পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যান। এরপর ২৯ জুলাই হোটেল রেডিসনের সামনে শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীকে জাবালে নূর পরিবহনের বাস চাপায় নিহত হওয়ার ঘটনায় দেশের প্রতিটি স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে। দেশব্যাপী নিরাপদ সড়কের আন্দোলন গড়ে উঠে। এই ঘটনায় নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই হস্তক্ষেপ করেছিলেন। নিরাপদ সড়কের জন্য দেয়া হয়েছিল ২৩ দফা নির্দেশনা। কিন্তু কাজের কাজ খুব একটা হয়নি। কাগজে কলমের সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নে কিছুদিন তোড়জোড় দেখা গেলেও সড়ক দুর্ঘটনা বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই রয়ে গেছে। সড়ক দুর্ঘটনার আরও কিছু ঘটনা গোটা দেশের মানুষের বিবেক নাড়া দিয়েছিল। এরমধ্যে গত বছরের ২৭ আগস্ট চট্টগ্রামের সিটি গেট এলাকায় বাসে অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে বিতর্কের জেরে রেজাউল করিম রনি নামে এক যাত্রীকে বাস থেকে ফেলে হত্যা করা হয়। ২৮ আগস্ট শিশু কন্যা আকিফাকে কোলে নিয়ে রাস্তা পারাপারের সময় কুষ্টিয়ায় বাসের ধাক্কায় মায়ের কোল থেকে পড়ে শিশু আকিফা নিহত হয়। এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গোটা বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছি। এরমধ্যে গত বছরের ২৩ জুন একদিনে ৬২ জনের প্রাণহানী ১৯৮ জন আহতের ঘটনা গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়। উদ্বেগজনক প্রাণহানীতে ২৫ জুন মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সড়ক নিরাপত্তায় বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশন দেন। এছাড়াও নতুন সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে নিরাপদ সড়কের অঙ্গীকার রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান সরকারের সামনে দুর্নীতি, মাদকমুক্ত সমাজ বড় চ্যালেঞ্জ হলেও নিরাপদ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলাও কম চ্যালেঞ্জ নয়। অনেকের মতে অন্যান্য দেশের মতো সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে এনে বিশ্বে নজির স্থাপন করাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিআরটিএর সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় এত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তবুও শৃঙ্খলার কোন চিত্রই আমরা দেখছি না। জাবির উপাচার্য ড. আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে আগে একটি কমিটি হয়েছিল। সেই কমিটির সদস্য ছিলেন অধ্যাপক জাফর ইকবাল, বুয়েট শিক্ষক সামছুল হক ও চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। সেই কমিটি যে রিপোর্ট জমা দিয়েছিল তা আজও প্রতিফলিত হয়নি। আমি অনুরোধ করব ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে সরকার যেন কার্যকরী উদ্যোগ নেয়। পাশাপাশি নতুন প্রজন্মকে সচেতন করতে স্কুল পর্যায়ের পাঠ্যপুস্তকে সড়ক নিরাপত্তা আইন ও সড়ক নিরাপত্তার বিষয় অন্তর্ভুক্ত করারও দাবি জানান তিনি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর জন্য উদ্যোগ নেয়া যথেষ্ট নয়। এই উদ্যোগ ফলপ্রসূ হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে আমাদের নজর দিতে হবে। বেপরোয়া চলাচলের মনোভাব কেন কমানো যাচ্ছে না, চাপ কেন কমানো যাচ্ছে না ও অসতর্কতা কেন থেকে যাচ্ছে এই তিনটি বিষয় আমাদের আন্তরিকতার সঙ্গে বিশ্লেষণ করে জবাবদিহিতা বাস্তবতা তৈরি করতে হবে।’ তিন বছরে সাড়ে ২০ হাজার মানুষের মৃত্যু ॥ যাত্রী কল্যাণ সমিতির গত তিন বছরের বার্ষিক সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এই সময়ে সাড়ে বিশ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তিন বছরে ১৪ হাজারের বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। আহতের সংখ্যা ৪৭ হাজারের বেশি। সমিতির বার্ষিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৮ সালে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়লেও হতাহতের সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় কিছুটা কম ছিল। ২০১৭ সালে বাংলাদেশে চার হাজার ৯৭৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় সাত হাজার ৩৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল, আহত হয়েছিল ১৬ হাজার ১৯৩ জন। ২০১৬ সালে আহতের সংখ্যা ১৫ হাজার ৯১৪। ২০১৮ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় সাত হাজার ২২১ জন নিহত ॥ যাত্রী কল্যাণে নিয়োজিত সামাজিক সংগঠন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে, বিদায়ী ২০১৮ সালে ৫ হাজার ৫১৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ২২১ জন নিহত ও ১৫ হাজার ৪৬৬ জন আহত হয়েছে। এ সময় রেলপথে ৩৭০টি দুর্ঘটনায় ৩৯৪ জন নিহত এবং ২৪৮ জন আহত হয়। নৌপথে ১৫৯টি দুর্ঘটনায় ১২৬ জন নিহত ও ২৩৪ জন আহত এবং ৩৮৭ জন নিখোঁজ হয়েছে। আকাশ পথে ৫টি দুর্ঘটনায় ৫৫ জন নিহত এবং ৩২ আহত হয়েছে। সড়ক, রেল, নৌ এবং আকাশ পথে সম্মিলিতভাবে ৬ হাজার ৪৮টি দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৭৯৬ জন নিহত এবং ১৫ হাজার ৯৮০ জন আহত হয়েছে। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই প্রতিবেদন তুলে ধরেন। এই সময় বক্তব্য রাখেন, তত্ত্ববধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, বিআরটিএর সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান, বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার জোতির্ময় বড়ুয়া, বিএফইউজের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইশতিয়াক রেজা, বিশিষ্ট সাংবাদিক কুদ্দুস আফ্রাদ, পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ইকরাম আহমেদ, নাগরিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্র সমূহে প্রচারিত সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। এতে ১ হাজার ২৫২ চালক-শ্রমিক, ৮৮০ জন শিক্ষার্থী, ২৩১ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৭৮৭ নারী, ৪৮৭ শিশু, ১০৬ শিক্ষক, ৩৪ সাংবাদিক, ৩৩ চিকিৎসক, ৯ প্রকৌশলী, ২ আইনজীবী এবং ১৯২ জন রাজনৈতিক নেতাকর্মী সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছে। উল্লেখিত সময়ে সংগঠিত দুর্ঘটনায় সর্বমোট ৭ হাজার ৩৫০টি যানবাহনে পরিচয় মেলেছে। যার মধ্যে ১৮ দশমিক ৯২ শতাংশ বাস, ২৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ কার-জীপ-মাইক্রোবাস, ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ অটোরিক্সা, ২৫ দশমিক ৩০ শতাংশ মোটরসাইকেল, ৩ দশমিক ৭২ শতাংশ ব্যাটারি চালিত রিক্সা, ৫ দশমিক ৮০ শতাংশ নছিমন করিমন ও হিউম্যান হলার সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। সংগঠিত দুর্ঘটনার ৪১ দশমিক ৫৩ শতাংশ গাড়ি চাপা, ২৯ দশমিক ৭২ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৬ দশমিক ১৮ শতাংশ খাদে পড়ে, .৫৫ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁছিয়ে এবং .৮৯ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। যাত্রী কল্যাণ সমিতির এই সংবাদ সম্মেলনের ঘণ্টা কয়েক আগে কুমিল্লায় চৌদ্দগ্রামে একটি ইটভাঁটিতে কয়লাবাহী ট্রাক উল্টে শ্রমিকদের থাকার ঘরের ওপর পড়ে ১৩ জনের মৃত্যুর খবর আসে। জুন মাসে নিহতের সংখ্যা বেশি ॥ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যান বলছে, বিদায়ী বছরের জানুয়ারি মাসে ৪৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫১৪ জন নিহত হয় ও ১ হাজার ৩৫৩ জন আহত হয়। ফেব্রুয়ারি মাসে ৪৩৯টি সড়ক দুর্ঘটনা সংঘঠিত হয়। এতে ৪৫৯ জন নিহত হয় ও ১ হাজার ৫২১ জন আহত। মার্চ মাসের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে এ মাসে ৪৯১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫০৩ জন নিহত ও ১ হাজার ৫০৬ জন আহত হয়েছে। এপ্রিল মাসে ৪৫১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭১ জন নিহত ও ১ হাজার ২২৩ জন আহত হয়। মে মাসে ৪৫৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮৪ জন নিহত ও ১ হাজার ১২৭ জন আহত হয়। জুন মাসে ৫২২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬১৫ জন নিহত ও ১৭৯০ জন আহত হয়েছে। জুলাই মাসে ৩৭৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪২৫ জন নিহত ও ১ হাজার ২২ জন আহত হয়। আগস্ট মাসে ৪৯১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫১৯ জন নিহত ও ১ হাজার ৬৩৮ জন আহত হয়। সেপ্টেম্বর মাসে ৪২৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫১৪ জন নিহত ও ১ হাজার ১৬৬ জন আহত হয়। অক্টোবর মাসে ৩৯৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৯৫ জন নিহত ও ৭৭০ জন আহত হয়। নবেম্বর মাসে ৪৩২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৩৩ জন নিহত ও ৯৭৯ আহত হয়। ডিসেম্বর মাসে ৫৩৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৪ জন নিহত ও ১ হাজার ২৭১ আহত হয়। সড়ক দুর্ঘটনার ১২ কারণসমূহ ॥ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সড়ক দুর্ঘটনা জন্য অন্তত ১২টি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। এরমধ্যে প্রধাণ কারণ হলো- বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালনা। বিপজ্জনক অভারটেকিং ও রাস্তা-ঘাটের নির্মাণ ক্রটিও দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। এছাড়াও রয়েছে, ফিটনেস বিহীন যানবাহন, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেডফোন ব্যবহার, মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা, রাস্তায় ফুটপাথ না থাকা বা ফুটপাথ বেদখলে থাকা, ওভারলোডসহ ছোট যানবাহন বৃদ্ধি। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সুপারিশ মালা ॥ সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ১২ দফা সুপারিশ তুলে ধরেছেন বিশেষজ্ঞরা। এগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ ট্রাফিক আইন, মোটরযান আইন ও সড়ক ব্যবহার বিধিবিধান সম্পর্কে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের জন্য, মসজিদ, মন্দির, গির্জায় জনসাধারণের জন্য ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা। এছাড়া টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্রসমূহে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা, জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশ থেকে হাট-বাজার অপসারণ করা, ফুটপাথ বেদখল মুক্ত করা, রোড সাইন (ট্রাফিক চিহ্ন) স্থাপন করা সহ জেব্রাক্রসিং অংকন করা, গণপরিবহন চালকদের প্রফেশনাল ট্রেনিং ও নৈতিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা, যাত্রী ও পথচারী বান্ধব সড়ক পরিবহন বিধি প্রণয়ন, গাড়ির ফিটনেস ও চালকদের লাইসেন্স প্রদানের পদ্ধতি উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তালমিলিয়ে আধুনিকায়ন করা, জাতীয় মহাসড়কে স্বল্পগতি ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেন এর ব্যবস্থা করা, অনুমোদিত সড়ক পরিবহন আইন দ্রুত বাস্তবায়ন করা, সড়ক নিরাপত্তা তহবিল গঠনপূর্বক সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা কর, লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নকালে চালকের মাদকাশক্তি ধরতে ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা করা, পর্যাপ্ত মানসম্মত গণপরিবহন নামানোর উদ্যোগ নেয়া। কিন্তু বাস্তবতা হলো গত কয়েক বছর ধরে দেশের ২২টি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন ও অযান্ত্রিক পরিবহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হলেও তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ মহাসড়কে নিষিদ্ধ যানবাহনের আধিক্য। এ চিত্র দেখার জন্য খুব বেশি দূরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে ওঠা মাত্রই তা চোখে পরবে। তাছাড়া টঙ্গী ব্রিজ পার হয়ে ঢাকা ময়নসিংহ মহাসড়কে ওঠা মাত্র সরকারের পক্ষ থেকে এ রকম কোন নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল কিনা তা কোন অবস্থাতেই মনে হবে না। এর কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্দেশনা বাস্তবায়নের অভাব। মামলা হলেও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরে না ॥ একদিকে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সরকারের পক্ষ থেকে নেয়া পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নে যেমন নজরদারির অভাব রয়েছে তেমনি কোন কোন ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন হলেও সঙ্কটের সমাধান মিলছে না। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন, ট্রাফিক আইনের কঠোর প্রয়োগ, জনসচেতনতা এবং সড়কে ট্রাফিক শৃঙ্খলা আনার লক্ষ্যে গত ১৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় ‘ট্রাফিক শৃঙ্খলা পক্ষ’। এই কার্যক্রম চলবে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। ট্রাফিক পক্ষের গত ৯ দিন রাজধানী জুড়ে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ৪৬ হাজার ৪৪টি মামলা দায়ের করেছে ট্রাফিক পুলিশ। জরিমানা করা হয়েছে ২ কোটি ২৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৫০ টাকা।
×