ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নাদাল-জোকোভিচের আরেকটি ফাইনাল

প্রকাশিত: ০৪:২২, ২৬ জানুয়ারি ২০১৯

 নাদাল-জোকোভিচের আরেকটি ফাইনাল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মঞ্চটা আগেই তৈরি করে রেখেছিলেন রাফায়েল নাদাল। গ্রীসের তরুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড় স্টেফানোস সিসিপাসকে হারিয়ে ক্যারিয়ারের ২৫তম গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্টের ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করেন তিনি। তার একদিন পর প্রত্যাশা মতোই নাদালের দেখানো পথে হেঁটেছেন নোভাক জোকোভিচ। শুক্রবার সেমিফাইনালে লুকাস পৌলির বিপক্ষে একতরফা ম্যাচ জিতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছেন সার্বিয়ান তারকা। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের শেষ চারের লড়াইয়ে নোভাক জোকোভিচ এদিন ৬-০, ৬-২ এবং ৬-২ গেমে পরাজিত করেন ফ্রান্সের লুকাস পৌলিকে। প্রতিপক্ষকে হারাতে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর খেলোয়াড় জোকোভিচের সময় লাগে ১ ঘণ্টা ২৩ মিনিট। বাঘা বাঘা খেলোয়াড়রা খেলেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে। আর সেইসব তারকাদের ভিড়ে এবার আলো ছড়িয়েছেন লুকাস পৌলি। শুরু থেকেই নজরকাড়া পারফর্মেন্স উপহার দিয়েছেন তিনি। যে কারণে জোকোভিচের ভক্তদের মধ্যে এক ধরনের ভয় কাজ করছিল সেমিফাইনালের আগে। কি না কি ঘটে এই ম্যাচে। তবে সব শঙ্কা উড়িয়ে দিলেন নোভাক জোকোভিচ। ২৪ বছরের ফ্রেঞ্চম্যানকে কোন রকম পাত্তাই দেননি বিশ্ব টেনিসের শীর্ষ তারকা। জোকোভিচের ভক্ত-অনুরাগীদের অনেকে অবশ্য এমনটাই ভেবে নিয়েছিলেন আগে থেকেই। তাদের ধারণাটাকেই বাস্তবে প্রমাণ করে দিলেন জোকোভিচ। মৌসুমের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্টের ফাইনালের টিকেট কেটে দারুণ রোমাঞ্চিত নোভাক জোকোভিচ। রড লেভার এ্যারেনায় সেমিফাইনাল জয়ের পর নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে সার্বিয়ান তারকা বলেন, ‘এই কোর্টে এখন পর্যন্ত যতগুলো ম্যাচ খেলেছি আমি তাদের মধ্যে এটা নিঃসন্দেহে সেরাদের একটি। সত্যি কথা বলতে ম্যাচের আগে আমি যেভাবে কল্পনা করেছি সবকিছু ঠিক সেভাবেই কাজে লেগেছে। লুকাসের জন্য যা সত্যিই খুব কঠিন ছিল।’ এটা স্বীকার করে নিয়েছেন লুকাস নিজেও। পরাজয়ের পর তিনি বলেছেন, ‘জোকোভিচের বিপক্ষে ম্যাচে আমার কৌশল প্রয়োগ করার মতো যথেষ্ট সময়টাও আমি পাইনি।’ তাহলে কী কৌশল এঁটেছিলেন ফ্রেঞ্চম্যান? এমন প্রশ্নও উঠে এসেছিল সাংবাদিকদের কাছ থেকে। ফরাসী তারকা বলেছেন, ‘আমার কৌশল ছিল আক্রমণাত্মক খেলা। কিন্তু এটা খুব কঠিন কাজ ছিল তার বিপক্ষে ম্যাচে।’ সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে ১৪টি গ্র্যান্ডস্লাম জিতেছেন নোভাক জোকোভিচ। তার ছয়টাই এই মেলবোর্নে। এই পরিসংখ্যানটাই বলছে, অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে কতটা ফেবারিট সার্বিয়ান তারকা। এবার সপ্তম শিরোপা জয়ের লক্ষ্য নিয়ে রবিবার ফাইনাল খেলতে কোর্টে নামবেন তিনি। ফাইনালে উঠার পথে জোকোভিচ শুরু থেকেই চমকপ্রদ পারফর্ম করেছেন। বিদায় করেছেন জো উইলফ্রেইড সোঙ্গাকেই, নিশিকোরির মতো তারকা খেলোয়াড়দের। তবে বড় পরীক্ষাটা এখনও রয়ে গেছে তার। কেননা শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে যে জোকোভিচের মুখোমুখি হতে হবে রাফায়েল নাদালের। স্প্যানিশ টেনিস তারকার বিপক্ষে জোকোভিচ সর্বশেষ মেলবোর্নে খেলেছিলেন ২০১২ সালে। সেবার এক মহাকাব্যিক ম্যাচ দেখেছিল টেনিস দুনিয়া। অবিশ্বাস্য সেই ম্যাচের স্থায়িত্ব ছিল ছয় ঘণ্টা। তবে জোকোভিচ ভক্তদের জন্য স্বস্তির খবর হলো সেই ম্যাচের শেষের হাসিটা হেসেছিলেন সার্বিয়ান তারকাই। নাদালের বিপক্ষে জোকোভিচের মুখোমুখি হওয়ার আগে আবারও সেই ঘটনাটাই ভেসে আসছে টেনিসভক্তদের চোখে। কী হবে এবার? আবারও নাদালকে হতাশ করবেন জোকোভিচ? নাকি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী জোকোভিচকে হারিয়ে সেই ম্যাচের প্রতিশোধ নিবেন রাফায়েল নাদাল? সেটা জানার জন্য অবশ্য অপেক্ষা করতে হবে রবিবার পর্যন্ত। তবে এই ম্যাচ জিতলে নতুন এক কীর্তি গড়বেন নাদাল। ওপেন যুগে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে সবকটি গ্র্যান্ডস্লাম কমপক্ষে দুইবার করে জয়ের রেকর্ড গড়বেন এই স্প্যানিয়ার্ড। যে কীর্তি নেই আরও কারও দখলে।
×